কয়েকজন পাঠিকা জানতে চেয়েছেন, আমার কবিতা ও গদ্যে কুলসুম আপা নামটি আসে ; এমন কি আমার প্রবন্ধসংগ্রহের দ্বিতীয় খন্ড যাঁদের উৎসর্গ করেছি তাঁদের মধ্যে অন্যতম কুলসুম আপা। ওনারা জানতে চেয়েছেন, 'উনি কে '?
পাটনায় শৈশবে যে পাড়াটিতে থাকতুম সেই পাড়াটির নাম ইমলিতলা । অবশ্য কোনো তেঁতুলগাছ ছিল না পাড়ায়। পাড়াটি ছিল নিম্নবর্গীয় হিন্দু এবং অত্যন্ত গরিব কয়েকটি শিয়া মুসলমান পরিবার অধ্যুষিত। এই শিয়া পরিবারগুলো ব্রিটিশ আক্রমণে লখনউ-এর পতনের পর পাটনায় পালিয়ে এসেছিলেন। যখন এসেছিলেন তখন চুনসুরকির গাঁথুনি দিয়ে যে বাড়িগুলো তৈরি করিয়েছিলেন তা আমার শৈশবে খন্ডহরে পালটে গিয়েছিল। পাড়ার শিয়া মসজিদটিরও একই দশা ছিল। মসজিদের ইমাম সায়েব আমাদের ভালোবাসতেন। এখনকার হিন্দু ছেলেরা মসজিদের ভেতরটা কেমন হয় জানেন না । আমাদের শৈশবে কিন্তু লুকোচুরি খেলার সময়ে মসজিদে প্রবেশের অবাধ অধিকার ছিল; নামাজের সময়গুলো ছাড়া।
কুলসুম আপা ছিলেন মেজদার বন্ধু নাজিমের দিদি। ওনাদের অবস্হা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির নারী-পুরুষ সবাই বিড়ি বানাতেন। এবং তাছাড়া সংসারের খরচ তোলার জন্য ওনারা হাঁস মুর্গি ছাগল পুষতেন। আমাদের বাড়িতে হাঁসের ডিম আসত ওনাদের বাড়ি থেকে। সেই সূত্রে ওনাদের বাড়িতে আমাদের আর আমাদের বাড়িতে কুলসুম আপা-নাজিমদের যাতায়াত।
কুলসুম আপা শায়রি করতে ভালোবাসতেন। আর আমি ছিলুম ওনার শায়রির প্রধান শ্রোতা। উনি ছিলেন কালো কিন্তু চোখদুটো বেশ ডাগর ; শরীরও কৈশোরেই ভরাট। ওনার প্রতি আকর্ষিত হয়ে চলে যেতুম প্রায়ই; ডিমের প্রয়োজন না থাকলেও ।
ক্রমশ কুলসুম আপা আমাকে নারীদেহের রহস্যগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকেন। তাঁর নিজের ছিল কৈশোরের শারীরিক প্রয়োজন আর আমার ছিল বয়ঃসন্ধির উদগ্র আগ্রহ । উনি শায়রি করার ছলেও উন্মোচিত করতেন ওনার রহস্য। কুলসুম আপা আমার প্রথম প্রেমিকা এবং শিক্ষিকা।
ওই পাড়া ছেড়ে আমরা চলে যাই পাটনার দরিয়াপুরে । সেটি একটি সুন্নি মুসলমান পাড়া । দরিয়াপুরের মুসলমানরা ছিলেন বেশ গোঁড়া । একজন চুড়ি ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কোনো পরিবারের সঙ্গে দরিয়াপুরে আমাদের যাতায়াত ছিল না।
২০০৫ সালে পাটনায় গিয়ে ইমলিতলা আর দরিয়াপুরে গিয়েছিলুম। পুরানো পরিচিতরা কেউ নেই। ইমলিতলার মসজিদ সারানো হয়েছে ; ধবধবে। কুলসুম আপাদের বাড়িটা কিনে নিয়েছে অন্য কোনো মুসলমান পরিবার । সেই বাড়ি থেকে দেখলুম যে মহিলারা বেরোলেন তাঁরা বোরখায় ঢাকা। দরিয়াপুর হয়ে গেছে আরও বেশি গোঁড়া । বিনা দাড়ির কোনো পুরুষ দেখতে পেলুম না।
আমার স্মৃতিতে রয়ে গেছেন কুলসুম আপা।
পাটনায় শৈশবে যে পাড়াটিতে থাকতুম সেই পাড়াটির নাম ইমলিতলা । অবশ্য কোনো তেঁতুলগাছ ছিল না পাড়ায়। পাড়াটি ছিল নিম্নবর্গীয় হিন্দু এবং অত্যন্ত গরিব কয়েকটি শিয়া মুসলমান পরিবার অধ্যুষিত। এই শিয়া পরিবারগুলো ব্রিটিশ আক্রমণে লখনউ-এর পতনের পর পাটনায় পালিয়ে এসেছিলেন। যখন এসেছিলেন তখন চুনসুরকির গাঁথুনি দিয়ে যে বাড়িগুলো তৈরি করিয়েছিলেন তা আমার শৈশবে খন্ডহরে পালটে গিয়েছিল। পাড়ার শিয়া মসজিদটিরও একই দশা ছিল। মসজিদের ইমাম সায়েব আমাদের ভালোবাসতেন। এখনকার হিন্দু ছেলেরা মসজিদের ভেতরটা কেমন হয় জানেন না । আমাদের শৈশবে কিন্তু লুকোচুরি খেলার সময়ে মসজিদে প্রবেশের অবাধ অধিকার ছিল; নামাজের সময়গুলো ছাড়া।
কুলসুম আপা ছিলেন মেজদার বন্ধু নাজিমের দিদি। ওনাদের অবস্হা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির নারী-পুরুষ সবাই বিড়ি বানাতেন। এবং তাছাড়া সংসারের খরচ তোলার জন্য ওনারা হাঁস মুর্গি ছাগল পুষতেন। আমাদের বাড়িতে হাঁসের ডিম আসত ওনাদের বাড়ি থেকে। সেই সূত্রে ওনাদের বাড়িতে আমাদের আর আমাদের বাড়িতে কুলসুম আপা-নাজিমদের যাতায়াত।
কুলসুম আপা শায়রি করতে ভালোবাসতেন। আর আমি ছিলুম ওনার শায়রির প্রধান শ্রোতা। উনি ছিলেন কালো কিন্তু চোখদুটো বেশ ডাগর ; শরীরও কৈশোরেই ভরাট। ওনার প্রতি আকর্ষিত হয়ে চলে যেতুম প্রায়ই; ডিমের প্রয়োজন না থাকলেও ।
ক্রমশ কুলসুম আপা আমাকে নারীদেহের রহস্যগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকেন। তাঁর নিজের ছিল কৈশোরের শারীরিক প্রয়োজন আর আমার ছিল বয়ঃসন্ধির উদগ্র আগ্রহ । উনি শায়রি করার ছলেও উন্মোচিত করতেন ওনার রহস্য। কুলসুম আপা আমার প্রথম প্রেমিকা এবং শিক্ষিকা।
ওই পাড়া ছেড়ে আমরা চলে যাই পাটনার দরিয়াপুরে । সেটি একটি সুন্নি মুসলমান পাড়া । দরিয়াপুরের মুসলমানরা ছিলেন বেশ গোঁড়া । একজন চুড়ি ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কোনো পরিবারের সঙ্গে দরিয়াপুরে আমাদের যাতায়াত ছিল না।
২০০৫ সালে পাটনায় গিয়ে ইমলিতলা আর দরিয়াপুরে গিয়েছিলুম। পুরানো পরিচিতরা কেউ নেই। ইমলিতলার মসজিদ সারানো হয়েছে ; ধবধবে। কুলসুম আপাদের বাড়িটা কিনে নিয়েছে অন্য কোনো মুসলমান পরিবার । সেই বাড়ি থেকে দেখলুম যে মহিলারা বেরোলেন তাঁরা বোরখায় ঢাকা। দরিয়াপুর হয়ে গেছে আরও বেশি গোঁড়া । বিনা দাড়ির কোনো পুরুষ দেখতে পেলুম না।
আমার স্মৃতিতে রয়ে গেছেন কুলসুম আপা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন