সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

তরমুজ আর পেঁপেতে ইনজেকশান

আজকে একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এসেছিল, কলিং বেল সারাতে। যুবকটি বিহারের। আমি পাটনায় ছিলুম শুনে বিহারের অনেক গল্প করল।অনেক বিহারি যুবক মুম্বাইতে চলে এসেছিল লালু যাদবের নৈরাজত্বকালে; তারা সব থেকে গেছে। ফল আর শাকসব্জির দোকান যা পথের দুধারে দেখতে পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই ওদের।
তরমুজ আর পেঁপে সম্পর্কে ও একটা ভয়াবহ কারবারের কথা বলল। তরমুজের ভেতরটা যাতে লাল দেখায় তাই ওরা তরমুজে লাল রঙ গুলে ইনজেকশান দেয়!
একইভাবে, পেঁপেতে কমলা রঙ গুলে ইনজেকশান দেয়।
খদ্দের চাইলে তক্ষুনি কেটে দেখিয়ে দিতে পারে ভেতরের পাকা রঙ। ক্রেতারা বেজায় খুশি হয় !!!

রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ওয়াইনের স্বাদ

ইউরোপে গিয়ে কত রকমের ওয়াইন খেলুম। এদেশের ওয়াইনও খেয়েছি এবং খাচ্ছি। কিন্তু ওয়াইন খাবার যে বৈশিষ্ট্য তা রপ্ত করতে পারলুম না।স্বাদের তারতম্য টের পাই না। মনে হয়, যখন তরুণ ছিলুম, তখন এত দিশি মদ খেয়েছি যে ওয়াইন খাবার জিভ আমার নেই। আজকে এই যে রোজনামচার এই এন্ট্রিটা লিখছি, ওয়াইন খেয়ে।

শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

বাংলা উইকিপেডিয়ার সম্পাদকরা কি সবাই আমেরিকায় থাকেন ?

ইংরেজি উইকিপেডিয়ার যাঁরা সম্পাদনা করেন তাঁরা প্রতিটি পৃষ্ঠায় তাঁদের অবদান রেখে যান আরো বেশি তথ্য যোগ করে; প্রতিনিয়ত তথ্য ও ফোটো যোগ করে পৃষ্ঠাগুলোকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেন। বাংলা উইকিপেডিয়ের পৃষ্ঠা কারা সম্পাদনা করেন জানি না। তাঁদের সম্পাদনার নমুনা দেখে মনে হয় তাঁরাও আমেরিকা-ইউরোপে থাকেন। তাঁরা সদা-সর্বদা চেষ্টা করেন কী করে তথ্য বাদ দেবেন; নিজেরা তাঁরা কোনো অবদান রাখেন না।
ফালগুনী রায় তাঁর নাম ফাল্গুনী লিখতেন না; ফালগুনী লিখতেন। উইকিপেডিয়ার সম্পাদকগণ তাঁকে ফাল্গুনী করে দিয়েছেন, এবং সেই সঙ্গে ফালগুনীর পৃষ্ঠা থেকে বহু তথ্য বাদ দিয়ে দিয়েছেন ! ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের কয়েকজন কবি তাঁদের ব্লগে ফালগুনীর রচনা অন্তর্ভুক্ত করে চলেছেন বহুকাল যাবৎ। উইকিপেডিয়ার সম্পাদকরা বোধহয় সেসব দেখেন না। তাঁরা যে ঠিক কী চাইছেন তা ঠাহর করা কঠিন।

বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

নেপালে ষাটের দশকে, হাংরি আন্দোলনের সময়ে

নেপালে আমরা গিয়েছিলুম নেপালি সাহিত্য একাডেমির ডায়রেক্টর বাসি শশীর আমন্ত্রণে। আমি, সুবিমল বসাক, করুণানিধান মুখোপাধ্যায়, অনিল করঞ্জাই, কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় আর দাদা সমীর রায়চৌধুরী। সাহিত্য-চর্চার পরিবর্তে আমরা নেপালের স্হানীয় মাদক আর মদ খাওয়ায় সময় কাটাতাম বেশি। আমার সঙ্গে পারিজাত নামে একজন তরুণী কবির ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। সুবিমলের সঙ্গে এক নেপালি চিত্রাভিনেত্রীর, যার ব্লাউজে সাইকেডেলিক রঙ করে দিত করুণা আর অনিল।আমরা নানা রকমের মাদক ট্রাই করেছিলুম, কেননা নেপালে তখন আমেরিকা, ইউরোপ , জাপান দক্ষিণ কোরিয়া থেকে হিপিরা এসে জুটেছিল।সে এক অবিস্মরণীয় মাদকতা আর যৌনতার দিন ছিল।কোনো প্রকার নিষেধ ছিল না।করুণার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এক কৃষ্ণাঙ্গী তরুণীর যিনি ছবি আঁকতেন। ওদের ছবির একটা প্রদর্শনীও হয়েছিল। শেষদিনে, যে ছবিগুলো বিক্রি হয়নি সেগুলো পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা হয়েছিল।অনিল, করুণা আর কাঞ্চন পরে নকশাল আন্দোলনের দিকে ঝোঁকে। কেউ আর বেঁচে আছে কিনা জানি না। অনিল মারা যাবার পর ওর লিভ-টুগেদার বান্ধবী মার্গারেট রেনল্ডস 'হাওয়া৪৯' এর একটা অনিল করঞ্জাই সংখ্যা প্রকাশে সাহায্য করেছিলেন।সেই সব দিনগুলোর কথা লিখে রাখলে ভালো হত। আমাদের কার্যকলাপ নিয়ে নেপালের সংবাদপত্রে ফলাও করে খবর বেরোত, ছবি-টবি দিয়ে। এখানে সেরকম একটা ছবি যুক্ত করলুম।

সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

কবি, জীবনানন্দ গবেষক এবং শল্যচিকিৎসক ভূমেন্দ্র গুহ

২০০০ সালে আমার দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, মুম্বাইতে। এখানে নানাবতি হাসপাতালে বলল দ্রুত বাইপাস করাতে হবে; তিন লাখ টাকা আনো।অত টাকা ছিলই না হাতের কাছে তখন, মুম্বাইতে। তাছাড়া কলকাতায় খরচ কম মুকুন্দপুরের হাসপাতালে। কলকাতায় চলে গেলুম, নানাবতি থেকে ছাড়ান পেয়ে।
কলকাতায় প্রভাত চৌধুরী বলল, একবার ভূমেন্দ্র গুহকে কনসাল্ট করে নিন। ভূমেন্দ্র গুহকে আমি কবি ও জীবনানন্দ গবেষক বলেই জানতুম।উনি যে কার্ডিওলজিস্ট তা জানতুম না।
প্রভাত ভুমেন্দ্র গুহকে আমাদের বাড়িতে নি্য়ে এলো।উনি আমায় আর রিপোর্টগুলো দেখে বললেন, শল্যচিকিৎসার মোটেই প্রয়োজন নেই, ওষুধ খেতে থাকুন আর খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন।ওনার ওষুধে সত্যিই বেশ উপকার পেলুম; তা মুকুন্দপুরে গিয়ে নানা টেস্ট করিয়ে এবং আমার যিনি অ্যানজিওপ্লাস্টি করেছিলেন ১৯৯৬ সালে তাঁকে দেখিয়ে। তিনিও বললেন যে ভুমেনদার ওষুধগুলো চালিয়ে যান। ভুমেনদা প্রতি মাসে এসে দেখে যেতেন, ফিস নিতেন না; নিজে বাড়ি বয়ে আমাকে ওয়েইং মেশিন আর ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন কিনে দিয়েছিলেন।
তারপর কি হল জানি না। উনি আসছেন না দেখে, ফোন তুলছেন না দেখে, গেলাম ওনার ফ্ল্যাটে। উনি দেখতেই চাইলেন না। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই অবাক।ফিরে এলুম।
দিন কয়েক পরে খবরের কাগজে দেখলুম ভুমেনদা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন, বিনয় মজুমদারের সঙ্গে একত্রে।বস্তুত আমার সঙ্গ যে কাউকে সাহিত্যপুরস্কার পেতেও বাধা হয়ে উঠতে পারে তা জানতুম না।
কিছুদিন পরে 'দেশ' পত্রিকায় ভুমেনদার পুরস্কারপ্রাপ্ত বইটির দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।আমার অনুরাগীরা বলল, দুই আর দুই যোগ করে নিন মলয়দা।
ভূমেন্দ্র গুহরায় খুবই ভালো শল্যচিকিৎসক জানতুম। মানুষ হিসাবেও জানতুম উদার ও সহিষ্ণু। কিন্তু সাহিত্যের গোলোকধাঁধায় ঢুকলে যে এরকম হতে পারে তা আমার ধারনা ছিল না।
২০০৩ সালে প্রকাশিত আমার কাব্যগ্রন্হ 'কৌণপের লুচিমাংস' ভুমেনদাকে উৎসর্গ করেছিলুম। উনি প্রাপ্তি জানাননি।আমি দ্বিতীয়বার পাঠিয়েছিলুম রেজিস্ট্রি করে; প্রাপ্তি জানাননি !

রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

শিশুদের সঙ্গে খেলা

সবায়ের করে কিনা জানি না, আমার তো বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে ভালো লাগে। নাতনিরা বিদেশে থাকে। ওদের সঙ্গে স্কাইপে খেলি। ওদেরও এই স্কাইপ খেলা ভালো লাগে, কেননা খেলার জন্যে বুড়ো-বুড়ি নেই ওদের কাছে-পিঠে।ওদের সঙ্গে অবশ্য ইংরেজিতে কথা বলতে হয়, যে ইংরেজি, ওরা জানে, ইনডিয়ান, তাই আমাদের সঙ্গে ইনডিয়ান ইংরেজিতে কথা বলে ওরা।
আর খেলি আমার ফ্ল্যাটের সামনে পারিখদের দুটি বাচ্চার সঙ্গে। তাদের নাম কণক আর নীহারিকা; ছোটোটা এখনো কথা বলতে পারে না ভালো ভাবে। তবে ওরা এত দুরন্ত যে আধঘন্টা খেললেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। সহজে যেতে চায় না বাচ্চা দুটো।ওদের জন্যে আমরা সময় বরাদ্দ করে রেখেছি। না খেললে কেন যেন ভালো লাগে না। দিনটাকে আঁতেল-আঁতেল মনে হয়।

শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ফেসবুক-এ বন্ধুত্বভীতি

ফেসবুকে প্রায় প্রতিদিন আমার কাছে বন্ধুত্বের প্রস্তাব আসে। কাউকেই ফেরত দেয়া সম্ভব নয়। কেনই বা দেব ? আমি বাঙালি ও অবাঙালি বন্ধুদের জন্য পৃথক পাতা খুলেছি সেকারণে।অবাঙালিদের মাঝে যারা ইংরেজিভাষী নন তাঁদের জন্য আরেকটা পাতা খুলেছি।
আমি নিজেও বন্ধুত্বের আহ্বান পাঠাই, যখন নামচেনা কারোর নাম তুলে ধরে ফেসবুকের পৃষ্ঠা। খ্যাতনামা কয়েকজনকে দেখলুম বেশ ভয় পান আমার বন্ধুত্বের আহ্বানকেও।সম্প্রতি যেমন ঘটল জয় গোস্বামী, সুচিত্রা ভট্টাচার্য আর মন্দাক্রান্তা সেনের ক্ষেত্রে। আমার আহ্বান দেখেই তাঁরা তড়িঘড়ি আহ্বান নাকচ করলেন।

শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

রান্নাঘর

শৈশব থেকে এখন পর্যন্ত কতরকমের রান্নাঘরের অভিজ্ঞতা হল। পাটনায় ইমলিতলা পাড়ায়, কুড়ি জনের একান্নবর্তী পরিবারে, রান্নাঘর ছিল বেশ বড়; ১৪ বাই ১৪ হবে। মা, জেঠিমা আর কাকিমারা একসঙ্গে বসতে পারতেন। স্কুলে যাবার আগে আমরা ওখানে বসেই খেয়ে নিতুম।

তারপর রান্নাঘর দরিয়াপুরের বাড়িতে। এই বাড়িটা বাবা করিয়েছিলেন দোকান এবং ফোটো-স্টুডিওর কথা মাথায় রেখে; তাই রান্নাঘরের প্ল্যান ছিল না। দোতলায় যে ঘরটাকে ডার্করুম করার কথা ছিল, সেটিই রান্নাঘর হয়ে উঠল। এই বাড়িতে বাবা উঠে গিয়েছিলেন একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে যাবার কারণে। রান্নাঘরটি খুবই ছোট ছিল; ৩ বাই ৪, যেখানে কেবল উনোন ধরানো হত, গ্যাস আসার আগে। মা রান্না করতেন তার সংলগ্ন ঘরটায়, যে ঘরে আমাদের প্রথম ডাইনিং টেবিল আর ফ্রিজ ছিল। বাবা কিন্তু মাটিতে বসেই খেতেন, আসন পেতে।

এর পারের রান্নাঘর লখনউতে। লখনউতে বাংলো-বাড়ি পেয়েছিলুম বটে, কিন্তু রান্নাঘরটা তেমন বড় ছিল না; তবে আধুনিক ছিল, অর্থাৎ দাঁড়িয়ে রান্না করার জন্য প্ল্যাটফর্ম, গ্যাস রাখার জায়গা, বাসন ধোবার সিংক ইত্যাদি। রান্নাঘরের ভেতরই ভাঁড়ার, যা ইমলিতলা আর দরিয়েপুরে ছিল না।লাগোয়া ড্রইং-ডাইনিং।

পরবর্তী রান্নাঘর মুম্বাইতে, ঘাটকোপারে, একরুমের ফ্ল্যাটে, যাকে অফিস নাম দিয়েছিল ট্র্যানজিট ফ্ল্যাট।ঘাটকোপারে রান্নাঘরটা অন্যঘরটার সমান ছিল।সেখানেই ডাইনিং টেবল ; ইচ্ছা হলে শোয়া যেত, শুতুমও, কেননা অন্য ঘরটায় লখনউ থেকা আনা বহু জিনিসে ঠাসা ছিল।

তার পরের রান্নাঘর মুম্বাইয়ের বোরিভিলিতে, যেখানে অফিস দিয়েছিল লিজড ফ্ল্যাট।মাঝারি মাপের রান্নাঘর, তাতে অধুনিক যাবতীয় মুম্বাইয়া ব্যাপার। দুদিকে জানালা; লখনউ থেকে এসে প্রথম কোকিল ডাকতে শুনেছিলুম।এখন অবশ্য মুম্বাইতে কাক আর পায়রা ছাড়া অন্য পাখি নজরে পড়ে না।ফ্ল্যাটটা ছিল দু'তলায়, তিনদিকে ব্যালকনি।অফিস আর ছেলে-মেয়ের স্কুল কলেজ থেকে দূরে ছিল বলে বোরিভিলি ছাড়তে হল।

বোরিভিলির পর সান্টাক্রুজ, অফিসের কোয়ার্টার, সিনিয়র অফিসারদের জন্যে। সুতরাং রান্নাঘরের মাপও তদনুযায়ী।আমরা চারজনেই দিনের বেলায় বাড়ির বাইরে থাকার কারণে রান্না করা ছাড়া জীবনের দ্রুততায় এই রান্নাঘরের আনন্দ তেমন নেয়া হয়ে ওঠেনি। ছুটির দিনে রেস্তরাঁতে খেতে বেরোনোর রুটিন গড়ে ওঠার ফলে রান্নাঘরের উৎসবমুখরতা কমে গিয়েছিল। গাড়িও কিনে ফেলেছিলুম সান্টাক্রুজে থাকতে ।

সান্টাক্রুজের পর কলকাতা, নাকতলার ফ্ল্যাটে। এটাই ছিল সবচেয়ে ছোট রান্নাঘর। রান্নাঘরকে কেন যে গুরুত্ব দেহা হত না জানি না। অথচ আমার মামার বাড়িতে রান্নাঘরটাই ছিল সবচেয়ে বড়, হল-ঘর বলা যায়।নাকতলার রান্নাঘরে কাজের মেয়ে ঢুকলে আর কারোর দাঁড়ানোর জায়গা থাকত না।ফ্ল্যাটটা কেনার পর ওইটুকু জায়গায় যতটা পারা যায় কাজ চালাবার মতন সুবিধা তৈরি করে নেয়া হয়েছিল, তা সত্ত্বেও রান্নাঘরের কারণে যেনি প্ল্যান এঁকেছিলেন তাঁকে আমার স্ত্রী কখনও ক্ষমা করতে পারেনি।

নাকতলা থেকে শেষ ঠাঁই কান্ডিভিলির, মুম্বাইতে, রান্নাঘর।এখন মুম্বাইতে প্রতিটি ফ্ল্যাটে রান্নাঘরকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় বিল্ডাররা। কান্ডিভিলির রান্নাঘরও বেশ বড়, যদিও এটা এক বেডরুমের ফ্ল্যাট।এখন যখন খাওয়া-দাওয়া ডাক্তারের পরামর্শে চলে, তখন, এই শেষ বয়সে রান্নাঘর পেলুম মনের মতন।

আমি নিজেও রান্না করি। তাই রান্নাঘরটা মনের মতন না হলে সেই ফ্ল্যাট একেবারে ফালতু মনে হয়। রান্নাঘরটাই তো একটা ফ্ল্যাটের বা বাড়ির প্রাণকেন্দ্র।

মুম্বাই বুলি

মুম্বাই শহরের বুলিগুলো নিচের স্তর থেকে ওপরে ওঠে; নিচের মানে গরিব তো বটেই, অন্ধকার জগতেরও।এক কোটি টাকা হল 'খোখা', এক লক্ষ টাকা হল 'পেটি' । আমার পাড়ায় দুই বেডরুম ফ্ল্যাটের দাম এখন এক থেকে দেড় 'খোখা' । লোকেদের কাছে এত টাকা কোথা থেকে আসে ? ফ্ল্যাটগুলো তো দিব্যি বিক্রিও হয়ে যায় দেখি।

মুম্বাইতে মদ কেনা

মুম্বাইতে মদের দোকানে মেয়েরাও মদ কিনতে ঢোকে; কলকাতায় কিন্তু কখনও কোনো মহিলাকে দেখিনি মদ কিনতে।মুম্বাইয়ের বুলি অনুযায়ী মদের এক লিটার বোতল হল 'খাম্বা'। আজকে আমার পাড়ায় মদের দোকানটায় একজন সুবেশা তরুণীকে দেখলুম, সবুজ টপ আর ফেডেড জিনসে। অর্ডার দিলেন; এক খাম্বা ব্লেনডার্স প্রাইড।

বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ফাদার হিলম্যান

সিস্টার আইরিনকে মনে পড়ায়, ফাদার হিলম্যানকেও মনে পড়ে গেল। সেন্ট জোসেফ'স কনভেন্টে প্রতি বৃহস্পতিবার চার্চে বাইবেল ক্লাস হত; ক্লাস নিতেন হাদার হিলম্যান। জার্মান ছিলেন, জার্মান অথচ ক্যাথলিক। ওনার কাছ থেকেই নিউ টেস্টামেন্টের গল্পগুলো জেনেছিলুম।চার্চে হাতজোড় করার সময় বুড়ো আঙুলের ওপর বুড়ো আঙুল রেখে ক্রুশচিহ্ণ তৈরি করতে হত।হল্যাণ্ডে গিয়ে দেখলুম লোকে গির্জায় বিশেষ যায় না, রবিবারেও। ধর্ম থেকে ব্যক্তি-মানুষ ইউরোপে মুক্ত হয়ে চলেছে কী ?
ফাদার হিলম্যান আর সিস্টার আইরিন কোথায় গেলেন শেষাবধি জানি না, কেননা দেশ স্বাধীন হল আর আমি ব্রাহ্ম স্কুলে ভর্তি হলুম, ক্লাস ফোরে।

প্রথম দিন

এবার ব্লগের আকারে একটা রোজনামচা লিখব মনস্হ করেছি। এর আগে দু'বার ডাইরি লেখার তোড়জোড় করেছিলুম; দু'বারই গোলমাল হয়ে গিয়েছিল। প্রথমবার ডাইরিটা হাংরি আন্দোলনের সময়ে পুলিস বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল; তা আর লালবাজারের মালখানা থেকে নেওয়া হয়নি। নেবার অনেক ফ্যাচাঙ।খরচও। দ্বিতীয়বার লখনউ থাকতে লেখা আরম্ভ করি, কিন্তু তা আমার জীবনের ঘটনাবলী নিয়ে এমন বিস্ফোরক আকার নিয়ে ফেলেছিল যে পুড়িয়ে নষ্ট করে দিতে হয়েছিল। এখন প্রতি বছর নতুন ডাইরি পাই, কোনো কাজে লাগে না, কেননা আঙুলে আরথারাইটিস। ইনটারনেটে এক আঙুলে কাজ চালাই; তাই যতদিন এই এক আঙুলে কাজ চলছে ততদিন একটা রোজনামচা লেখা যেতে পারে।
রোজনামচা লেখার আইডিয়াটা এলো ফেসবুক থেকে। ফেসবুকে অনেকে অনেক কিছু লিখছেন আমায়, আমার মতামত চাইছেন, চ্যাটিং করছেন। বেশ লাগছে। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে লেখার ইচ্ছা হল। তাছাড়া মগজে নানা বিদকুটে ভাবনা চলতে থাকে, সেগুলোও লেখা যাবে। রাতে যখন ঘুম আসে না তখন কতরকম চিন্তা আর স্মৃতি চলে আসে, সেগুলো ঢোকানো যাবে।
ইনটারনেট এমন জায়গা যে যার ইচ্ছা হবে, যে খুঁজে পাবে, সেই দেখবে। ইশারায় লেখার প্রয়োজন হবে না বা লুকোবার দরকার হবে না।
অবশ্য এখন, এই মুহূর্তে, যেহেতু সিঙ্গল মল্ট খাচ্ছি, তাই এই পর্যন্ত লিখলুম। একটু পরে নেশাটা শরীরে ছড়ালে, যদি মনে কিছু আসে তখন লেখা আরম্ভ করব।তবে নেশার মৌতাতে যাঁর কথা মনে পড়ছে, তিনি আমার প্রথম শিক্ষিকা সিস্টার আইরিন, সেন্ট জোসেফ কনভেন্টের ক্লাস টিচার।
যাঁরা আমায় পড়বেন তাঁরা কিঞ্চিদধিক মন্তব্য ফেলে যাবেন বলে মনে হয়।ইনটারঅ্যাকটিভ রোজনামচা হয়ে উঠবে তাহলে!