বার্ট মেয়ার্স-এর কবিতা (১৯২৮ - ১৯৭৯)
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী
আমার শত্রুদের
আমি এখনও রয়েছি এখানে, এক চামড়ার ভেতরে
ভুতুড়ে রেইনকোটের চেয়েও রোগা ;
সেই পাখিদের মতন অদ্ভুত যারা বেহায়াপনায়
একগুঁয়ে পাম্পগুলো ঠোকরায়
যা থেকে কিছুই মেলে না…
তোমার কারবারে পাগল হয়ে
যার জন্য টাকা-নেবার মেশিন
তাদের যাজকীয় ঘণ্টাসহ
এক রাষ্ট্রিয় গির্জা হয়ে দাঁড়ায়;
তুমিও, যার তাৎক্ষণিক হাসি
আমার পায়ের কাছের মাটিতে ফাটল ধরায়…
তোমার বউ যাক স্বর্গোদ্যানে
জঞ্জালফেলার লোকটার সঙ্গে,
তোমার লিঙ্গ ঝুলুক জুতোর ফিতের মতন,
তোমার বিচিদুটো হয়ে যাক শুকনো আঙুর
চোখে শাদায় গজাক চুল
আর তোমার চোখের পাতা পালটে যাক
ঘাস ছাঁটার মেশিনে
যা নয়টা থেকে পাঁচটা কাটতে থাকে…
মানুষ হলো চামড়ার অসুখ
যা পৃথিবীকে ঢেকে রেখেছে ।
নক্ষত্রগুলো অ্যান্টিবডি
এসে পড়লো, তোমার রাষ্ট্রপতি
হলো আফ্রিকার রক্তচোষা মাছি...
রসুন
মশলার ইহুদি যাজক
যাঁর শ্বাস এক ক্রিয়াপদ,
দাড়ি তাঁর বেশ পাতলা
আর একটা শাদা আলখাল্লা :
আপনি, যিনি রোগা আর ক্ষুদে
আর চেহারা মুঠোর মতো,
এক ইহুদি ধর্মস্হান,
আমাদের তিক্ততাকে আশীর্বাদ করেন,
রান্নাঘরকে শ্রেষ্ঠ করে তুলে
মৃত্যুকে মিষ্টতা দেবার জন্য--
শিখায় আমাদের মোম
আর রুটিতে আমাদের বীজ
আমার দাদু বসে থাকেন
আমার কাকারা পুরে দ্যান
আমার মুখে ছাই ।
আস্তে, আস্তে
আমরাও, আরম্ভ করেছিলুম আনন্দে ।
তারপর, রোগ এলো ;
তারপর, দারিদ্র্য ।
আমরা গরিব ছিলুম, বেশ গরিব,
আমাদের বাচ্চারাই কেবল আমাদের বন্ধু ছিল ।
আস্তে, আস্তে,
ক্রোধ আর যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে,
ভালোবাসা নিজেকে ন্যায্য করে তুললো,
বাড়ির পেরেকগুলোর মতন
ঝড়ের সময়ে ।
নানা উপায়ে, আমরা আশার জন্ম দিলুম,
নির্ভরযোগ্য ঢোল
ছায়ার কবজিতে
এক জলতরঙ্গ
স্বপ্নের পথের দুধারে ।
রাতের বেলায়, আমিই ছিলুম
যে হয়ে গেলো চেলো
আমাদের যাবতীয় পথের তারে বাঁধা
যেখানে স্মৃতি গুনগুন করে
নিজের কাছেই একটা চাকার মতন ।
আর তুমি, সানাইয়ের মতন পাগল
যেখানে পথগুলো দুভাগ হয় :
ঝোপঝাড়ে বৃষ্টিফোঁটার মতন এক শহর ;
আস্তে আস্তে যে মধুর ফোঁটা পড়ে
আকাশের পুরোনো হাতা থেকে…
যে কারণে আমি মৃত্যুকে ভয় পাই ।
আমার ডানার দিব্বি
ভালোবাসা আমার কোমরে ছড়িয়ে পড়ে,
আমি তোমার সুর বয়ে বেড়াবো
আমার ক্লান্ত তারগুলো যতক্ষণ না ছিঁড়ে যাচ্ছে ।
পেনসিল ছুঁচোলো করার কাটার
এর হাত নেই কিংবা পা, এই ছোটো নগ্নিকা ; তবু আঁকড়ে ধরো
ওর কোমর, তারপর পাছাকে উত্তেজিত করো : একটা শুকনো পাতা বহুগুণ হয়,
জঙ্গলে একটা শীতল চক্রযান চলা আরম্ভ করে ।
জ্যান্ত করে তোলো, তখনও কাঁপছে, পেনসিলটা নিজেকে মেলে ধরে
আর এক প্রজাপতি পাবে, দাঁত, একটা রাজমুকুটের টুকরো-টাকরা ।
সূর্যমুখী ফুল
কেউই সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে কথা কয়নি,
ওইসব প্রাচীনকালের মাইক্রোফোন
ফাঁকা জায়গায় ।
তাহলে, ওরা মাথা ঝুঁকিয়ে থাকে
আর, আস্তে আস্তে, খসে পড়ে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন