শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

মলয় রায়চৌধুরীর একাশিতম জন্মদিনে স্নেহা গুহ

 #হোমাজ_টু_স্টার্ক_ইলেক্ট্রিক_জিশাশ
(২৯শে অক্টোবর ১৯৩৯-)

"আমি আজও আমার প্রথম বইটা লেখার চেষ্টায় বাংলা ভাষাকে আক্রমণ করে চলেছি । ইমলিতলায় ছিলুম বামুনবাড়ির মহাদলিত কিশোর।দেখি খুল্লমখুল্লা লেখার চেষ্টা করে কতোটা কি তুলে আনতে পারি। উপন্যাস লিখতে বসে ঘটনা খুঁড়ে তোলার ব্যাগড়া হয় না জীবনেকচ্ছা লিখতে বসে কেচ্ছা-সদিচ্ছা-অনিচ্ছা মিশ ধরে খেয়ে যেতে পারে তার কারণ আমি তো আর বুদ্ধিজীবি নই জানি যে মানুষ ঈশ্বর গণতন্ত্র আর বিজ্ঞান হেরে ভুত।"

এরকম অত্যাচারীত কথাবার্তা বলার হিম্মত দেখানো ছুতারের আজ ৮১তে পা,তাঁকে নিয়ে অসম্ভব রকমের রিসার্চ,অণুপ্রেরণা,হ্যানো-ত্যানো প্রচুর হয়েছে,হবেউ …আফটারঅল ৬০এর আগুনে দশকে বাংলা কবিতার খোলনলচে জুতোর বাস্কে ভরে পার্সেল করতে পেরেছিলেন যে তিনিই…হাংরি আন্দোলনের উদগাতা…কনট্রোভার্সিয়াল,লার্জার দ্যান লাইফ ক্যারেক্টার হয়ে স্বমহিমায় বিরাজ করছেন তিনি এখনো…অনবরত প্রতিআক্রমণ হয়েছে,তিনি সরে এসেছেন বারবার তার লেখার স্টাইল পাল্টে--দুর্দান্ত ক্রাফ্টসম্যান তিনি…

সম্ভবত আমি বাংলায় আভাঁ গার্দ নিয়ে পরিচিত হয়েছি প্রথম তাঁর লেখা পড়েই,একটি পত্রিকার লেখাটা(উৎসর্গীকৃত জর্জ গর্ডন বাইরন,ষষ্ঠ ব্যারন বায়রন)

"কে বলতো তুমি? দেখি আবার ডাক দেও! আমরা তার কাছে নাগিয়া খালি হাসিতাম। মজার বিষয় হইল আম্মুর ফোনে প্রথম দিকটায় কনফিউজ যাইতো,কার সাথে কথা বলতেছে সে।আরো অনেক ফোনালাপে আমরা দুজনেই অংশগ্রহণ করছি কিন্তু অপর‌ প্রান্তের লোকগুলা বুঝতোনা।"

এইধরনের বিষয়হীনতা লেখার মধ্যে ভাসতে ভাসতে জাম্পকাট করে সোশ্যাল ডিলেমা বিশেষায়িত একটা পরম্পরা তার নতুন লেখাগুলোয়…
(কিছু পরে ওই সেম লেখাতে পাওয়া যাচ্ছে)

"সেও শরীরে যতদিন তার রস ফেলে আমাকে নিংড়েছে, ততদিন আমাকে তার নিচে চেপে নিষ্পেষণ করেছে, তারপর নতুন কচি ফুল পেতে চলে গেছে…তাতে কিন্তু কারুর একটাও কোঁকড়ানো বাল ছেঁড়া যায় নি। আর আমার একটা বড় মাই (আপনাদের ভাষায়) দেখে আপনাদের প্যান্ট ফেটে যাচ্ছে। আজ আমার সাজানো সাজঘরে কালো আঁধারবিদাগ।"

কি বিলকুল সুন্দর জিহ্বায় উচ্চারিত পরপর দৃশ্যগুলো,ইনসাইড,আউটসাইড ডজ করে ওভারল্যাপিং…হ্যাঁ হাংরি শুরুর দিকে লেখায় এবং তারোপর এসোব লেখা তাঁর ছিল না,তাই আমাকে ভাবায় আরো কিভাবে তিনি নিজের চরিত্রের অণ্বেষণ করে গ্যাছেন,কোনোরকম ডিপ্লোম্যাসির ধার না ধারা অবয়ব ফুটফুটে ইস্ট্রোজেন।আমি এই লেখাটা কমপ্লিটলি অ্যাবসেন্স অব মাইন্ডে টুকছি,বন্ধুর দেওয়া কয়েকটা কবিতার দুর্বিসহ ইলাস্ট্রেশন যন্ত্রণার খোশগল্পে সীমাহীন মলয়ালম,আহা কি খাসা,ঠাঁসা ঠাঁসা…

তাঁর কবিতা একেবারেই নয় যা তিনি তার আমেজের ৮০ভাগ হয়তো তার উপন্যাসেই আছে,সরজমিনে তদন্তের খাশনবিশি,তবুও মলয় রায়চৌধুরী বাংলা কবিতার প্যারাসিটামল,আর তাঁর গদ্য-প্রবন্ধ অনবরত ইস্তেহার,এসোব আমার একটা বিকট থিসিস লেখার আগে ওনার সাথে চাকনার কাজ করুক,সিঙ্গেল মল্ট ইজ দ্য ক্লোজেস্ট থিঙ্গ টু হিজ হার্ট,খাবেন তাহলে,লাভ ইউ মলয় রায়চৌধুরী।

"জুরাসিক যুগের শেষ দিকে এক শ্বাসরুদ্ধকর এক্সপায়ারি ডেট
যতটা অবিশ্রান্ত হ্যাংলামি আদুরে প্রথমোক্ত ঘরাণার ঘরের
বউরা দুপুরে আমার ভেতর, যেন চিরবিরহী ম্যাড়ম্যাড়ে
ওই তেলে দ্রবীভূত সোনা দিয়া বান্ধানো পদযুগলে বাঃ ,
অনবদ্য ইত্যাদি ইত্যাদি এতটাই বেপরোয়া পুদুচেরির খুদে
মুরগি হুহুহু হিহিহি হাহাহা হোহোহো, তিনটি মাত্রাই রুদ্ধ র‍্যাম্পাট
কেলিয়েছে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পিরথিবি ছাইড়া চইলা যামু উউউউম্মাহহহ"

বাংলা কবিতার ভাববাদী চেতনার ডাইরেক্টনেস থেকে এক্কেবারে ঘুরপথে অ্যান্টি-এস্টাবলিষ্ড কঠিণ বিমূর্ততার হ্যান্ডবিল প্রকৃতভাবে উজ্জল,অমলিন আকাঙ্ক্ষা হয়ে বেজে যাচ্ছেন হরবখত…

[ধন্যবাদ আমার চেনা-পরিচিতদের যারা আমায় পরিচিত করিয়েছেন হাংরি মলয়ের দৌড়ের রাশ চিনতে এবং এই লেখা একটা হোমাজ টু মাই প্রিডেসিসর,লাজোয়াব চুড়মুড়।]
_________________________________________________
ইলাস্ট্রেশন:সুমন মুখার্জি

ছবিতে থাকতে পারে: 1 জন, অঙ্কন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন