বিট আন্দোলনের কবি মহিলারা
অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী
মার্গারেট রেনডাল-এর কবিতা ( ১৯৩৬ )
পরবর্তী সূর্যের সন্ধানে
তেওতিহুয়াকানে আমি অসহায় দেখি তুমি পিছলে চলে যাচ্ছ,
চুষে ফেলা, নিয়ে নেয়া
এই সময় থেকে অন্য সময়ে ।
তুমি আমার পাশে হাঁটো,
ছেলেমেয়ে আর নাতি-নাতনিরা ভুলে গিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে
সূর্য আর চাঁদের পিরামিডের মাঝে
মৃতের চওড়া রাস্তা বরাবর,
কিন্তু আমি জানি যে তোমার খোলোস কেবল আমার সঙ্গে থাকে
খড়ির মতন ফ্যাকাশে আর বোবা ।
পরে তুমি বর্ণনার চেষ্টা করো কোথা থেকে পালিয়ে এসেছ
কতো কষ্ট করে : ঝুরঝুরে আর শীতল
দুই সহস্র বছর যা গেছে আর আছে তার মাঝে ।
কেমন করে তুমি সাক্ষীর কাছ থেকে নিজেকে ছিঁড়ে নিলে
তোমার হলোগ্রাম চোখদুটো,
একের পর এক বুকের ভেতরে ঢুকে-যাওয়া
আগ্নেয়শিলার ছুরি, রক্তে জবজবে হৃদয়গুলো
অন্ধকার থেকে আকাশে তোলা
পরবর্তী সূর্যের সন্ধানে ।
দেবতাদের জন্মস্হান, তার মহাগৌরবের মুহূর্তে
পিরামিডের স্পন্দিত শহর
আর প্রজাপতি প্রাসাদসারি,
২০০০০০ ওটোমি, জাপোটেক, মিক্সটেক,
মায়া, নাহুয়া আর টোটোনাকদের বাড়ি,
কারিগরদের, কুমোরদের,
কোয়েৎজালকোটলের উপাসকরা :
পালকদেহ সাপ যা ওদের দিয়েছিল
সাধারণ জীবনের ঝর্ণা ।
কোনও বীভৎস ব্যাপার এখানে ঘটেছিল,
এটুকুই কেবল তুমি বলতে পারো
যখন তুমি শেষ পর্যন্ত আমার কাছে ফিরে এলে,
কোনও ঘটনা যা বলা যায় না,
আর তুমি তা বললে না
যতদিন না আমাদের কবিবন্ধু মেয়েটি
তার নিজের মৃত্যুর মুখে-পড়া অভিজ্ঞতার কথা বলল
পিরামিডের সর্বোচ্চ শিখরে আটক
নামতে অসমর্থ ।
চাকোতেও তুমি সেই সন্ত্রাস অনুভব করো,
বিশেষ করে পুয়েবলো বোনিতোতে : বিশাল বাড়ি
মাটির তলায় ৬০০টা ঘর রেড ইনডিয়ানদের
গোলাকার অসম্পূর্ণ দেয়াল, ছোটো দরোজা আর উঁচু জানালা
ফ্রেমের মতন উড়ন্ত মেঘদলের সৌন্দর্য ধরে রাখতো
৮০০ বছর আগে যা ঘটেছিল তাকে আড়াল করে রাখা
সেসময়ে যখন এটাই ছিল কেন্দ্র,
পথের মোড় গাণিতিক বাতাসে সর্পিল চলে গেছে ।
আর কেঅন দ্য চেলিতে, নাভাহো ৎসেগিদের সঙ্গে
স্পেনিয়দের ঘোটালা -- “গুহার ভেতরে”
১৮০৫ সালে যেখানে দুটো স্রোতোধারা মেশে
সাক্ষী হিসাবে রয়ে গেছে এক বিধ্বস্ত গুহা ।
আক্রমণকারীরা নারী, শিশু, বৃদ্ধদের গণহত্যা করল,
আর দুই শতক পরে
তাদের ভয় তোমার দেহে বাস করে,
তুমি নিজের ভেতরে নিজেকে গুটিয়ে নাও,
সেদিন মরুভূমির বাতাসকে চিরে ফেলেছিল আর্তচিৎকার।
এক হাজার বছরে যদি আমরা এখনও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি
পরবর্তী সূর্যের জন্য
আমি অবাক হবো যদি কোনো পর্যটক আউশউইৎস,
রামাল্লা, বাগদাদ, কাবুল, সোয়েটো,
মোরাজান, অ্যাকটেল কিংবা পোর্ট-অউ-প্রিন্স প্রমুখ জায়গায়
সেখানে যা ঘটেছে সে সম্পর্কে জানতে পারেন
তাহলে হয়তো অনুভব করবেন তাঁকে একটা দিকে
টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে
তাদের আর আমাদের সময়ের মাঝে, ভয় হয় তাঁরা
এখনও একে আরেকের সঙ্গে যা করি তা থেকে পালাতে পারবেন না ।
মাইনের ভেতরের ক্যানারি পাখি
ড্রেসডেন আর টোকিও, হিরোশিমা, বাগদাদ,
কাবুল, পাইনট্রি রেজ কিংবা সাউথ ব্রংকস,
ক্যানারিদের মনে করা হয় কোল্যাটারাল ড্যামেজ
সেই লোকগুলোর কাছে যারা গুলি চালাবার, বোমা ফেলার হুকুম দেয় ।
ও এক যুদ্ধ থেকে ফিরে আসে যা ওরা বলেছিল আমাদের স্বাধীন রাখবে।
এখন বাসা হয়ে গেছে টুকরো সাজাবার ধাঁধা যেখানে অনেক টুকরো নেই।
কেউ আর পুরোনো অবস্হায় ফিরিয়ে আনতে পারবে না, কেউই নয়
নৈঃশব্দ্য এখন চলমান স্বপ্ন ।
দুই ঘণ্টা পর আর প্রতিটি গোপনতার একটি মিথ্যা বরাদ্দ,
মেয়েটি ভেবেছিল ভেটেরান অ্যাসিসট্যান্স সাহায্য করবে
কিন্তু মহিলা সেনাদের জন্য তেমন সাহায্যের ব্যবস্হা নেই
আর যেখানেই আরোগ্যের প্রতারণা ঘাপটি মেরে আছে সেখানে ধর্ষণ লুকিয়ে।
দেহরক্ষার সাম্প্রতিকতম বর্ম বেশি বিকলাঙ্গের উৎস।
যদি কোথাও কিছু অবশিষ্ট থাকে
তা কৃতজ্ঞ রাষ্ট্রকে ফেরত পাঠিয়ে দাও
পতাকায় মোড়া বাক্সের গরিমায় ।
যারা বাড়ি ফেরে না তাদের জন্য : দীর্ঘ নিরবতা,
মেয়েটি কখনও পরিচিত হয়নি এমন প্রিয় মুখগুলো,
কন্ঠস্বরগুলো মেয়েটিকে বলে
ও হলো মাইনের ভেতরের ক্যানারি পাখি
ডেভিড আর গলিয়াথ
পাহাড়ের ওপর থেকে সময় গড়িয়ে যায়,
অ্যালাব্যাস্টারের পাতলা চাদর
মরুভূমির পালিশের মতন পোক্ত ।
ভয় জেগে ওঠে
বুকের হাড় আর হৃদয়ের মাঝে
তার ধাক্কা খাবার অধিকার জানায়
যৎসামান্য রেশসহ
ভিয়েৎনামের জাতীয় সঙ্গীতের ।
সময় আর সঙ্গীতের পংক্তি
আমার সংস্কৃতি থেকে এতো বিচ্ছিন্ন
মনে হয় পর্যটক পাখিদের
মিল নেই এমন এক জুটি
আর আমি স্মৃতির টুকরো ওছলাই
লাইনাস কম্বলের ওপরে
---লূতাতন্তু-আলো এখনও জড়িয়ে
প্রতিটি অমীমাংসিত পুরস্কারে ।
ভিয়েৎনাম : ডেভিড আর গলিয়াথ
আমার প্রজন্মের ।
প্রতিটি ন্যায়নিষ্ঠ সংঘর্ষ
লোভ ও দোষের দেবতাদের বিরুদ্ধে,
প্রতিটি নারী ব্যবহৃত ও অপব্যবহৃত
কেবল তারা নারী বলে,
প্রতিটি ক্ষুধার্ত শিশু
বাড়ি সম্পর্কে আতঙ্কিত ।
ধূর্ততা ছদ্মবেশ পরে থাকে শুশ্রুষার,
মানচিত্রে ঘুরে বেড়ায় পথগুলো
যতক্ষণ না তারা টলতে-টলতে কিনারায় গিয়ে পড়ে যায়
খেলার বিশাল টেবিল থেকে ।
বরফের অদৃশ্য ফালি
ত্বকের তলায় গর্ত করে
যা কেবল আদর খেতে চায়
প্রতিটি ক্লান্ত গহ্বরে ।
মানাগুয়া থেকে লেখা চিঠি
একমাত্র যা তুমি চাও তা হল আমাদের হত্যা, যারা টিকে গেছে
তোমাদের অজস্র পোশাক-মহড়ায়
এখনও ব্যাপারটা তেমন গুরুতর নয়, আমাদের অনেকেই তোমাদের
আশা ব্যক্তিগত স্তরে পূরণ করে না : তাগড়া বা নীল-চোখ বা সম্ভাবনাময়
কেউই করে না তোমাদের বর্তমান আই কিউ অনুযায়ী
কিংবা ররশাখ যা তোমাদের জীবনের বোধ সম্পর্কে সংজ্ঞা তৈরি করেন ।
তোমাদের সঙ্গে মতের মিল না হলে ক্ষমা করো
তোমাদের আণবিক বোমার সংজ্ঞা প্রয়োগ করে
যুগ্মবৈপরীত্যের রাসায়নিক সমাধান
কিংবা সালভাদোরের সমাধান যথেষ্ট ব্যথা-নির্মূলক হিসাবে।
আমরা অত্যন্ত অনুন্নত আমাদের ব্যথা নিজেদের প্রাগতৈহাসিক
উপায়ে সামলাবার জন্য ।
আমাদের সমাজ নিয়ে তোমাদের প্রশ্নের যদি সম্পূর্ণ উত্তর দিতে না পারি
তাহলেও আমাদের ক্ষমা কোরো, যদি একে মার্কিস্ট-লেনিনিস্ট
কিংবা সামাজিক-গণতান্ত্রিক, বহুমাত্রিকতাকে মান্যতা দেওয়া
কিংবা যথেষ্ট খোলা বাজার ।
যদি আমরা আমাদের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতার প্রক্রিয়া অনুসন্ধানের
অপক্বতায় জোর দিই
আমাদের স্বদেশকে তীব্রভাবে ভালোবাসি
৫০০০০ বোন আর ভাইরা আমাদের কন্ঠে শিকড় বিছিয়ে রাখে ।
আমাকে ক্ষমা করবেন, দয়া করে, আমরা সব সময়ে ভুলে যাই
আমাদের সত্যকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের অনুমতি নেবার প্রয়োজন ছিল
আর যেমন ভালো বুঝি তেমন করে আমাদের হাসি বিতরণ করা দরকার ছিল।
নিজেদের মাথা ঘামাবেন না এটুকু বোঝার জন্য যে
আমাদের সৈন্যদের লড়াই করতে শেখার সঙ্গে কবিতাপাঠও শিখতে হয়
আত্মসন্মানবোধ আর কেমন করে রক্তের বদলে কালি দিয়ে তাদের নাম লিখবে,
যখন আমাদের দাদুদিদারা এই জমি খুঁচিয়ে তাঁদের জীবন কাটাতেন
তোমরা তোমাদের সৈন্য পাঠালে । পরে তোমরা আমাদের দিলে
“আমাদেই একজন” : কিনলে আর দাম মেটালে
তোমাদের মার্কিন জীবনযাত্রা দিয়ে ।
তার ছিল এক ভাই আর এক ছেলে, এক নাতি
আর অজস্র পকেট ।
আমরা একাধিকবার বিদায় সম্ভাষণ জানিয়েছি
কিন্তু তোমরা বিপুল সংখ্যায় আমাদের ভাইদের শিক্ষা দিলে
তাদের কিনে ফেললে আর ছাঁচে গড়লে
( আমাদের ছাঁচে রাখার জন্য )
আর যে ছাঁচে তারা আমাদের রাখল তা বেশির ভাগই পাইন-বাক্সে
আর অনুভূমিক । এখানে যুবক হওয়া
অপরাধ ছিল, আর তোমরা রোজ মনে করিয়ে দিতে
সেই অপরাধের কথা
কতোজনের দ্বারা, আর কতো দিন অন্তর করা হয় ।
কিন্তু আমরা ভেলে যেতুম, আমরা লড়তুম আর তোমাদের চিরন্তন বন্ধুর
প্রতিরক্ষামূলক পাহারার নিচে থেকে বেরিয়ে আসতুম।
আমরা লড়তুম আর জিততুম, আমরা কবর দিতুম
আমাদের বোনেদের আর ভাইদের ( কেউ কেউ ছিল ফর্সা
বা তোমাদের ব্যক্তিত্বের সংজ্ঞার সঙ্গে খাপ খেতো )
আর আমাদের দীর্ঘ ব্যথা আরম্ভ হতো, নিঃশব্দ আনন্দ, অসম্ভবকে
আমাদের ইতিহাসের চোখ আর হাত দিয়ে সম্ভব করে তোলা ।
আমরা জানি আমরা তোমাদের ১৯৮২-এর মাপকাঠির সঙ্গে
খাপ খাই না যা তোমরা নির্ভরশীল দেশগুলোর জন্যে তৈরি করেছ ।
তোমরা চাও কেবল আমাদের খুন করতে । আমরা কেবল চাই বেঁচে থাকতে ।
---মানাগুয়া, ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২
লেনোর কানডেল-এর কবিতা ( ১৯৩২ - ২০০৯ )
ঈশ্বরের/প্রেমের কবিতা
ভালোবাসার অন্য কোনো পথ নেই/কিন্তু/সুন্দর/
আমি তোমার সবকিছু ভালোবাসি
আমি তোমাকে ভালোবাসি/তোমার শিশ্ন আমার হাতে
পাখির মতন চঞ্চল হয়ে ওঠে
আমার আঙুলগুলোয়
যেমন যেমন তুমি ফুলে বেড়ে ওঠো আর কঠিন হও আমার হাতে
বাধ্য করো আমার আঙুলগুলোকে খুলতে
তোমার শক্ত শক্তি
তুমি সুন্দর/তুমি সুন্দর
তুমি এক শতবার সুন্দর
আমি আমার প্রেমের হাত দিয়ে তোমাকে আলোড়িত করি
গোলাপি-নখ দীর্ঘ আঙুল
আমি তোমাকে সোহাগ করি
আমি তোমাকে আদর করি
আমার আঙুলের ডগা...আমার হাতের তালু…
তোমার লিঙ্গ উঠে দাঁড়ায় আর আমার হাতে স্পন্দিত হয়
এক চমকপ্রদ জ্ঞান/যেমন আফ্রোদিতি জানতেন
একটা সময়ে দরবতারা পবিত্র ছিলেন
/আমি মনে করতে পারি লতাকুঞ্জের মধ্যে রাতগুলো
আমাদের রস মধুর চেয়েও মিষ্টি
/আমরা একইসঙ্গে ছিলুম মন্দির আর দেবতা/
আমি তোমার সঙ্গে নগ্ন
আর আমি আমার মুখ তোমাতে দিচ্ছি শ্লথতায়
আমি অপেক্ষা করছি তোমাকে চুমু খাবার জন্য
আর আমার জিভ তোমাকে পুজো করছে
তুমি সুন্দর
তোমার দেহ আমার কাছে এগিয়ে আসে
মাংসের সঙ্গে মাংস
ত্বক পিছলে যায় সোনালি ত্বকে
যেমন আমার তোমাতে
আমার মুখ আমার জিভ আমার হাত
আমার তলপেট আর পাদুটি
তোমার মুখে তোমার ভালোবাসায়
অবাধে...অবাধে…
আমাদের দেহ আলাদা হয় আর জোড়া লাগে
অসহ্যভাবে
তোমার মুখাবয়ব আমার ওপরে
যাবতীয় দেবতাদের মুখাবয়ব
আর সুন্দর রাক্ষসদের
তোমার চোখ
ভালোবাসা ভালোবাসাকে ছোঁয়
মন্দির আর দেবতা
এক
সন্মতির বয়স
দেবদূতদের সঙ্গে কথা না বলে আমি সন্তুষ্ট হই না
আমি দেবতার চোখ দেখতে চাই
যাতে ব্রহ্মাণ্ডে অলৌকিকতার টোপ দেবার জন্য নিজেরটা প্রয়োগ করতে পারি
যাতে শ্বাস ফেলতে পারি আর বিষ ওগরাতে পারি
যাতে ওই দরোজাটার তালা খুলতে পারি যেটা আগেই খোলা আর ঢুকতে পারি বর্তমানে
যা আমি কল্পনা করতে পারি না
আমি তার জবাব চাই যে প্রশ্নগুলো করতে এখনও শিখিনি
আমি আলোকপ্রাপ্তিতে প্রবেসের দাবি করছি, অলৌকিকতার সংমিশ্রণে
অসহ্য আলোর উপস্হিতিতে
হয়তো সেই ভাবেই যেভাবে গুটিপোকারা তাদের উড়ালের ডানা দাবি করে
কিংবা ব্যাঙাচিরা দাবি করে তাদের ব্যাঙজীবন
কিংবা মানবসন্তান দাবি করে তার বেরোনো
উষ্ণ গর্ভের সুরক্ষা থেকে
প্রথমে ওরা দেবদূতদের জবাই করলো
১.
প্রথমে ওরা দেবদূতদের জবাই করলো
তারের দড়ি দিয়ে তাদের রোগা শাদা পা বেঁধে
আর
তাদের রেশমের কন্ঠ শীতল ছুরি দিয়ে চিরে
মুর্গির বাচ্চার মতন ডানা ঝাপটিয়ে তারা মারা গেল
আর তাদের অবিনশ্বর রক্ত জ্বলন্ত পৃথিবীকে ভিজিয়ে দিলো
আমরা মাটির তলা থেকে তা দেখলুম
সমাধিফলক থেকে, কবরের গুপ্তঘরে
আমাদের হাড়গিলে আঙুল চিবিয়ে
আর
পেচ্ছাপে দাগ-ধরা গোটাবার চাদরে কাঁপতে লাগলো
বিদায় নিয়েছে উচ্চশ্রেনির দূতেরা আর স্বর্গীয় দূতেরা
ওরা ওদের খেয়ে ফেলেছে আর মজ্জার লোভে হাড় ফাটিয়েছে
ওরা নিজেদের পাছা পুঁছেছে দেবদূতদের পালকে
আর এখন তারা পাথুরে রাস্তায় হাঁটছে
আগুনের গর্তের মতন চোখ নিয়ে
২.
দেবদূতদের ব্যাপারে কে শাসকদের খবর দিয়েছে ?
কে যিশুর শেষ-ভোজের পেয়ালা চুরি করেছে আর তা বদলে দিয়েছে একজগ মদ দিয়ে?
কে গ্যাব্রিয়েলের সোনালি শিঙকে লোপাট করেছে ?
তা কি কোনো ভেতরের লোক করেছিল ?
কে দেবতার মেষশাবককে পুড়িয়ে খেয়েছে ?
কে সন্ত পিটারের চাবিগুলো উত্তর সাগরতীরের
পায়খানার মধ্যে ফেলেছে ?
কে সন্ত মেরিকে ঘরসামলাবার ছাপ মেরেছে ?
তা কি কোনো ভেতরের লোক করেছিল?
আমাদের অস্ত্রগুলো কোথায় ?
আমদের গদাগুলো কোথায়, আমাদের আগ্নেয়তীর, আমাদের বিষ-গ্যাস
আমাদের হাতবোমা ?
আমরা বন্দুকের জন্যে হাতড়াই আর আমাদের হাঁটুতে গজায় ক্রেডিট কার্ড।
আমরা বাতিল চেক বমি করি
দুই পা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকি চাপের সামনে সাবান-মাখা মুখে ফুঁপিয়ে
আমাদের রেডিওঅ্যক্টিভ চোখে
আর চিৎকার করি
শেষতম রাইফেলের জন্য
পয়গম্বরি কামান
ইস্টারের বোমা
নারীদের গর্ভ চিরে শিশুদের বের করে আনে
বেয়োনেট দিয়ে
অন্ধ নার্সদের চোখে রক্ত ছেটাতে থাকে
তাদেরই তরোয়ালে তাদের কচুকাটা করার আগে
পুরুষদের লিঙ্গ হয়ে উঠেছে নীল ইস্পাতের মেশিনগান,
বুলেট বীর্যপাত হয়, মৃত্যুকে ওরা অরগ্যাজমের মতন ছড়িয়ে দ্যায়
ঝোপের ভেতরে প্রেমিকরা একে আরেকের লিঙ্গ ওপড়াতে থাকে
লোহার নখ দিয়ে
টাটকা রক্ত খেতে দেয়া হয় স্বাস্হ্যের জন্য বীজানুহীন
কাগজের কাপে
ক্লাবের সিফিলিসে ভোগা মেয়েরা তা এক ঢোঁকে গিলে ফ্যালে
পেপিয়ার মাশে মুখোশ পরে
প্রত্যেকে মুখ হাতে রাঙানো হ্যামলেটের মা
দশ বছর বয়সে
আমরা মাটির তলা থেকে দেখি
আমাদের চোখগুলো দূরবীনের মতন
আমাদের আঙুল ছুঁড়ে দিই কুকুরদের দিকে লজেঞ্চুসের জন্য
তাদের ডাক থামাবার উদ্দেশে
শান্তি বজায় রাখার খাতিরে
বন্ধুত্ব করা আর প্রভাবিত করার জন্য
৩.
বোমা পড়লে আশ্রয় নেবার কোলাপসিবল ঘরগুলো আমরা কোলাপস করে দিয়েছি
আমরা জীবন বাঁচাবার গোটাবার নৌকোগুলো গুটিয়ে ফেলেছি
আর বারোটা বাজবার পর
সেগুলো ভেঙেচুরে ইঁদুরের গুয়ে জমে পাহাড় হয়েছে
সার হয়েছে বিষাক্ত ফুলের জন্য
আর ভিনাসকুঁজো গাছের জন্য
মাটির তলায় আমরা গুঁড়ি মেরে থাকি
আমাদের ছ্যাঁদাকরা বুক জড়িয়ে ধরি ছাতাপড়া বাহু দিয়ে
আমাদের ছিন্ন শিরা থেকে টপটপ রক্ত পড়ার আওয়াজ শুনতে থাকি
আমাদের চেনলাগানো খুলির ব্রহ্মতালু উপড়ে তুলি
মস্তিষ্কে হাওয়া খেলানোর জন্য
ওরা আমাদের দেবদূতদের খুন করেছে
কৌতূহলীদের কাছে আমরা আমাদের দেহ আর সময় বিকিয়ে দিয়েছি
আমরা আমাদের শৈশব বেচে দিয়েছি ডিশওয়াশার আর মিলশহরের বিনিময়ে
আর নুন ঘষেছি রক্তাক্ত স্নায়ুতে
অনুসন্ধানের সময়ে
আর ওরা দেবতার খোলা মুখে হেগেছে
ওরা সন্তদের শেকল বেঁধে ঝুলিয়েছে আর ওরা
পয়গম্বরদের ঘুমের ইনজেকশান দিয়েছে
ওরা ক্রিস্ট আর শিশ্ন উভয়কেই অস্বীকার করেছে
আর বুদ্ধকে বলেছে স্কিৎসোফ্রেনিবার রোগী
ওরা যাযকদের আর পবিত্র পুরুষদের নপুংসক করে দিয়েছে
এমনকি প্রেমের শব্দগুলোকে সেনসর করেছে
প্রতিটি মানুষের জন্য মগজের শল্যচিকিৎসা!
আর তারা রাষ্ট্রপতি পদের জন্য একজন অবমানবকে বেছেছে
প্রতিটি গৃহিণীর জন্য মগজের শল্যচিকিৎসা!
প্রতিটি ব্যবসাদারের জন্য মগজের শল্যচিকিৎসা !
শিশুদের প্রতিটি স্কুলের জন্য মগজের শল্যচিকিৎসা !
আর তারা দেবদূতদের খুন করেছে
৪.
এখন গলিগুলোতে উভলিঙ্গীরা জড়ো হয় কুষ্ঠরোগিদের ঘণ্টা বাজিয়ে
যেমন করে ধুনুচি জ্বালিয়ে দেবতাদের ধর্ষণ করার উৎসবের তোড়জোড় করে
যে চর্বি ওদের ঠোঁটে চকচক করে তা দেবদূতদের দেহের
যে রক্ত তাদের থাবায় জমে থাকে তা দেবদূতদের রক্ত
ওরা রাস্তায় জড়ো হচ্ছে আর দেবদূতদের চোখ নিয়ে দাবা খেলছে
ওরা শেষ মানুষদের প্রলয়ের জন্য গড়ে তুলছে
৫.
এখন ভোরবেলার পরে
আমরা মাটির তলায় পাথর সরাচ্ছি, গুহার ভেতর থেকে
আমরা ফণিমনসার আঠায় পাওয়া দৃষ্টিপ্রতিভায় চোখ বড়ো করে তুলেছি
আর দাঁত মেজেছি গত রাতের মদে
আমাদের বগল ঠুসে বন্ধ করেছি ধুলোয় আর ছুঁড়ে দিয়েছি
আর তর্পণ করেছি একে আরেকের পায়ে
আর আমরা রাস্তায় ঢুকবো আর তাদের মধ্যে হাঁটবো আর লড়াই করব
আমাদের রোগা ফাঁকা হাত তুলে ধরব ওপরে
আমরা জগতের আগন্তুকদের মাঝে তিক্ত বাতাসের মতন প্রবেশ করব
আর আমাদের রক্ত গলিয়ে ফেলবে লোহা
আমাদের শ্বাস গলিয়ে ফেলবে ইস্পাত
আমরা খোলা চোখে মুখোমুখি দাঁড়াব
আর আমাদের চোখের জল ঘটাবে ভূকম্পন
আর আমাদের বিলাপ পাহাযগুলোকে উঁচু করে তুলবে
সূর্যের পথচলা থামিয়ে দেবে
ওরা আর কোনো দেবদূতকে খুন করতে পারবে না !
চোদার সঙ্গে ভালোবাসাবাসি করা
চোদার সঙ্গে ভালোবাসাবাসি করা
ভালোবাসার সমস্ত উষ্ণতা আর আরণ্যকতা নিয়ে সঙ্গম করা
তোমার মুখের জ্বর আমার তাবৎ গোপনীয়তা আর অজুহাত খেয়ে ফেলছে
আমাকে রেখে যাচ্ছে বিশুদ্ধ জ্বলন্ত নিঃশেষে
এই মিষ্টতা সহ্য করা কঠিন
মুখ প্রায় ছুঁচ্ছে না মুখকে
স্তনবৃন্তের সঙ্গে স্তনবৃন্ত আমরা ছুঁইয়েছি
আর আমরা হয়ে গেছি সহসা অসাড়
এক তেজোময়তার স্রোতে
যা কিছু আমি এতোকাল জেনেছি তার অতিরিক্ত
আমরা স্পর্শ করলুম
আর দুই দিন পরে
আমার হাত জড়িয়ে ধরল তোমার ধাতুরসাসিক্ত শিশ্ন
আবার !
তেজোময়তা
বর্ণনাতীত
প্রায় অসহনীয়
প্রপঞ্চগুণহীন বস্তু আর প্রপঞ্চের মাঝের আড়াল
অতিক্রম করে
বৃত্ত সাময়িকভাবে পরিপূর্ণ
ক্রিয়ার ভারসাম্য
নিখুঁত
একসঙ্গে পুশাপ আশি, আমাদের দেহ ভালোবাসায় মজে যাচ্ছে
যা কখনও মজেনি এর আগে
আমি তোমার কাঁধে চুমু খাই আর তা থেকে লালসার গন্ধ বেরোয়
কামদগ্ধ দেবদূতদরা নক্ষত্রদের সঙ্গে সঙ্গম করছে
আর চিৎকার করে স্বর্গকে জানাচ্ছে তাদের অপ্রশমণীয় আনন্দ
ধুমকেতুদের লালসা ধাক্কা খাচ্ছে অপার্থিব মৃগিরোগে
স্ত্রীপুরুষ লক্ষণান্বিত দেবতারা পরস্পরের সঙ্গে
অচিন্ত্যনীয় কাজ করছে
চিৎকার করেসমগ্র ব্রহ্মাণ্ডে আর তা অতিক্রম করে
ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের আহ্লাদ
আর আমরা পাসাপাশি, আমাদের দেহ ভিজে আর জ্বলন্ত,
আর
আমরা ফোঁপাই আমরা ফোঁপাই আমরা ফোঁপাই অবিশ্বাস্য চোখের জলে
যা সন্তরা আর পবিত্র মানুষেরা ঝরিয়েছে
তাদের নিজেদের জ্যোতির্ময় দেবতাদের সামনে
আমি কানে কানে তোমার প্রতিটি রোমকূপে ভালোবাসা জানিয়েছি
যেমন তুমি জানিয়েছ
আমাকে
আমার সমস্ত দেহ হয়ে উঠেছে যোনিমুখ
আমার পা আমার হাত আমার তলপেট আমার বুক আমার কাঁধ আমার চোখ
তুমি তোমার জিভ দিয়ে
আমাকে অবিরাম চোদা করো তোমার দৃষ্টি দিয়ে
তোমার কথা দিয়ে তোমার উপস্হিতি দিয়ে
আমরা অন্য মূর্তিতে বদলে যাচ্ছি
আমরা কোমল উষ্ণ আর কম্পনরত
নতুন সোনালি প্রজাপতির মতন
তেজোময়তা
বর্ণনাতীত
প্রায় অসহনীয়
রাতের বেলায় অনেক সময়ে আমি দেখি তোমার দেহ উদ্ভাসিত
ভালোবাসার গ্রিক দেবতা/কবিতা
ভালোবাসার যুবক গ্রিক দেবতাকে প্রণাম যিনি তরুণীদের সঙ্গে সঙ্গম করেন!
কেবল দেবতারাই অমন ঔদার্য্য পছন্দ করেন
সবায়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন সুষমা
ভালোবাসার গ্রিক দেবতাকে প্রণাম ! যিনি সৌন্দর্য্যকে ভালোবাসেন
আর তা সর্বত্র পান
হে ভালোবাসার গ্রিক দেবতা আমি তোমাকে আর তোমার দেবীদের দেখেছি
ভালোবাসার কামনার কুয়াশায় মোড়া ফুলের মতন সত্য
যা নিজের দিনে ফোটে আর বাতাসে হারিয়ে যায়
আমি তোমার চোখ দেখেছি আহ্লাদে ধিকিধিকি জ্বলছে
যখন তুমি তোমার সুন্দর জিভ দিয়ে মিষ্টি মননের সৌন্দর্য্যকে ভালোবাসছিলে
আর তারপর দেখেছি একই আহ্লাদের গভীরতায় ঝিকমিক করছে
যখন কোমল রমণীরা তোমার বাহুতে শুয়েছিল
ভালোবাসার গ্রিক দেবতাকে প্রণাম ! যিনি প্রেমকে সঞ্চয় করে রাখেন না
বরং তা খরচ করে ফ্যালেন সোনালি ছাঁকনিতে জলের মতন
ভাগাভাগি করে নেন নিজের কোমল খেয়ালি গরিমা
সকলের সঙ্গে যারা তাঁর উপস্হিতিকে মান্যতা দেয়
ফুলের মতন অবিশ্বস্ত, বাতাস-তাড়িত প্রজাপতির মতন চপল
ভালোবাসার গ্রিক দেবতাকে প্রণাম, তিনি দেবতাদের বালক !
যিনি কেবল সৌন্দর্য্যকে ভালোবাসেন
আর তা খুঁজে পান সর্বত্র
ফিনিক্সের গান
তাহলে আমি আর বড়ো হবো না
যদি শিশু বলতে বোঝায় বিস্ময়ের বোধ
আমার বৃষ্টিময় বাতাসে আমার মাথায় থাকে বৃষ্টি
আমি সময়ের আগুনে উধাও হবো না
বরং নিজেকে ফিনিক্স হিসাবে প্রমাণ করব
( নক্ষত্রের গুঁড়োর মতন ছাই )
আবার জন্ম আর আবার আর আবার
স্বৈরাচারীদের জন্য কবিতা
সংবেদনশীল মানুষেরা অসংখ্য--
আমি প্রতিজ্ঞা করেছি তাদের আলোকিত করব
--বুদ্ধধর্মের প্রথম সঙ্কল্প
মনে হয় তোমাকেও ভালোবাসতে হবে
সুন্দরদের ভালোবাসা সহজ
শিশুদের সকালের গরিমা
সহজ ( যেমন যেমন সমবেদনা বৃদ্ধি পায় )
অচেনাকে ভালোবাসা
অনুধাবন করা আরও সহজ ( সমবেদনায় )
তাতে যে ব্যথা আর সন্ত্রাস লুকিয়ে আছে
যারা নিজেদের চারিপাশের জগতকে
হিংস্রতার সঙ্গে পরিচালনা করেন এতো ঘৃণা
কিন্তু ওহ আমি যিশুখ্রিস্ট নই যে
আমাকে যারা ফাঁসি দেয় তাদের আশীর্বাদ করবো
আমি বুদ্ধ নই কোনো সন্ত নই
আমার সেই জ্যোতির্ময় ক্ষমতাও নেই
বিশ্বাসে আলোকিত
তবু তা সত্তেও
তুমি একজন সংবেদনশীল মানুষ
এই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছ
এমনকি আমিও একজন সংবেদনশীল মানুষ
এই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি
চাইছি নিজের আলোকপ্রাপ্তি
তোমার জন্যেও চাইতে হবে
যদি আমার যথেষ্ট ভালোবাসা থাকে
যদি আমার যথেষ্ট বিশ্বাস থাকে
হয়তো আমি তোমার পথকে পার হতে পারবো
আর তাকে বদলাতেও পারব
আমাকে ক্ষমা করুন, তাহলে--
আমি এখনও আপনাকে ভালোবাসতে পারব না
ক্যারল বার্জ-এর কবিতা ( ১৯২৮ - ২০০৬ )
আরম্ভের গান
হ্যাঁ তোমাকে অনুমতি দেয়া হল তুমি
যাও হ্যাঁ তুমি জ্যোতির্ময়
গরিমা দেয়া হল হলে
অকাট্য
তুমি যেমন তুমি তেমন দাঁড়িয়ে তোমার মতন
হাঁটো
হ্যাঁ তোমাকে ক্ষমা করা হল তোমাকে
ভালোবাসা হল আর আলিঙ্গন করা হল
হ্যাঁ
তোমাকে বলে হবে
অসাধারণ যেমন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে আর
সহজ ভাবে বসে থাকবে
হ্যাঁ তুমি আরম্ভ করো
এইভাবে একটা ছোটো পদক্ষেপ এই পদক্ষেপ
দোনামনা বিস্ময়কর যেমন পর্ণ
ফার্ন গাছের বাতাসে
তারপর কোমল আগাছা
আরেক পদক্ষেপ যতোক্ষণ না
শ্যাওলা আর তারপর
হ্যাঁ তুমি ওখানে বৃষ্টিতে দৌড়োচ্ছো
আলোর হাওয়া পাতাগুলো
সবই
মুখগুলো শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের ও
হ্যাঁ
হ্যাঁ
তোমায় দেখতে এতো সুন্দর যে তুমি
হাঁটছো যেমন দৌড়োও ওড়ো ভেতরে আসো না
বাতাস পাতাগুলো
জ্যোতির্ময় সূর্য
আর তোমার মুখ ও শোনো
সবই
হ্যাঁ শেষ পর্যন্ত
জলের সঙ্গে
ওরা প্রত্যেকে বলে ‘আমি তোমাকে ভালোবেসেছি
কেননা তুমি কখনও আমাকে বলোনো যে আমি কুৎসিত’
সাবান রক্তকে থামায় : ঠাণ্ডা জল তাকে মোছে ।
ওর চললো, পুরোনো রাস্তা ধরে
প্রত্যেকটা শহরে, উঁচু হ্যাট পরে
ব্যক্তিগত বঞ্চনায়, ওদের ক্ষয়ে যাওয়া নখ
বিশেষ দিনের ডাক টিকিটে সাজানো
তারওপরে তাদের যৌবনের মুখ । গত বছরের
গুজবগুলো বাঁধাকপিকে স্বাস্হ্যের জন্য উপকারী কলরেছে
আর আলো ছিল মূল্যহীন : এটা
দশ বছর আগে উল্টে দেয়া হয়েছে, আর গৃবধুরা
প্রতিটি পর্বে সেগুলো রান্না করলো । কিন্তু যখন
বাড়িটা চুপচাপ হলো, রাত ডুবন্ত
আত্মধিক্কারে, ‘আমি তোমাকে ভালো ভালোবেসেছি,
লক্ষ করো, লক্ষ করো আমি কি করেছি, দ্যাখো,’
জলের সঙ্গে, কেটলিভরা গরম জল,
রক্ত থামাবার জন্য, আর তার পরের সকালে
ওরা চললো, গ্রামের ঝর্ণার দিকে,
সাবানের শাদা ভুলগুলোকে শোধরাবার জন্য ।
হুলো বিড়াল কিছুই করছে না
ফ্র্যাঙ্ক মার্ফির জন্য
ও বসে থাকে
জানোয়ার হবার দরুন
একটা মদ্দা জানোয়ার
পৃথিবীতে জীবন্ত
ও বেঁচে আছে ।
ও জীবন্ত
দেখে বোঝা যায় নড়চড় নেই
ভেতরের অনুগুলো নড়াচড়া করছে
পৃথিবীর দিকে
বিড়াল বসে আছে
দেখা বোঝা যায় কিছুই করছে না ।
বুকের পাঁজর নড়াচড়া করে
ঝিল্লি যৎসামান্য নড়ছে
ফুসফুস
পাকস্হলী।
চোখ দেখছে সরাসরি সামনে দিকে
অনন্তে
যতোক্ষণ ও নিশ্চল বসে
ও নড়ছে নড়ছে নড়ছে
অসম্পূর্ণ কবিতা
১.
বাইরে যাবার জন্য
পৃথিবীতে
এখন যে পোশাকে তা
জাপানি ছাপাখানা মালিকের,
চোখ নয় কিংবা
অধিনেত্রকোণ, কিন্তু
হ্যাঁ,
দশণানুপাত
যেমন একটা দ্বীপের হয় :
বাইরে,
বাইরে এক জগতে,
এই পৃথিবী পাবার জন্য ! আর
অনেক সহজ, জটিল
যেমন ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে :
ছোটো করে ফেলা যায়
কয়েকটা লাইনে
ছায়া দিয়ে, কাঠকে
তার কণায়
বাইরের আঙ্গিকের বদলে বরং ।
কোন
অংশে তুমি আছো পৃথিবীতে !
আর তার পরে, কোথায়
বাইরে যাও,
হয়তো ডাইনির
পোশাকে,
যখন জানলে
চারিদিকে সমুদ্র ! আর
কড়ি ছড়ানো : লাইন আঁকা
বালির ওপরে ।
একবার ।
জমির ওপরে সেতু তৈরি।
২.
যেতে দিন
হতে দিন পৃথিবীর রঙে ;
কমলা কিংবা মরচে-রঙা কিংবা
এটেল মাটির মতন কালো
যেখানে নদীরা রয়েছে
কিংবা নীল
শিকড়
খরাভূমির গেরুয়া থেকে,
বাঁচানো
বৃষ্টিতে পরিশুদ্ধ
এক হাতের দিকে ।
কিন্তু সব সময়
এই কম্বলের মতন
বোনা
আসল ভেড়ার পশম থেকে,
জীবন্ত, কাঁচি দিয়ে তোলা
আর রাঙানো
হয়তো বেরি দিয়ে
যতক্ষণ না ঝকমকে, কিংবা
যেন হয় তেমন:
নরম স্বাভাবিক ।
কিন্তু সব সময়ে
ফ্যাশন-করা
চোখ দিয়ে, হাত দিয়ে,
বন্ধুদের মুখের মতন, ক্ষয়াটে কিংবা
যুবক : প্রকৃতির সঙ্গে
তা স্বাভাবিক,
করে তোলা
হয়েছে।
হেতু এবং উৎপত্তি সম্পর্কে
( ডেনিসে লেভেরটভের জন্য )
যেমন একজনের হাড়গুলো আর চিন্তাধারা
শাখার মতন দেখা দেয়, চামড়ার মধ্যে দিয়ে,
বছর কেটে যাবার সঙ্গে, ফার্ন পাতার মতন আঁকা
দৃশ্যমান বা আবছা, কন্ঠস্বর মনে পড়ে
যখন পৃষ্ঠা পড়া হয়, এটা হলো বোধ যা
আসতে চলেছে তার, যখন আবিষ্কার হয়
এই মুখ তেমন নতুন নয়, শেষ পর্যন্ত ।
তোমার বিরুদ্ধ ধারণা যখন মেনে নেয়
এই সংজ্ঞাগুলো দিয়ে তুমি যা হয়েছো ।
পরিচ্ছন্নতার প্রভাবে, প্রয়োজনহীন পতন আর পতন,
নতুন যে নকশা তার মিল অক্ষরের সঙ্গে,
অতীত বনিয়াদ গড়ে ফেলছে কিংবা যে পথে
সূক্ষ্ম পর্দাগুলো উঠে যায় ।
সেগুলো হলো তোমার কাছে যা চলে আসছে, মনে করাবার জন্য
হেতু ও উৎপত্তি সম্পর্কে, তোমার নিজের পাতায় ।
ছোটো শহর
যা আমরা প্রত্যেকে করি
তা বেশ আগ্রহসঞ্চারী ।
বিশেষ করে একে অপরের জন্য ।
পরস্পরের কাছে আগ্রহসঞ্চারী ।
আমরা যা করি
একে অপরকে ।
এটাই সবচেয়ে
আগ্রহসঞ্চারী জায়গা
পৃথিবীতে বড়ো জোর
আগ্রহসঞ্চারী সম্ভাব্য সময় ।
এখানে । ঠিক এক্ষুনি । আমরা
সঠিক, এখন ; আমরা সঠিক
এখানে । আমরা সঠিক ।
হ্যাঁ, আমরা সবাই এখানে।
আমরা এখানে । সবকিছুই এতো
আগ্রহসঞ্চারী, পরস্পরের কাছে
এমন জায়গা যাকে রাখা উচিত
ইতিহাসে,
পৃথিবীতে এই সময়ে !
যা আমরা করছি তা করে যাবো, যেভাবে
আমরা করি, ওকে আর
পরস্পরের সঙ্গে। আর সব সময়ে
পরস্পরের সম্পর্কে আগ্রহী ।
তুমি যদি এখানে এসে থাকো, তুমি
আপনা থেকেই এখানের হবে
নিশ্চয়ই, আর তুমি হবে
যা আমরা করি তার অংশীদার
এর একটা অংশ যাবে-আসবে
আর তাই আগ্রহসঞ্চারী
যখন তুমি কিছু করছ
আর তোমাকে করা হচ্ছে ।
ইতোমধ্যে, আমরা সবাই এখানে
এই জায়গায় আর এটা
থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো
এখন তো অবশ্যই অন্য সময়ের চেয়ে ।
বারবারা মোরাফ-এর কবিতা
গাইজিন গিরি
সিড কোরম্যানের জন্য
আমাদের মতন অন্যেরা
তুমি কখনও
কামলালসার কবিতা লেখোনি
আমরা প্রত্যক্ষ করলুম
তোমাকে অনুসরণ করতে হবে
তার ভেতর দিয়ে অন্ধকার
আর আগ্নেয়
দরোজা যা যাচ্ছে
রহস্যের
ডাকিনিদের
বাড়ি
তবু মাছের মতন
লাফিয়ে
জল থেকে
তুমি ছিলে না
তুমি কে
দাওনি
সম্ভ্রম
সম্পাদক হিসাবে তুমি
খুন করার
সংবেদন রাখতে
যারা তোমার প্রথম
দর্শনে কুপোকাৎ
মিটার
এখনও পরের
শতাব্দিতে চলছে
শিরোনাম নেই
এটা অন্যরকম দেখায়
যেমন দেখতে
তা থেকে
প্রায় সবসময়
প্রায় সবসময়
প্রায়
সব জিনিসই
সব জিনিস
সব জিনিসই
সব জিনিস
নারী আর
পরুষ পথ
মিলছে
নারী আর পুরুষ
রাস্তা পেরোচ্ছে
হালকা বৃষ্টি পড়ছে
ওদের সামনে, তাদের
আশেপাশে
তাদের মাঝে
তাদের ওপরে
বৃষ্টি বেঁকা হয়ে পড়ছে
অন্য শূন্যতা থেকে
যেখানে মেয়েটি
যোগমগ্ন
ওর পেছনের পাথর
পেছনে স্বচ্ছ
আর ওর সামনের জায়গায়
গোলাপি শার্ট-পরা পুরুষ
টাকমাথা আর ছিপছিপে,
জগিং করছে যে জায়গায়
তা অন্যরকম দেখাচ্ছে
যেমন দেখতে তা থেকে
প্রায় সবসময়
প্রায়
গোলাপি শার্ট-পরা লোকটা
মেয়েটার
ঘন খোলা গোলাপে
শুভকাজের
মতন জরুরি
শ্বাসের মতন
শ্বাস শুধু
গড়তে পারছে না
টাকমাথা লোকটাকে
গোলাপিত
শার্ট
মেয়েটাকে
পেরিয়ে চলে গেল
এমনভাবে
প্রায়ই
স্তব্ধ করে
মেয়েটার মন
এমন ব্যথায় একটা
সহজ
হ্যালো !
সামগা সামগাই
আমি ক্ষ্যাপা
যাকিছু
গোপন তা
প্রতিদিনের অংশ
যেমনভাবে আমরা
বেঁচে আছি
কখনও পৃথক হই না
একাকীত্ব থেকে ।
যাও কথাটা গিয়ে বলো
শহরে ।
ঘুমোতে যাচ্ছি
ও যেতে চায় না
বিছানায়
ওর বয়স দশ বছর
ওর বন্ধুও যাচ্ছে না
ঘুমোতে এতো তাড়াতাড়ি ও ক্লান্ত নয় ও
চোখ খুলে হাই তুলছে বেশি অক্সিজেন পাবার জন্য
ক্লান্ত হওয়ার সঙ্গে ওর কিছু করার নেই কিংবা দরকার
ও বলে সাত ঘণ্টার বেশি ঘুম তা যতো
বয়সই তোমার হোক না কেন সেটা কোনো প্রশ্ন নয়
মুখ এমন নিশ্চিত
আমি ওর চুমু নেয়া থামিয়ে/বোলো না/ওকে বোলো না তৈরি হয়ে নাও
এখন বিছানায় যাবার জন্য ওর সব সময়েই লাগে
আধ ঘণ্টা বা বেশি ও বলে তোমার মতন মেজাজি হয়েছে তাই ?
ঠিক আছে আর তিন মিনিট নয় এখন থেকে আমি বলি এখন
আমি আমার গণিতের হোমটাস্ক করে ফেলেছি ও বলে বাজে ব্যাপার আমি বলি তুমি
টিভি দেখছিলে আঠার মতন সেঁটে গ্লুওন-এর মতন গ্লুওন আবার কি জিনিস
ও বলে কালকে আমি বলি আমি এই বিষয়ে যা জানি এখনই বলছি
তুমি বিছানায় যাবার জন্য তৈরি হচ্ছো কি না আমার হুকুম আর
কানের পেছন দিকটা ধুয়ে ফেলতে ভুলো না সত্যিই আমি হুকুম করছি
ও ভাবে আরেকটা কোনো অজুহাত দেয়া যায় কিনা, আহা আমি ওকে বিছানায়
পাঠাই কানের পেছনে ময়লা নিয়েই
এটাই আমার সুযোগ আমি হাই তুলি ব্যাপারটা অক্সিজেনের আমি
স্নানঘরে যাই দাঁত মাজতে আর মুখ ধুতে, ওহ এটা ঘুমোবার সময়
ডেনিসে লেভেরটভ-এর কবিতা ( ১৯২৩ - ১৯৯৭ )
ঘোষণা
আমরা দৃশ্যটা জানি : ঘর, নানাভাবে সাজানো,
প্রায় সব সময়েই এক বক্তৃতার টেবিল, একটা বই ; সব সময়
দীর্ঘ লিলিফুল ।
বিশাল ডানা মেলে পবিত্র মহিমায় নেমে এলেন,
দৈবিক দূত, দাঁড়িয়ে বা মাথার ওপরে ঘুরছেন,
যাকে উনি চেনেন, এক অতিথি ।
কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে ভীরু আনুগত্যের কথা। কেউ বলেনি
সাহস
উৎসারিত তেজোময়তা
তাঁর অনুমতি ছাড়া সামনে যায়নি । ঈশ্বর অপেক্ষা করছিলেন।
উনি স্বাধীন
গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে, বাছবার অধিকার
যা মানবিকতার অঙ্গ ।
কোনো ঘোষণা কি নেই
এক বা অন্য ধরণের বেশিরভাগ জীবনের ?
অনেকে অনিচ্ছায় পরম নিয়তি বেছে নেয়,
তাদের কার্যকর করে বিরূপ গর্বে,
বুঝতে না পেরে ।
বেশিরভাগ সময়ে সেই মুহূর্তগুলো
যখন আলো আর ঝড়ের পথএকজন পুরুষ বা নারীর অন্ধকার থেকে বেরোয়,
তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়
আতঙ্কে, দুর্বলতার ঢেউয়ে, বিষণ্ণতায়
আর অসুবিধা লাঘবে।
সাধারণ জীবন চলতে থাকে।
ঈশ্বর তাদের যন্ত্রণা দেন না ।
কিন্তু সিংহদুয়ার বন্ধন হয়ে যায়, লোপাট হয় পথ…
উনি একজন শিশু ছিলেন যিনি খেলা করতেন, খেতেন, বানান
করতেন অন্য শিশুদের মতন -- কিন্তু অন্যদের মতন,
দয়া ছাড়া কাঁদতেন না, হাসতেন না
বিজয়ে নয় আনন্দে ।
সমবেদনা ও বুদ্ধি
মেশানো ছিল তাঁর মধ্যে, অবিভাজ্য ।
আরও যুগান্তকারী নিয়তির জন্য ডাক পড়ল
অন্যান্যের চেয়ে বিশেষ সময়ে,
উনি পেছপা হলেন না,
কেবল জিগ্যেস করলেন
সহজভাবে, “কেমন করেই বা এটা হতে পারে ?”
আর গম্ভীরমুখে, সৌজন্যে,
দেবদূতের উত্তর হৃদয়ে মান্যতা দিলেন,
তক্ষুনি বুঝতে পারলেন
তাঁকে যে অদ্ভুত মন্ত্রিত্ব উপহার দেয়া হচ্ছিল :
তাঁর গর্ভে ধারণ করতে হবে
অনন্ত ওজন আর ভারহীনতা ; বইতে হবে
গোপনে, সীমিত অন্তরে,
নয় মাসের অনন্তকাল ; ভেতরে রাখতে হবে
কোমল অস্তিত্ব,
ক্ষমতার যোগফল--
এক মৃদু মাংসে,
আলোর যোগফল ।
তারপর জন্ম দিতে হবে,
বাতাসে ঠেলে বের করতে হবে, এক মানব-শিশুকে
অন্য সকলের মতন যার প্রয়োজন
দুধ আর ভালোবাসা---
কিন্তু তিনি ছিলেন ঈশ্বর ।
উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে ক্যালিফোর্নিয়ায়
ক্ষয়রোগে মৃত ইউকালিপটাস গাছগুলোর মাঝে,
ক্রিসমাসের তুষারে মরচে-পড়া গাছ আর ঝোপের মাঝে
ক্ষেত আর পাহাড়তলি পাঁচ বছরের খরায় হাঁপিয়ে-ওঠা,
এক ধরণের বাতাসি শাদা ফুল নিয়মিত ফুটেছে
পুনরায় ফুটেছে, আর ফিকে গোলাপি, ঘন গোলাপি ঝোপ--
এক সূক্ষ্ম আতিশয্য । তাদের মনে হল
অতিথিরা আনন্দে এসে পড়ছেন পরিচিত
উৎসবের দিনে, বছরের ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবিদিত, দেখতে পাননি
চটের পোশাক অন্যেরা পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
আমাদের কয়েকজনের, মনপরা উপত্যকা ভালো সঙ্গ দিচ্ছিল
আমাদের লজ্জা আর তিক্ততার পাশাপাশি । আকাশ চিরকেলে-নীল
প্রতিদিনের সূর্যোদয়, আমাদের বিরক্ত করছিল হাসাবার বোতামের মতন।
কিন্তু ফুটেথাকা ফুলগুলো, সরু ডাল আঁকড়ে
উড়ন্ত পাখিদের চেয়েও বেশি সতর্ক,
ভেঙেপড়া হৃদয়কে উৎসাহিত করছিল
এমনকি তার নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ।
কিন্তু
আশার প্রতীক হিসাবে নয় : ওরা ছিল ফালতু
অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ
--আবার, আবার--- আমাদের নামে ; আর হ্যা, তারা ফিরছিল
বছরের পর বছর, আর হ্যাঁ, সংক্ষিপ্ত সময়ের নির্মল আনন্দে উজ্বল হয়ে উঠছিল
অন্ধকার আলোর বিরুদ্ধে
শয়তানি দিনগুলোর। ওরা আছে, আর ওদের উপস্হিতি
স্তব্ধতায় অনির্বচণীয় -- আর বোমাবর্ষণ হচ্ছিল, ছিল
সন্দেহ নেই আরও হবে ; সেই শান্ত, সেই বিশাল শ্রুতিকটূতা
যুগপৎ । কোনো কথা দেওয়া হবনি, ফুলগুলো
তো পায়রা নয়, কোথাও রামধনুও ছিল না । আর যখন দাবি করা হল
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, তা মোটেই শেষ হয়নি ।
প্রেমের কবিতা
হতে পারে আমি একটা অসুস্হ অংশ
একটা অসুস্হ জিনিসের
হয়তো কোনোকিছু
আমাকে ধরে ফেলেছে
নিশ্চয়ই কিছু একটা আছে
আমাদের মাঝে
আমি তো তোমাকে
দেখতেই পাই না
কিন্তু তোমার হাত দুটো
দুটো জানোয়ার যা ঠেলে দেয়
কুয়াশা একপাশে আর আমাকে ছোঁয় ।
বিবাহ সম্পর্কে
আমাকে বিয়ের বাঁধনে জেলে পুরো না, আমি চাই
বিয়ে, একটা
সাক্ষাৎ প্রতিদ্বন্দ্বীতা--
আমি তোমাকে বলেছিলুম
সবুজ আলো
মে মাসের
( নৈশব্দের একটা পরদা ফেলা হয়েছে
শহরের মাঝখানের বাগানে,
গত
শনিবারের পর
দুপুর, দীর্ঘ
ছায়া আর শীতল
বাতাস, সুগন্ধ
নতুন ঘাসের,
নতুন পাতার,
ফুল ফোটার জন্য তৈরি
প্রচুর---
আর পাখিগুলোকে সেখানে আমি দেখেছিলুম,
উড়ন্ত পাখিরা যাত্রাপথে থামছে,
বিভিন্ন রকমের তিনটি পাখি :
আজেলা-ফুলের রঙ গোল মাথা, কালচে,
চিত্রবিচিত্র, ফুরফুরে, ইঁদুরপেছল পাখি,
আর সবচেয়ে ছোট্ট, সোনালি কাঁটাদার ঝোপের মতন পরে আছে
কালো ভেনিশিয় মুখোশ
আর তাদের সঙ্গে তিনটে সম্ভ্রান্ত গৃহিনী পাখি
কোমল বাদামি জীবন্ত পালকে মোড়া---
আমি দাঁড়ালুম
আধঘণ্টার মতো জাদুমগ্নতার তলায়,
কেউ কাছ দিয়ে যায়নি
পাখিগুলো আমাকে দেখলো আর
আমাকে যেতে দিলো
তাদের কাছে ।)
এটা
অপ্রাসঙ্গিক নয় :
আমার সঙ্গে
দেখা হবে
আর তোমার সঙ্গে
দেখা করব
তাই,
একটা সবুজ
ফাঁকা জায়গায়, কারারুদ্ধ
থাকতে চাই না ।
মনচলার পর
একবার আমরা খেটেখুটে
আমাদের পুরোনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর --
‘ভৌতিক’, ‘ঘন’, ‘বাস্তব’, ‘বস্তুনিচয়’ -- থেকে মুক্ত হলে
প্রাচীন পরিমাপ থেকে স্বীকার করতে হয় কি,
যদিও খোলাচোখে কিন্তু লুণ্ঠিত
নেত্রগোচর যন্ত্রপাতিতে, দর্শনীয় নয় ( ওহ,
সংক্ষেপে দেখা যায় না ! ) স্বীকার করতে হয়
যে ‘বড়ো’ আর ‘ছোটো’ ওদের
মর্মার্থ নেই, কেননা বস্তু নয় বরং প্রক্রিয়া, কেবল প্রক্রিয়া,
চেষ্টা করে দেখা দেবার
জ্ঞানযোগ্য : জগতসংসার, ব্রহ্মাণ্ড---
তারপর আমরা যা অনুভব করি
দুর্বল গ্রেপ্তারের মুহূর্তে,
আতঙ্কের কালো কাপড় পড়ে যাচ্ছে
আমাদের মুখের ওপরে, আমাদের শ্বাসের ওপরে,
তা পাসকালের আতঙ্কের নতুন এক মোচড়,
নিরীক্ষণের এক প্রসারণ,
এর উদ্দেশ্য এখন
আমাদের মাংসের ভেতরে, অনন্ত পরিসর আবিষ্কার
আমাদের নিজের অণুর ভেতরে, নূনতম
কণা যাকে আমরা অনুমান করেছিলুম
আমাদের নশ্বর অহং ( আর ভেতরে আর বাইরে,
তারা ঠিক কি ? ) -- তারা এখন উদ্দেশ্য
আগে থেকে ফেলে যাওয়া শূন্যতা
বিলাসের ঘোষণা, পরিমাপের বিরে
আমাদের অশরীরী, কাল্পনিককে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া,
( হ্যাঁ, কিন্তু সংবেদী, ) পদার্থের ধারণা,
আমাদের ভাষার মতনই ভ্রমাত্মক,
প্রবহণ যা আত্মা কেবল
পরিব্যপ্ত, এড়িয়ে যায় কিন্তু নাছোড় ।
বিবাহের অবিরাম বেদনা
বিবাহের অবিরাম বেদনা:
উরু আর জিভ, হে প্রিয়,
এর সঙ্গে বেশ ভারি,
তা দাঁতে স্পন্দিত হয়
আমরা আংশিদারীর চেষ্টা করি
কিন্তু ফিরিয়ে দেয়া হয়, হে প্রিয়,
প্রত্যেকে আর প্রত্যেকে
এটা হল প্রকাণ্ড হাঙর আর আমরা
তার পেটের ভেতরে
আনন্দ খুঁজি, কোনও আনন্দ
যা এর বাইরে জানা যাবে না
দুই বনাম দুই এর সিন্দুকের
মধ্যে এর অবিরাম বেদনা ।
নভেম্বর ১৫, ১৯৬৯ বিচার বিভাগে
বাদামি ডিজেল-ধোঁয়া, শাদা
রাস্তার বাতগুলোর তলায় ।
তিন দিকে ছাঁটা, সব জায়গা ভরা
আমাদের দেহ দিয়ে ।
দেহ যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
বাদামি বাতাসহীনতায়, শাদা রঙে রাঙানো
আলোয়, এক ছাতাপড়া বিহ্বল দ্যুতি,
যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
হাতে হাত দিয়ে, অন্ধ-করে-দেয়া, মুখবিকৃতি ।
তাকে চাই, চাইছি
এখানে উপস্হিত থাকতে, দেহ বিশ্বাস করছে নিজের
বিবমিষায় মৃত্যু, আমার মাথা
নিজের বিষণ্ণতায় স্পষ্ট, এক ধরণের আনন্দ,
জানতে পারা যে এটা মোটেই মৃত্যু নয়,
মামুলি, এক দুর্ঘটনা, একটা
ঠুনকো মুহূর্ত। তাকে চাই, চাইছি
আমার যাবতীয় চাহিদা দিয়ে এই ক্ষোভ,
দেহের ভেতরে জানতে পারা
আমরা সকলে কঠোর অস্বাভাবিকতার
বিরুদ্ধে লড়ছি, চাইছি এর বাস্তব রূপ।
নদীর তীরে যেখানে ডিজেলের ধোঁয়া
আইভিলতায় পাক খেলো, পরস্পরকে টেনে নিয়ে
ওপর দিকে, অচেনা, ভাইয়েরা
আর বোনেরা । কিছুই
ঘটবে না কিন্তু
তিক্ততার স্বাদ নেয়া
স্বাদ । নেই জীবন
অন্য, এটা ছাড়া ।
এলিজা কাওয়েন-এর কবিতা ( ১৯৩৩ - ১৯৬২ )
আমি শবগুলোর চামড়া ছাড়িয়ে নিলুম
আমি শবগুলোর চামড়া ছাড়িয়ে নিলুম
আর আমার স্বপ্নের জন্য নীল রঙে রাঙিয়ে নিলুম
ওহ, আমি এই পোশাক সর্বত্র পরে যেতে পাসরি
বাড়িতে বসে রইলুম জিনস পরে।
আমি শবগুলোর চুল কেটে দিলুম
আর নিজের জন্যে বুনলুম পোকার পক্ষাবরণ
রেশম বা পশমের চেয়ে সূক্ষ্ম আমার মনে হয়
আর তার ভেতরে কাঁপতে লাগলুম ।
আমি শবগুলোর কান কেটে ফেললুম
আমার মাথা ঢাকার টুপির জন্যে
চোরকাঁটার চেয়ে উষ্ণ
আমি তার দাম দিলুম রক্ত দিয়ে ।
আমি শবগুলোর চোখ উপড়ে নিলুম
যাতে সূর্যের মুখোমুখি হতে পারি
কিন্তু দিনগুলো ছিল মেঘলা আকাশ
আর আমি হারিয়ে ফেলেছিলুম নিজের।
শবেদের যৌনাঙ্গ থেকে
আমি কর্মীসঙ্ঘের উর্দি বানালুম
এসথার, সলোমন, ঈশ্বর নিজে
আমার যোনির চেয়ে উদার ছিলেন ।
আমি শবগুলোর চিন্তা নিয়ে নিলুম
প্রতিদিনের প্রয়োজনের খাতিরে
কিন্তু সব দোকানে সব জিনিসে
সুন্দর করে লেবেল লাগানো ছিল ‘আমি’।
আমি শবগুলোর মাথা ধার নিলুম
পড়ার সুবিধার জন্য
প্রতিটি পাতায় দেখলুম নিজের নাম
আর যতো মিথ্যা শব্দ বলেছি সেগুলো।
শবগুলোর হাড় থেকে গড়া এক যন্ত্র
আমার মানুষের ভালোবাসার সঙ্গে খেলবে
কেবল যে শব্দ বেরোবে চাবিগুলো থেকে
তা পায়রাদের বকবকম ।
আমি অসংখ্য কবরের ভেতরে খুঁড়লুম
আমি ভাবলুম আমার সময় বেশ ভালো কাটলো
আয়নার দিকে যখন তাকাই সে খিলখিল হাসে
আমার মাথায় টাক আমি অন্ধ আর গায়ে সজারুর কাঁটা ।
আমি ভাবলুম শবগুলো গুরুত্বপূর্ণ
যে ঝুঁকি নিয়েছি তা নিশ্চিন্ত করেছে
যে বস্তুগুলো আমি নিয়েছি
তা দামি বিশুদ্ধ শ্বেতপাথরের ।
কিন্তু যখন এক হৃদয়ের আকর্ষণে পড়লুম
( ছোটো মণিরত্ন দিয়ে বদলাবার পর )
দেখলুম তা মনের মতন রক্তে ভরা
আর আমারটা হয়ে গেল ভুতুড়ে ।
এখন যখন আত্মাদের সঙ্গে দেখা হয়
যাদের ফাঁদে আমি কারারুদ্ধ
তারা আমায় মদ কিনে দেয় বা বই পড়ে শোনায়
কেউই আমার জামিন দিতে পারে না ।
আমি যখন আত্মা হয়ে গেলুম
( আমাকে জীবনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে )
আমি আমার মারাত্মক দেহকে বিক্রি করলুম
ছাত্র-ডাক্তারের ছুরির কাছে ।
এমিলি ডিকিনসনকে লেখা কাল্পনিক প্রেমপত্র
এমিলি
গ্রীষ্ম এলে
তুমি খুলে ফেলবে তোমার
রত্নময় মৌমাছিগুলো
যেগুলো আমাকে হুল ফোটায়
আমি খুলে ফেলবো আমার দুর্গন্ধময়
জিনস
হাতে হাত রেখে
আমরা বাইরে দৌড়োবো
সরাসরি দেখবো
সূর্যের দিকে
দ্বিতীয়বার
তামাটে ত্বকের হয়ে ওঠার জন্যে
আমি মনে করতে পারছি না
প্রশ্নটা -- সমাধান এইভাবে হলো
বালির দুটো ঢিবি
মরুভূমিতে বাঁয়ে আর ডাইনে, কিন্তু
উত্তরটা ছিল না দীর্ঘ থাম
এক কাপ চা তাদের মাঝে
মুখের প্রতিটি শব্দ এতো কঠিন
আর বিদেশযাত্রা প্রয়োজন
দেয়াল পর্যন্ত আর ফেরত
ঠিক এক্ষুনি মেয়েটা যে পারে
কিছুই না করে তাকিয়ে থাকতে--
যখন ওরা, জনসাধারণ, জগতসংসার
সামলাবার লোক, চেয়ার আর টেবিল তাতে
অবস্হান তাদের সবায়ের মাঝে, গুনতে ব্যস্ত
জিনিসগুলো আমি জানি এখানে আছে
কল্পনা করতে হবে পরিসর অতিক্রম করে
আমার চোখের কেবল যদি যতোদূর ছবিগুলো
কম বাস্তব হয়ে যায় । বিশাল সূর্য
বন্ধ জানালার ভেতর দিয়ে
তারপর আমিও
শেষ পর্যন্ত দুজনেই অদৃশ্য হয়ে যাবো
একটা পুরুষ আরশোলা
একতা আরশোলা
ঢুকে এলো
আমার জুতোর ভেতরে
সুগন্ধী অন্ধকার ওর ভালো লাগলো
একটা আরশোলা
আমার জুতোর ওপরে
উঠে এলো
শীত আর আলো এড়াতে
আমি আমার হাত
ঢোকালুম
ওর পেছনে
আরশোলা
তোমাসর জন্য সবচেয়ে ভালো যা করতে পারি
তোমাকে তুলনা করতে পারি কাঁসার সঙ্গে
আর ইহুদিদের
তুমি মোটেই স্বাগত নও
আমার জুতো ব্যবহার করার জন্য
পথের ধারে এক খেপ আরাম পেতে
আমার হাতের ছায়ায়
তুমি ফিরে আসতে থাকো
মেঝের ওপরে
আরও কিছু ? -- ভার --
তুমি একটা শুঁড় হারিয়ে ফেলেছো
আমি তোমার শুশ্রুষা করব
শিক্ষক -- তোমার দেহ আমার কাব্বালা…
শিক্ষক -- তোমার দেহ আমার কাব্বালা
রাহামিম --দরদ
তিফেরেতে -- সৌন্দর্য
মিস্টার রচেস্টারের চুরুটের সুবাস
ফুলের মাঝে
ফেটে বেরোচ্ছে
আমি তোমার কন্ঠরোধ করতে চাইছি
সূক্ষ্ম চিন্তা
প্রস্তাব রাখা হয়েছে
ফ্র্যাংকেনস্টাইন থেকে মনোরম সৌষ্ঠব
আমার ভয় থেকে জেগেছে
আর তুমি
সুন্দরভাবে
আমার গলা চেপে ধরো
দেহ আত্মার সামনে ক্ষুধার্ত
আর তারপর নিজের স্মৃতির জন্য ধাক্কা দেবার পর
কেন ভয় নেই উপযুক্তকে আঘাত করার---
বুদ্ধি ছাড়া আমাকে আঘাত করতে পারে না, মজার
আমি পারিনি, পারব না শিল্পের ক্ষেত্রে
কিন্তু গোলাপ বা পচা বাঁধাকপি দিয়ে
ঠিক--শুধু এসো আমি বাদামি কাগজ ভেঙে বেরোই
ঘর
তোমার
ফ্র্যাংকেনস্টাইন
জগত কি থেকে দেবেরো বাবিসতে
দড়ির ওপরে হাঁটে আমি
দেসনুয়েলু ( সে কে ? ) তোমার কন্ঠরোধ করার জন্য
দুহামেল আর তুমি
দে ব্রৌলে সুন্দরভাবে
দেবেরক্স আমার গলা টিপে ধরো
দেক্রক্স
দেবেরক্স
বারাল্ট
সূক্ষ্ম
ফরাসি যুক্তি
গির্জা সন্ন্যাসিনীদের কালো ফুলের শেকল
আমরা সবাই খুনি
কেইথের বুড়ো বাপ ঢেউয়ে লাফিয়ে পড়ল
মেথাড্রিন
সকালের সূক্ষ্ম নাচ
“আমি চাই তুমি আমাকে ডেকে নিয়ে যাও
যখন আমি পড়ে যাবো”
আমি যাইনি আর পড়ে গেলুম
এমনকি মৃত্যুও নয়
আমি অপেক্ষা করলুম
ডুবে যাবার
ঘরের সঙ্গে
বিড়াল গুয়ের মতন
আমাকে নিয়ে যাবে
ডোনাল্ডের প্রথম বিছানা যেখানে এই কল্পনা
লজ্জা ওকে তোমায় পালটে ফেলছে
আর তুমি বলছ কুলফুলের গোটানো কাগজ
আর সবুজ মোটরগাড়ি
লজ্জা দেহকে চিন্তা যোগাচ্ছে
আর খেলা
বিড়ালের দোলনা আর কাল্পনিক
জ্ঞানের জাফরি আর বাখ
প্রণালী
ভয় তৈরি করছে অপরাধবোধ তৈরি করছে লজ্জা
তৈরি করছে কল্পনা আর যুক্তি আর খেলা আর
সৌম্য গরিমাকে ঢাকা
ঘটনার স্মৃতিকে ফাঁকা করে দিচ্ছে
মামুলি সৌম্য দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে গরিমা
ঢেকে দিচ্ছে
দেবদূতদের মাঝে ভেঙচি
হবে না পারব না
খুনির ভয়
ঝোলাভরা কৌশল আর কর্নেলের ছবি নিয়ে বেঁটে লোক
আমার হত্যা আমার জন্য করে দেবে
ঈশ্বর লুকোনো
আর ছবির পোস্টকার্ডের জন্য নয় ।
এমিলি
আমহার্সটের শাদা ডাইনি এমিলি
আমহার্সটের ভীরু শাদা ডাইনি
নিজের শিক্ষদের খুন করল
তার ভালোবাসা দিয়ে
আমি বরং নিজেরটা কবর দেবো
আমার মন
কিংবা ভালো হবে ই নরম ধূসর পায়রা।
ডায়ানে ডি প্রিমা-র কবিতা ।
প্রথম তুষার, কেরহঙ্কসন
অ্যালান-এর জন্য
এটা, তাহলে, পৃথিবী আমাকে যা উপহার দিয়েছে
( তুমি আমাকে দিয়েছ )
নরম তুষার
কোটরে মুঠোমাপের
পুকুরের জলের ওপরে পড়ে আছে
দেখতে আমার দীর্ঘ মোমবাতির সমান
যা জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে
যা সন্ধ্যায় জ্বলবে যখন তুষার
ভরে তুলবে উপত্যকাকে
এই কোটর
কোনো বন্ধুই নেমে যাবে না
কেউই মেক্সিকো থেকে বাদামি আসবে না
ক্যালিফোর্নিয়ার সূর্যভূমি থেকে, মাদক নিয়ে
তারা এখন ছড়ানো, মৃত বা নিঃশব্দ
উন্মাদনায় ফাটানো
আমাদের সমবেত দৃষ্টিচেতনার চিৎকাররত ঔজ্বল্য দিয়ে
আর তোমার এই উপহার--
শাদা নৈঃশব্দ্য ভরে তুলছে আমার জীবনের বর্ণালী-নকশা ।
নববর্ষের বৌদ্ধ গান
আমি তোমাকে সবুজ মখমলে দেখলুম, ঝোলাহাতা পোশাক
আগুনের সামনে বসে আছ, আমাদের বাড়ি
কোনোরকমে করে তোলা হয়েছে আরও সৌষ্ঠবপূর্ণ, আর তুমি বললে
“তোমার চুলে নক্ষত্র রয়েছে”-- এই সত্য আমি
নিজের সঙ্গে নিয়ে এলুম
এই প্যাচপ্যাচে আর নোংরা জায়গায় যাকে আমরা করে তুলব সোনালি
করে তুলব দামি আর কিংবদন্তিপ্রতিম, এটা আমাদের স্বভাব,
আর এটাই সত্য, যে আমরা এখানে এসেছি, আমি তোমাকে বললুম,
অন্য গ্রহ থেকে
যেখানে আমরা ছিলুম দেবীদেবতা, আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছে,
কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে
যে সোনালি মুখোশ আমি আগে দেখেছিলুম, তা খাপ খেয়ে গেলো
তোমার মুখে এতো সুন্দরভাবে, ফেরত দিলে না
ষাঁড়ের মুখ তুমি যোগাড় করেছিলে সেটাও
উত্তরের লোকজনদের মাঝে, যাযাবরের দল, গোবি মরুভূমি
ওই তাঁবুগুলো আমি আর দেখিনি, ওয়াগনগুলোকেও নয়
অত্যন্ত ঝোড়ো উপত্যকায় অত্যন্ত শ্লথ,
এতো ঠাণ্ডা, আকাশে প্রতিটি নক্ষত্রের ভিন্ন-ভিন্ন রঙ ছিল
আকাশ নিজেই একটা জট পাকানো রঙচঙে পর্দা, ঝলমল করছিল
কিন্তু প্রায়, আমি সেই গ্রহ দেখতে পাচ্ছিলুম যেখান থেকে আমরা এসেছি
আমি মনে করতে পারিনি ( তখন ) আমাদের উদ্দেশ্য কি ছিল
কিন্তু মহাকাল নামটা মনে ছিল, ভোরবেলায়
ভোরবেলায় শিবকে প্রত্যক্ষ করলুম, শীতল আলো
মেলে ধরল “মননপ্রসূত” জগতগুলো, তেমনই সহজ,
আমি দেখলুম তাদের প্রচার, বয়ে যাচ্ছে,
কিংবা, সহজভাবে বললে, একটা আয়না আরেকটাকে প্রতিবিম্বিত করছিল।
তারপর আয়নাগুলো ভেঙে ফেললুম, তোমাকে আর দেখতে পেলুম না
কিংবা কোনো উদ্দেশ্য, এই নতুন কালোময়তার দিকে তাকিয়ে রইলুম
মননপ্রসূত জগতগুলো বিদায় হলো, আর মন হয়ে গেল স্তব্ধ :
এক উন্মাদনা, নাকি এক সূত্রপাত ?
ভালোবাসার একটি অনুশীলন
জ্যাকসন অ্যালেনের জন্য
আমার বন্ধু আমার স্কার্ফ নিজের কোমরে বেঁধে রাখে
আমি ওকে দিই চন্দ্রকান্তমণি
ও আমাকে দেয় ঝিনুক আর সমুদ্রগাছালি
ও আসে অনেক দূরের শহর থেকে আর আমি ওর সঙ্গে দেখা করি
আমরা একসঙ্গে বেগুনচারা আর সেলেরিশাক পুঁতবো
ও আমাকে কাপড় বুনে দেয়
অনেকে উপহার এনেছে
আমি সেগুলো ওর আনন্দের জন্য কাজে লাগাই
রেশম আর সবুজ পাহাড়
আর ভোরবেলার রঙের সারস
আমার বন্ধু আলতোভাবে হাঁটে বাতাসে বোনার মতন
ও আমার স্বপ্নগুলোকে আলো দেখায়
ও আমার বিছানার পাশে বেদি তৈরি করে দিয়েছে
আমি ওর চুলের গন্ধে জেগে উঠি আর মনে করতে পারি না
ওর নাম, কিংবা আমার নিজের ।
জানালা
তুমি আমার রুটি
আর চুলের সিঁথে
আওয়াজ
আমার হাড়গুলোর
তুমি প্রায়
সমুদ্র
তুমি পাথর নও
কিংবা লাভায় গড়া শব্দ
আমার মনে হয়
তোমার হাত দুটো নেই
এই ধরণের পাখি পেছন দিকে ওড়ে
আর এই ভালোবাসা
জানালার কাচে ভেঙে যায়
যেখানে কোনো আলো কথা বলে না
এখন সময় নয়
জিভ জড়াবার
( বালি এখানে
কখনও সরে না )
আমার মনে হয়
আগামীকাল
তোমাকে ওর বুড়ো আঙুলে বদলেছে
আর তুমি
ঝকমক করবে
ঝকমক
আর ঝকমক
যা খরচ হয়নি আর মাটির তলায়
খুকি-ও’র গান, যার জন্ম হয়নি
হৃদয়খুকি
যষখন তুমি চিরে বেরোবে
তুমি পাবে
এখানে একজন কবি
তেমন নয় যা কেউ বেছে নেবে।
আমি কথা দেবো না
তুমি কখনও ক্ষুধার্ত থাকবে না
কিংবা তুমি কখনও দুঃখ পাবে না
এই পোড়া
ভাঙাচোরা
ভূ-গোলকে
কিন্তু আমি তোমাকে দেখাতে পারি
খুকি
যথেষ্ট ভালোবাস দিয়ে
তোমার হৃদয়কে যা ভেঙে ফেলবে
চিরকালের জন্য
“মেয়েটিই বাতাস”
মেয়েটিই বাতাস যাকে তুমি ছেড়ে যাবে না
কালো বিড়ালকে তুমি মেরে ফেললে ফাঁকা গ্যারাজে, মেয়েটি
গ্রীষ্মকালের ঝোপজঙ্গলের গন্ধ, এমন একজন যে
উঁকি দেয় ছেলেবেলার খোলা আলমারিতে, মেয়েটি কাশে
পাশের ঘরে, শিস দেয়, তোমার চুলের পাখির বাসায়
সে ডিম পাড়ে
জানালার দিকে মুখ করে
মেয়েটি
তোমার আগুনচিমনির বাঁশি, শ্বেতপাথরের প্রতিমা
ম্যান্টলপিসে খোদাই-করা
যে রাতের বেলায় অপেক্ষা করে।
মেয়েটি প্রাচুর্যদায়িকা
যে রাতে কাঁদে, মৃত্যুর বাঁধন
তুমি ছিঁড়তে পারবে না, কালো সজল চোখ
ঝোপের পেছনে উন্মাদ মেয়েরা ক্যারল গাইছে, মেয়েটি
তোমার বিদায়গুলোর শিস ।
সবুজ মণীতে কালো কণা, আওয়াজ
নিঃশব্দ প্রণাম থেকে, মেয়েটি
পুড়ে যাওয়া দেয়ালপর্দা
তোমার মস্তিষ্কে, আগুনরঙা আলখাল্লা
পালকের তৈরি তোমায় নিয় চলে যায়
পাহাড়ের বাইরে
যখন তুমি আগুন হয়ে দৌড়োও
নীচের দিকে
কালো সমুদ্রে
জোয়ান কায়গা-র কবিতা ( ১৯৩৪ - ২০১৭ )
তামালপায়িস পাহাড়ের স্ফটিক
তামালপায়িসে আছে এক বড়ো স্ফটিক ।
পরিচিত একজন গল্পটা বলেছিলেন।
একজন মিয়োক তার দাদুর ওষুধের ঝুলি
বার্কলের ক্রোয়েবের সংগ্রহশালাকে দিচ্ছিলেন ।
তিনি বললেন এই লোকটা বছরের এক নির্দিষ্ট সময়ে
আমায় তামালপায়িস পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিল ।
আমার বিশ্বাস তা ছিল দক্ষিনায়ণের কাছাকাছি সময়ে,
কেননা তখন প্রবাহের জল নীচের দিকে থাকে ।
ওরা থামল আর পাহাড়ে ওঠার পথে কোনো একটা একটা গুল্ম সংগ্রহ করল ।
বোলিনাসের তীরে শান্ত এলাকায় যাবার পথে একটা বেশ বড়ো পাথর আছে ।
চলে যাও
পাথরটার কাছে । ওষুধের ঝুলি থেকে স্ফটিক বের করো
যার সঙ্গে তামালপায়িসের স্ফটিকের মিল আছে । আর
যদি তোমার হৃদয় সত্য না হয়
যদি তোমার হৃদয় সত্য না হয়
যখন তুমি শান্ত জায়গায় পাথরটায় টোকা দেবে
তার একটা টুকরো উড়ে যাবে
আর তোমার হৃদয়ে টোকা দেবে
আর তোমাকে মেরে ফেলবে ।
আর সেটাই ছিল প্রথম গল্প যা আমি বোলিনাস সম্পর্কে শুনেছিলুম।
তা সে বহুকাল হয়ে গেল
‘বিপ্লবের সময়ে লিখে রাখা’
এই গল্পের স্বরকম্পনের সময়ে তুমি আরও স্বরকম্পন পাবে।
আমি বলতে চাইছি, এক স্বরকম্প, গানের ক্যানটাস,
আমি বলতে চাইছি, আমাদের গড়ে তোলো,
আমি বলতে চাইছি কাগজ,
আমি বলতে চাইছি সেই রাজত্বের কথা যা আসতে চলেছে,
এখানে আবিষ্কারের পথে। তা ওম শ্রীমৈত্রেয়,
তুমি আমার স্বরকম্প ডিঙিও না,
কিন্তু ওদের সঙ্গে সর্বনাম হারিয়ে ফ্যালো,
এটা হলো তোমার, এটা হলো তুমি
এটা হলো স্বয়ং, এটা হলো আমি ।
যন্ত্ররা ধাতব, আমরা তাদের সামলাতে পারি,
তারা আমাদের সেবা করে, আমরা তাদের সামলাই।
এটা আমাকে প্রদত্ত, আর এটা তোমাকে ।
তুমি আমাকে তুমি বলো, আর আমি তোমাকে তুমি বলি ।
কিছু যন্ত্র বেশ সূক্ষ্ম, তারা নিখূঁত,
তারা পিষে ফেলার বড়ো ধাতব জিনিস নয় ।
যুবতীটি যথেষ্ট কবিতা তৈরি করেছে নিজের সঙ্গী হিসাবে।
আমার অনুভূতি । তুমি আমার অনুভূতিদের আটক করেছ ।
আমার দীর্ঘ ছায়ার দল, দীর্ঘ ছায়ারা, দীর্ঘ ছায়ারা।
আমার মিষ্টি মৃদু স্বরের ওঠানামা,
আমার মিষ্টি মৃদু স্বরের ওঠানামা আমার বাহু ।
কেবল কিসের জন্য : যে গান যুবতীটি গেয়েছিল যে গান যুবতীটি গেয়েছিল
সেপ্টেম্বর
ঘাসগুলো ফিকে বাদামি
আর সমুদ্র চলে আসে
দীর্ঘ কাঁপতে থাকা পংক্তি
কাল রাতের পর পায়ের তলায়
যা এখন ভোরবেলায় ঢুলছে
এখানে সেখানে ঘোড়ারা চরে বেড়াচ্ছে
অন্য কারোর মাঠে
অদ্ভুত, তা আমার আকাঙ্খা ছিল না
যা বিদায় জানালো গির্জায় বলার জন্য যাতে আমাকে মুক্তি দেয়া হয়
কিন্তু যেভাবে স্মৃতির ফিরে আসার কথা
অবহেলায় আর বিদেশি খেলা
যখন চরিত্ররা ছিল প্রতিশ্রুতি
তারপর স্বীকরতি । পরিবর্তনের জগতসংসার
বাস্তব কিন্তু বাস্তব নয় বরং বিশ্বাসের ।
এই শিক্ষা যথেষ্ট ? আমি বলতে চাই
নীতিমূলক প্রবাদ তোমাকে ভেতরে নেবার জন্য আর বাইরে নিয়ে যাবার জন্য
ভালোবাসার রহস্যময় বাঁধন থেকে ?
যাহোক আমি নিজে আমি নই
আর টিকে থাকার কোন ক্ষমতার কথা আমি বলি
আমাদের জন্য যা বাড়ির তৈরি নয় ।
এ হলো অন্তরজগতের বিলাস, সোনালি প্রতিমার
যা শ্বাস যেমনভাবে পাহাড়েরা নেয়
আর যা ত্বক নক্ষত্রেরা শ্যামল করে দিয়েছে।
“যখন আমি উদ্বেগে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতুম, সবায়ের”
যখন আমি উদ্বেগে দৃষ্তি নিবদ্ধ করতুম, সবাই
আমার চেয়ে এগিয়ে থাকত, আমি একেবারে তলানিতে
টোটেম থামের,
ছড়ানো এক উবু জানোয়ার ।
কেমন হয় একটা দ্রুত মালিশ হলে এখন, যুবক আমাকে বলল।
আমি মনে করি না তা উচিত হবে, জবাবে বললুম।
ওহ, বলল যুবক, একটু থেমে, আমার অপেক্ষা করা উচিত ছিল
তোমার জিজ্ঞাসা করার আমাকে ।
ঢেউগুলো কাছে আরও কাছে এসে পড়ল ।
যখন আমি সন্দেহের ফাঁদে পড়ি আমি তখন এখানে থাকি না ।
এই জগতে যা ঘরবাড়িতে আবদ্ধ করে ফেলেছে নিজেকে
আর যোগাযোগের জাল, আমি বাইরে উড়ে যায়
তলপেটের তলা থেকে। জীবনের ঝকমকে মুকুট
ঘুরন্ত আলোর, মাথার ওপরে পাক খায়। বিশুদ্ধ
বিস্ময়ে, তপ্ত
বিস্ময়ে । পথগুলো সোনালি হয়ে ওঠে । সমস্তকিছু
মাপে বড়ো হতে থাকে, রঙগুলো উজ্বল হয়, আমরা কিংবদন্তিতে ।
আমরা সহজ বোঝাপড়ায় ।
বেশি কথা বলি না, আমাদের মধ্যে চিন্তা যাতায়াত করে ।
এটা স্মৃতি । আর আমি খুঁজি
ভেসে চলার মিষ্টি দিনগুলো । কুয়াশা সমুদ্রে চলে গেছে, বাতাস ।
ও জংলিঝোপ ছাঁটাই করছে
ও জংলিঝোপ ছাঁটাই করছে
অসুস্হ দুঃখের একাকীত্বের
বাতাসের আলগা টুকরোয় ও ক্লিপ ক্লিপ ক্লিপ চালায়
সবুজ ফুলের ডালগুলো পড়া যায় --- ‘এরা চলে যাচ্ছে
আয়ত্বের বাইরে’ মজাদার আর আদরযোগ্য কি এক তাড়না
আমরা মনে করি অজস্র
আত্মপরিচয় যখন তুমি গান গাও কতো সুন্দরভাবে ভেসে যাওয়া
মেঘগুলো -- তুমি এই জগতে একা নও
নও একলা এক সমান্তরাল পপতিবিম্বের জগত
এক জানালায় আগুন জ্বলতে থাকে
ফ্রেমে মণ্ডলম, লাল আলোকরশ্মির শিখা
বৃষ্টিতে রাখা বাগান-চেয়ারের পেছনে বসে থাকে
বৃষ্টিতে লাল আলখাল্লা-পরা বৌদ্ধলামারা শহরের ঘিঞ্জি এলাকায় রামধনু জাগে
সরল দেশ অভ্যাস করে বজ্রপাতের
বিদ্যুতের, শিলা আর বৃষ্টি আটটা ডগলাস কনীনিকা
রিবনের লক্ষ্যের পরত
অতএব ‘আত্ম’-কে অবিরাম নির্মাণ বেশ মজার
ঝঞ্ঝাটা ও ছাঁটাই করছে লকেটগাছ, অলিভ
যা সকালের স্যাঁতসেতে হাওয়ায় মনে হয় বাস্তব
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন