বারীন ঘোষালের মৃত্যু
মলয় রায়চৌধুরী
দুর্যোধন দুঃশাসন দুর্মুখ দুমুখোরা পালিয়েছে নিজের ধান্দায়
একাকীত্ব কাটাবার জন্য কবিতাপাঠের আসরেতে বসে
মদের বোতলের আনমনা ভাব নিয়ে দু-ঠ্যাঙ ছড়িয়ে
কন্ঠস্বরে কতোগুলো রঙ, সেসব রঙের প্রতিধ্বনি
সময়ের ঘড়ি হয়নাকো, কাঁটা হয়নাকো, বকেদের উড়ালেতে দ্যাখো
বিকেল ভরপুর, বাক্যেরা কখনও নিজের কন্ঠে কাঁদতো
কখনও অন্যের, হারেমের মুরগিদের গর্ব, সেলুনে গোঁফের ছবি
স্ট্যালিনের হিটলারের রাজকাপুরের, মৌমাছির চাকের মতন
লেটারবক্স দাঁড়িয়ে রয়েছে পাড়ায়, অথচ প্রতিটি চিঠি
হয়ে গেছে ভারচুয়াল, শিক্ষিত পোকাদের ঝিঁঝিট-মিছিল
বোবার দুঃখ যা ভিড়ের ঘাম থেকে চুয়ে
সবায়ের রক্ত কিন্তু একই রকমের চটচটে নয়
অন্যান্য কবিদের কল্পনার মহামারীতে নষ্ট করে
অন্ধকার দিয়ে কুচিয়ে ছড়ানো শীতকাল
জানালারা বৃষ্টিতে কেঁদে নিচ্ছিল, অনেকের মাতৃভাষা শুধু টাকা
চর্বির রঙচঙে বালাপোষে মোড়া
ফিল্মস্টার বা উলঙ্গ পাগল ছাড়া ক'জনই বা ট্র্যাফিক থামাতে পারে
তরুণীটি জন্ম থেকে অন্ধ, কাজল পরে আছে কিন্তু দেখতে পায় না
ছোটোগুলো অবহেলা ভোগ করে ওৎ পেতে থাকে
বইপাড়ায় মুখে-মুখে পেতল-পেরেক দিয়ে গেঁথা হাসি
অভিনন্দনে ঈর্ষার দ্যুতি কেন থাকে বুঝে গিয়েছিলে
ব্যাপারটা কতো আশ্চর্যের, ঠোঁটের ওপরে জিভ দুবার বুলিয়ে
মুখের ভেতরে কথা গড়ে নিতে সকলেই পারে
মঞ্চে দুতিনবার কেশে দুঃখ আবৃত্তি করে চলে যায় তারা
যতোরকমের বাস্তবতা হতে পারে সবগুলো ভেঙে-ভেঙে
পরখ করতে তুমি কেননা সব শব্দ বাক্য অন্যলোকেরা
ব্যবহার করে-করে করে-করে করে-করে, মুখের ও হাতের ময়লা
মাখিয়ে দিয়েছে, জানতে যে রামকৃষ্ণকে ছোটো করে চুল
ছাঁটতেই হতো, চৈতন্যকে মাথা আর দাড়ি প্রায়ই কামাতে হতো
অথচ তোমার শবযাত্রায় তুমিই ছিলে না |
সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৮
বারীন ঘোষালের মৃত্যু
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন