শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

আমার সাক্ষাৎকার

বহুদিন পর ইংরেজিতে আমার একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হল। লিংকটা আমার ছেলে পাঠিয়েছে আজকে সকালেই। আজকের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১১

আবার কবিতা লেখা শুরু করেছি

২০০৪ এর পর কবিতা লেখা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে মুম্বাই আসার পর আবার কবিতা লিখতে ইচ্ছে হল। ২০১১ সালে এসে কবিতা লিখছি। তবে কবিতা লিখে রাখি আমার কমপিউটারে। কেউ চাইলে ই-মেল করে পাঠাই। বেশ ভাল লাগছে কবিতায় ফিরে এসে।

মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১১

জগজিৎ সিংহের মৃত্যু

জগজিৎ সিংহের মৃত্যুতে মনে হয় বেশ কিছুকালের জন্য গজল গান বন্ধ হয়ে গেল, কেননা আর কাউকে শুনে তো মগজের মধ্যে হন্ট করার বোধ জাগে না।

শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১১

শ্রীজিৎ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'বাইশে শ্রাবণ' ফিল্ম

আমার ফেসবুক পৃষ্ঠায় অনেকে এই ফিল্মটি নিয়ে নানা কটু মন্তব্য করছেন। ফিল্মটিতে নাকি গৌতম ঘোষ একজন হাংরি আন্দোলনের কবির অভিনয় করেছেন যিনি মাতাল ও খিস্তি করে বেড়ান এবং শেষমেশ বইমেলায় আগুন ধরিয়ে দ্যান।

আমার সঙ্গে গৌতম ঘোষের দেখা হয়েছিল, শান্তিনিকেতনে গ্রামীণ উন্নয়ন নিয়ে বক্তৃতা দিতে যাচ্ছিলুম, তা সে বছর বিশেক আগে। উনি আমার বইপত্র চেয়ে পাঠিয়েছিলেন; গল্পলেখক ও প্রকাশক মুর্শিদ এ এম সেগুলো দিয়ে এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে।

হাংরি আন্দোলনে বহু কবি ছিলেন। আমার বিরুদ্ধে যখন ব্যাংকশাল কোর্টে মামলা হয়েছিল তখন শৈলেশ্বর ঘোষ, সুভাষ ঘোষ, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন যে-কারণে আমার এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছিল।

গৌতম ঘোষ কোন কবির চরিত্র বেছে নিয়েছেন জানি না। পরিচালক শ্রীজিৎ মুখোপাধ্যায় হয়তো অনেক কবির চরিত্র মিশিয়ে একটা চরিত্র গড়েছেন--- হয়তো এই কাল্পনিক চরিত্রটির মাধ্যমে তিনি হাংরি আন্দোলনের সমালোচনা করেছেন। এমনও হতে পারে যে কবিদের সম্পর্কে ফিল্মলাইনের মানুষের ঈর্ষাকে রূপ দেবার জন্য তিনি গৌতম ঘোষের দ্বারা কলকাতা বইমেলায় আগুন ধরিয়েছেন।

কবি-লেখকদের মতনই, ফিল্মকরিয়েদেরও স্বাধীনতা থাকা উচিত। শ্রীজিৎ তা-ই করেছেন।

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১১

প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার [STARK ELECTRIC JESUS] ইংরেজি অনুবাদের প্রথম সংস্করণ

প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ ভূমিকাসহ প্রকাশ করেছিলেন অধ্যাপক হাওয়ার্ড ম্যাককর্ড, ট্রাইবাল প্রেস থেকে। জনৈক শুভার্থী জানিয়েছেন যে অ্যামাজন ডট কমে বইটি পাওয়া যাচ্ছেদুশো পঞ্চাশ ডলারে!
গুগল খুঁজে দেখলুম সত্যিই তাই। ২৫০ ডলার!! ভারতীয় টাকায় কত হয় ? ভেবে চিন্তা গুলিয়ে গেল।

শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১১

মিশরের কবি তামিম-আল-বারঘুতি

মিশরের তরুণ কবি তামিম-আল-বারঘুতির কবিতা অনুবাদ করলুম, এবাদুল হকের 'আবার এসেছি ফিরে' পত্রিকার জন্য। তামিমের মা ছিলেন মিশরের ঔপন্যাসিক আর বাবা ছিলেন প্যালেসটাইনের কবি। হোসনি মুবারক ওনাদের দুজনকেই দেশ থেকে নির্বাসন করেছিলেন সরকার-বিরোধী লেখালিখির কারণে। তামিমও তাঁর কবিতায় আরবদেশগুলোর একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ভাব প্রকাশ করছিলেন। নতিনি খ্যাতি পান তাহরির স্কোয়্যারে তাঁর কবিতা পঠিত হবার পর। তারপর থেকে বিভিন্ন আরবদেশে, যেখানে জনগণ বিদ্রোহ করেছেন, তামিমের কবিতা পড়িত হচ্ছে। তামিম নিজেও পড়ছেন সেই জনগণের মাঝে।

বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১১

প্রেমের গল্প

গল্প বা উপন্যাসে প্রেমিক-প্রেমিকার বয়স অনুমান করে নেয়া হয়---তারা মোটামুটি কুড়ি থেকে চল্লিশের মধ্যে হবে।সংবাদপত্রে যে খবরগুলো পড়ি, তা থেকে মনে হচ্ছে যে বয়ঃসন্ধির বয়স কমে আট-নয় বছর হয়ে গেছে মূলত খাদ্যবস্তুর রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়।অর্থাৎ যৌনতার উন্মেষ ঘটছে আট-নয় বছর বয়সেই এবং তারা যৌনকর্মে লিপ্ত হচ্ছে।অধিকাংশ ফাস্ট ফুডে এবং চাষবাসে যা রাসায়নিক প্রয়োগ করা হচ্ছে তাতে হরমোনে পরিবর্তন ঘটছে ওই কম বয়সেই। পারস্পরিক সম্পর্ক কেবল 'টাচ অ্যান্ড ফিল'-এ সীমাবদ্ধ থাকছেনা।মুম্বাইয়ের ওষুধের দোকানগুলোয় 'নাইট আফটার পিল' কিনছে আট-নয় বছর বয়সের মেয়েরা---যারা এখনও টিনএজার হয়নি---যারা 'প্রিটিন'।
গল্প-কাহিনীতে এই বয়সী ছেলে-মেয়েদের এখনও প্রেমিক-প্রেমিকার চরিত্র না দেয়ার কারণ, আমার মনে হয় যে লেখকরা সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন না।
যাঁরা বয়স্ক, অর্থাৎ ষাট পেরিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। বহু বিবাহবিচ্ছেদ ঘটছে মুম্বাইতে, এইজন্য যে সিনিয়র সিটিজেনরা আবার প্রেমে পড়ছেন বা যৌন সংসর্গে লিপ্ত হচ্ছেন। যাঁরা ধনী, এবং মুম্বাইতে এঁদের সংখ্যা কম নয়, সেই ধনী বয়স্কদের জন্য গজিয়ে উঠেছে বহু সংস্হা, যেগুলো বলিউডের ছোট অভিনেত্রী বা মডেল সরবরাহ করে। বয়স্ক মহিলারা কম বয়সী সঙ্গীর দিকে ঝুঁকছেন এবং এই কম বয়সী সঙ্গীদের বলা হচ্ছে 'টয়বয়'।ভারতের অন্যান্য শহরেও কি এই ধরণের পরিবর্তন ঘটছে না ?

বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১১

দুরুক্ষী গলি

সুবিমল বসাক ওনার সাম্প্রতিক উপন্যাসের একটা কপি পাঠিয়েছেন। নাম দুরুক্ষী গলি।বইটা স্বর্ণকারদের একটি পরিবারের কাহিনি। স্বর্ণকারদের জীবন সম্পর্কে আমার কিছুই জানা ছিল না । কত রকমের সোনার গয়না ছিল আর তাদের বিস্ময়কর নাম, সবই হারিয়ে গেছে। সুবিমল বসাকের দৌলতে কিছু নাম টিকে গেল।
বইটা আমার যা মনে হল পড়ে, সুবিমল বসাকের বাবার জীবন ও দোকান নিয়ে লেখা। দুরুক্ষী গলিতে ওদের সোনার দোকান ছিল। গোল্ড কনট্রোল অর্ডার পাশ হবার পর ওনার ব্যবসা ভয়ঙ্কর বিপদে পড়ে। দেনার দায়ে উনি আত্মহত্যা করেন। বাড়ির বড় ছেলে হওয়ায় সুবিমলকেই সংসার সামলাতে হয়েছিল।

মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১১

ঈদ ও খেজুর

১৫০ থেকে ৬০০ টাকা কিলো খেজুর এসেছে মুম্বাইয়ের বাজারে, ঈদ উপলক্ষে। এত ধরণের খেজুর হয় জানতুম না। মাহিমের ফুটপাথ ভরে গেছে ঈদের বাজারে। অন্যান্য সময়ে এত রকমের মিষ্টি আর মাংস পাওয়া যায় না।খাবার লোভে হিন্দু ক্রেতাই বেশি।

শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১১

অরুণেশ ঘোষ-এর মৃত্যু

কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার অরুণেশ ঘোষ মারা গেলেন। পুকুরে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে।সাঁতার জানতেন। তাহলে কি হার্ট অ্যাটাক হতেই, ডাঙার দিকে না এগিয়ে আরও গভীর জলের দিকে এগোলেন ? আত্মহত্যা ? উইকিপেডিয়ায় দেখলুম জলে ডুবে মৃত কবিদের সংখ্যা প্রচুর! অরুণেশ ঠিক কোন কবির কথা মাথায় রেখে জলের গভীরে নেমে গেলেন ?

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১১

নাতনিদের জন্য টয়লেট পেপার

নাতনিরা এসেছিল আমার মেয়ে-জামাইয়ের সঙ্গে।
বিদেশ থাকার দরুণ টয়লেট-পেপার ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে ওরা। আমাদের টয়লেটে প্লামবার ডেকে টয়লেট পেপার হোলডার লাগাতে হল। নাতনিরা ফিরে গেছে মা-বাবার সঙ্গে। টয়লেট-পেপার হোলডার আর টয়লেট রোল রয়ে গেছে। ওরা আবার কত বছর পর আসবে জানি না। ওগুলো ওভাবেই থাকবে কিছুকাল!

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১১

মুম্বাইয়ের বোমা বিস্ফোরণ

কাল তিন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে কোনও সংগঠন । অনেকে মারা গেছেন। জখম হয়েছেন তার চেয়েও বেশি মানুষ। যারা এই কাজগুলো করছে তাদের উদ্দেশ্য যে ঠিক কী বুঝতে পারি না।
মুম্বাইয়ের লোকে বলছেন যে এই ধরণের বিস্ফোরণ চলতেই থাকবে, কেননা ভারতবর্ষ 'কাফের' অধ্যুষিত দেশ।

বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১১

বৃষ্টিতে ভারতীয় শহর

বৃষ্টিতে ভারতীয় শহরগুলো জঘন্য হয়ে ওঠে। ইউরোপের শহরগুলো এরকম নোংরা হয় না তো ! বৃষ্টির আনন্দটাই মাটি হয়ে যায় শহরে থাকলে।রবীন্দ্রনাথের সময়ে কীরকম ছিল কলকাতা শহর?

রবিবার, ১৯ জুন, ২০১১

সেকুলার কুকুর

ইজরায়েলে একটি কুকুর ( হাউন্ড ) হঠাৎ আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েছিল। ইহুদি ধর্মগুরুরা আদেশ দিয়েছেন যে কুকুরটাকে ঢিল ছুঁড়ে মেরে ফেলা হোক। তাঁরা মনে করেন যে কুকুরটা আসলে একজন উকিলের আত্মা ; উকিল ভদ্রলোক ছিলেন একজন সেকুলার মানুষ।ইহুদিরা নাকি কুকুরদের ভালো চোখে দেখে না।

শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১১

মহিলাদের গাড়ি চালাবার স্বাধীনতা

সউদি আরবে মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ! প্রতিবাদ হিসাবে বেশ কয়েকজন মহিলা গাড়ি চালিয়েছেন রাজপথে।এশিয়া-আফরিকার ঘিঞ্জি অলিগলিতে যখন মহিলারা দিব্বি গাড়ি চালাচ্ছেন তখন সউদি আরবের প্রশস্ত রাজপথে মহিলারা কেন গাড়ি চালাতে পারবেন না, বুঝতে পারলুম না। সারা আরব জুড়ে মানুষ চাইছে ফুরফুরে স্বাধীনতা । আশা করা যায় সউদি আরবে মহিলারা গাড়ি চালাবার সরকারি অনুমতি পাবেন।

শনিবার, ১১ জুন, ২০১১

ইনটারনেটে স্বাধীনতা

ইনটারনেটে স্বাধীনতার ব্যাপারে এসটোনিয়া ১ম, ভারতবর্ষ ১৪তম, যখন কিনা নাইজেরিয়া ১৩তম। কিউবায় ইনটারনেটে স্বাধীনতা আছে, কিন্তু সার্ভারকে এমন স্লো করে রাখা যে গুগল সার্চ বোতাম টিপলে এক ঘন্টায় খোলে। ব্লগ পোস্ট করতে চাইলে সকালেরটা বিকালে পোস্ট হয়। আরব দেশগুলোয়  অবশ্য কোনও স্বাধীনতা নেই; একেবারেই নেই ইরানে।

ফেসবুকে ইংরেজিতে লেখবার কেরামতি

অনেকেই দেখি ফেসবুকে ইংরেজিতে নিজেদের মতামত প্রকাশ করার চেষ্টা করেন, এবং বেশ ভুল ইংরেজিতে। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবাংলায় একটা গোটা প্রজন্ম ইংরেজি-ইল্লিটারেট, সরকারি বাহাদুরির কারণে। তবুও দেখা যায় ইংরেজির ব্যবহার। তাঁদের বললেও শোনেন না । তাঁরা এত অজ্ঞ যে ভুল লিখছেন তাও টের পান না।

বুধবার, ৮ জুন, ২০১১

বাবা রামদেব

বাবা রামদেবকে রাজনীতিক মেটেরিয়াল বলা যায় না। রামলীলা ময়দান থেকে যেভাবে তিনি মঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে, মহিলাদের চুড়িদার পরে গ্রেপ্তারি এড়াবার চেষ্টা করলেন, তিনি একেবারেই প্রতিবাদী রাজনীতিক হবার অযোগ্য। তাঁর উচিত ছিল গ্রেপ্তার হবার জন্য এগিয়ে যাওয়া।

মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০১১

কালো টাকা

ভারতের নাগরিক সমাজ কালো টাকার মালিকদের জেলে পাঠাবার জন্য চেষ্টা করছেন। রাজনীতিকরা স্বভাবতই ক্ষিপ্ত। আমার তো মনে হয় ভারতে খুব কম রাজনীতিকই আছেন যিনি বিদেশে কালো টাকা লুকিয়ে রাখেননি। এমনকি অশিক্ষিত রাজনীতিকরাও বিদেশে গিয়ে কালো টাকার অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন।

সোমবার, ৬ জুন, ২০১১

জেমস জয়েস

জেমস জয়েস সম্পর্কে একটা দীর্ঘ প্রন্ধ লিখেছিলুম 'কবিতীর্থ' পত্রিকায়। লেখার সময়ে মগজে কখনও সেই সব পাঠকের কথা আসেনি, যাদের কাছ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে টেলিফোন পাচ্ছি।
লেখাটা স্নাতকোত্তর ছাত্রদের কাজে লেগেছে ! অর্থাৎ কলেজপাঠ্য হয়ে উঠেছে লেখাটা। সবাই জানাচ্ছেন যে তাঁরা কোনো বোধগম্য বই পাচ্ছিলেন না এতদিন।

শনিবার, ৪ জুন, ২০১১

বৃষ্টি

আজকে থেকে বৃষ্টি পড়া শুরু হল। বৃষ্টিতে জঘন্য হয়ে ওঠে শহর। তবুও বৃষ্টি পড়লে ভালো লাগে।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১১

রাষ্ট্রধর্ম

রাষ্ট্রের কি করে ধর্ম হয়, এটা আমি বুঝে উঠতে পারিনি। তাহলে তো হাওয়া, আলো, কুকুর, বিড়াল, জল, অন্ধকার, শবদেহ, বাঁশঝাড়, পুকুরের পানা, গাছের ছায়া ইত্যাদি সবকিছুরই ধর্ম হয়, নয়কি ? মানে, মানুষ যাকে ধর্ম বলে মনে করে সেই বস্তুটি। যে-কয়টা রাষ্ট্র একটা ধর্মকে বাছাই করে রাষ্ট্রধর্ম করে ফেলেছে, দেখা যাচ্ছে ধর্ম ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই রাষ্ট্রের 'লায়াবিলিটি'; ওই ধর্মটিই শেষাবধি ডুবিয়েছে রাষ্ট্রটিকে এবং অশেষ দুঃখ এনেছে সেখানকার লোকেদের জীবনে।

বুধবার, ২৫ মে, ২০১১

সুপার ৩০

বিহারে প্রতি বছর বিভিন্ন ধর্মের নিম্নবর্গীয় গরিব তিরিশজন ছাত্রছাত্রীকে বাছাই করে শিক্ষণ শিবির হয় যাতে তারা আইআইটি-জেইই পরীক্ষায় সফল হতে পারে। প্রায় সবাই সফল হয় । পশ্চিমবঙ্গে কি এই একই ধরনের কাজ শুরু করা যায় না ? কোনো শিক্ষাবিদকে বিহারে পাঠিয়ে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা জেনে এসে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু করা হোক না। বহু গরিব পরিবার তো বুদ্ধিমান ছেলেমেয়েদের তৈরিই করতে পারে না পরীক্ষাটির জন্য, টাকা-পয়সা ও গাইডেন্সের অভাবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তারুণ্য

সিপিএম-এর বুড়ো অশক্ত জীর্ণ কুঁজো মন্ত্রীদের তুলনায় মমতার ক্যাবিনেটের সদস্যদের বেশ তরতাজা মনে হল। সিপিএম হেরে গিয়ে এবার যদি ফেরে তাহলে নিঃসন্দেহে তরতাজাদের দেখা মিলবে। বস্তুত সিপিএম-এর হেরে যাবার একটা কারণ এই বুড়োহাবড়াদের দল।দলতন্ত্রের উৎসও এই বৃদ্ধেরা, কেননা তাঁরা তো নিজেরা তেমন দৌড়ঝাঁপ করতে অপারগ; সব কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন তলাকার লোকেদের। কিন্তু সেখানেও তো সেই একই বুড়োর দল। তাই শেষ পর্যন্ত ভরাডুবি।

মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০১১

অতিযৌনতা !

আই এম এফ এর কর্তা ডোমিনিক স্ট্রস কান তাঁর অতিযৌনতার কারণে পায়ে ইলেকট্রনিক বেড়ি পরে গৃহবন্দি। এখন মামলা চলবে। কিছু পুরুষ এই ধরনের অতিযৌনতায় কেন আক্রান্ত হয় ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। কোনো যুবতীকে দেখলেই তার লিবিডো উদ্বেল হয়ে ওঠে, এবং তৎক্ষণাৎ সঙ্গম করে ফেলবার ঢেউ ওঠে লিঙ্গে। ইউরোপে বহু দেশে সরকার অনুমোদিত যৌনকর্মীদের বাড়ি আছে; তবুও দেখি অতিযৌনতায় আক্রান্ত ধনী ইউরোপীয়রা যেকোনো তরুণি সামনে পেলেই তাকে ধর্ষণ করতে চান। যাঁরা এই গোলমালে ভোগেন তাঁরা দেখি প্রায় সকলেই সেলিব্রিটি। সেলিব্রিটি হবার সঙ্গে মনে হয় অতিযৌনতার যোগ আছে। নারীরাও কী এই ধরণের অতিযৌনতায় ভোগেন ?

মোঙ্গোলরা যেন সবাই সুন্দরী

ভুটানের রাজকুমার বিয়ে করতে চলেছেন। আমার কেমন যেন মনে হয় যে মোঙ্গোলয়েড যুবতীরা প্রায় সবাই সুন্দরী। ত্বকের সমস্যা নেই; সকলের ত্বকই একই রঙের। মুখশ্রীও আকর্ষক। আমার জামাইয়ের ভাই বিয়ে করেছে একজন চিনা মহিলাকে। চিন থেকে যে তরুণিরা তার বিয়েতে এসেছিলেন তাদের সবাইকে মনে হয়েছিল সুন্দরী। তাদের অনুরোধে মেহেদি লাগাবার লোক ডেকে উত্তর ভারতীয় কনেদের মতো তাদেরও মেহেদি লাগাবার ব্যবস্হা হয়েছিল। ডি.জে যখন বলিউডি গান বাজানো আরম্ভ করল তখন তাদের উদ্দাম নৃত্য দেখার মতো ছিল।
সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড আর মালয়েশিয়াতেও দেখেছি মোঙ্গোলয়েড তরুণি, খ্রিস্টধর্মী বা মুসলমান, কিন্তু সবাই সুন্দরী।

সোমবার, ২৩ মে, ২০১১

মারাঠি কবি অরুণ কোলাতকারের পার্শি স্ত্রী

যে বাড়িতে অরুণ কোলাতকার থাকতেন, প্রভাদেবীর সেই এলাকা দিয়ে যেতে-যেতে দেখলুম একেবারে বদলে গেছে জায়গাটা; যাকে বলে গগনচুম্বী, সেরকম বাড়ি উঠে গেছে, চেনার উপায় নেই যে কোন গলির মধ্যে একটা একরুমের বাসায় উনি সস্ত্রীক থাকতেন।
ওনার বাড়িতে গেছি কয়েকবার। ওনার পার্শি স্ত্রী নানা রকমের রান্না করে রাখতেন।আমরা খেতুম মেঝেতে বসে। খাটের তলায় রাখা খাবার চৌকি টেনে বের করে খাওয়া হতো।
জানি না ওনার স্ত্রী এখন কোথায়। হিন্দুর যদি পার্শি স্ত্রী হয় তাহলে মুম্বাইয়ের পার্শি সমাজ তাকে একঘরে করে দেয়। ওনারা তাই বাচ্চা চাননি, ভবিষ্যতে তাকে বিপদে পড়তে হবে আঁচ করে।কোলাতকারের স্ত্রী ঘরে একটা বাতিদান রেখেছিলেন, যাতে চব্বিশঘন্টা সলতে জ্বলত। জলেতে তেল দিয়ে জ্বালিয়ে রাখতেন আগুনশিখা।
এলাকাটা দিয়ে যেতে-যেতে মন খারাপ হয়ে গেল। 

মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১১

৩৪ বছর পর একদিন

হেরে গেল বামফ্রন্ট। এবং , সম্ভবত বামফ্রন্ট জিতিয়ে দিল তৃণমূলকে। জনগণ হাত জোড় করে বসে আছেন। কী হবে ? আমার মনে হয় নীতিশ কুমার যখন পেরেছেন তখন মমতাও পারবেন। তবে নীতিশ কুমার সঠিক আই এ এস অফিসার নির্বাচন করেছেন ; আই এ এসদের মধ্যে বহু বিহারি আছে। মমতা কোথা থেকে আনবেন তাঁর আই এ এসদের ? প্রাথমিকস্তরে ইংরেজি তুলে দেবার ফলে এবং স্কুল কলেজগুলো পার্টির নিম্নমেধার দলচারীদের দখলে চলে যাওয়ায়, পশ্চিমবঙ্গে সফল আই এ এস নগণ্য। যাহোক, হেরে যাবার দরুণ বামপন্হীদের ভাবনাচিন্তায় মনে হয় ফলপ্রসূ রদবদল আসবে।

বুধবার, ১১ মে, ২০১১

সংবাদপত্রহীন বা মিডিয়াহীন সমাজ

প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমে এমন অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে খবর ছাড়া বেশ অসুবিধা হয় দেখি। সিরিয়া, লিবিয়া, টিউনিসিয়া, মিশর ইত্যাদি দেশগুলোয় খবর ছিল সরকারি নিয়ন্ত্রণে । আমাদের সমাজে সরকারি নিয়ন্ত্রণে মিডিয়া থাকলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে উঠবে সবাই, এমনকি যাঁরা নিরক্ষর তাঁরাও। আরবদেশের জনগণ যে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন তার কারণ ওই শ্বাসরুদ্ধকর সমাজব্যবস্হা।

রবিবার, ৮ মে, ২০১১

STAR বা তারকা

ফিল্মে যারা অভিনয় করে তাদের বলা হয় তারকা। এই তারকা শব্দটার মানে বুঝতে পারলুম না। কেননা যারা পর্নো ফিল্মে অভিনয় করে তাদেরো বলা হয় পর্নস্টার বা পরনোতারকা। বঙ্গসংস্কৃতিতে কি পরনোতারকার আবির্ভাব হয়েছে? মালায়ালি সংস্কৃতিতে হয়েছে দেখতে পাই।

HOT বা হট

Hot ! এই শব্দটির বাংলা কী ? বিভিন্ন গ্লসি পত্রিকায় এবং পেজ থ্রির খবরে দেখি নায়ক বা নায়িকা বা পোশাক বা গান বা সঙ্গীতকে বলা হচ্ছে হট । কিন্তু হট বললে আমার মগজে কিছুই পোঁছোচ্ছে না। বয়সের সঙ্গে শীতল হয়ে গেছি বলেই হয়তো।

শুক্রবার, ৬ মে, ২০১১

ম্যাসাজ এবং মালিশ

ম্যাসাজ ব্যাপারটা যে মালিশ নয় তা থাইল্যান্ডে গিয়ে টের পেলুম, ম্যাসাজ করিয়ে। যে মেয়ে দুটি ম্যাসাজ করছিল, তাদের মতে ম্যাসাজ ব্যাপারটা ভারতবর্ষ থেকে থাইল্যান্ডে গিয়েছিল, বৌদ্ধ পরিব্রাজকদের সঙ্গে। কিন্তু মালিশ যে কি করে ম্যাসাজের চেহারা নিল তা এক রহস্য!

বুধবার, ৪ মে, ২০১১

আবসাঁথ

নেদারল্যান্ডসে গিয়ে প্রধান প্রাপ্তি ছিল আবসাঁথ পান। রেঁবো, বদল্যার প্রমুখ কবিরা, তাঁদের জীবনীকারদের মতে, আবসাঁথ খেয়ে যে ঘোরের মধ্যে চলে যেতেন, তাতে কবিতা লেখার জন্য এক অজানা জগত খুলে যেত ওনাদের মগজে।
আমার বিহারি ঠররা, কলকাতিয়া ধেনো বা বাংলা, বা লখনভি সোমরস খাওয়া মগজে বিশেষ কোনো তারতম্য পেলুম না। তার চেয়ে এল এস ডি খেয়ে বা নেপালে চরস খেয়ে বরং মগজ খোলতাই হয়েছিল।

নাইটফল বা স্বপ্নদোষ

মোহনদাস করমচন্দ গান্ধি সত্তর বছর বয়সে ঘটা ওনার স্বপ্নদোষ সম্পর্কে মানসিক দুর্ভোগের কথা লিখে গেছেন। আমি তো সত্তর পেরিয়েছি। শেষ স্বপ্নদোষ ঘটেছিল চল্লিশ বছরেরও আগে। বাঙালি লেখক বা মনীষীরা কেউ নিজেদের স্বপ্নদোষ সম্পর্কে লেখেননি কেন ? বাঙালি মনীষীরা তাহলে কি কূপমন্ডুক নাকি ইংরেজিতে যাকে বলে 'প্রুড' ?

সোমবার, ২ মে, ২০১১

ওসামা বিন লাদেন

ওসামা বিন লাদেন লোপাট হলেন।কিন্তু তাতে কি 'মৌলবাদ' ফিকে হবে ? কিছু মানুষ কেন 'মৌলবাদী' হয়ে ওঠেন ? আমার কাছে এই প্রশ্নের উত্তর নেই।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১১

হুঁকো টানার রেস্তরাঁ

প্রচুর হুঁকো টানার রেস্তরাঁ গজিয়েছে মুম্বাইতে। দড়ির খাটে বা আরাম কেদারায় বসে তামাক-সাজানো গড়গড়া টানতে ভিড় করেন তরুণ-তরুণীরা; তরুণীরাই বেশি।নানা আকারের, আগেকার কালের, পেতলের, রুপোর গড়গড়া। মোটা টাকা দিয়ে।অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। রাজকনীতিকরাও এগিয়েছেন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। তরুণ-তরুণিরা একটু সামন্ততান্ত্রেক মজা লুটতে চাইছেন; এতে আপত্তি কিসের, তামাকের ক্ষতিকারক চরিত্র ছাড়া। বাজারে তো গুটকা আর সিগারেট-বিড়ি দিব্বি বিক্রি হচ্ছে।

শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ও আমার উপন্যাস 'ডুবজলে যেটুকু প্রশ্বাস'

আমার উপন্যাস 'ডুবজলে যেটুকু প্রশ্বাস' শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় যোগারড় করে পড়েছিলেন। তাতে বর্ণিত ঘটনাগুলো থেকে সংবাদ তৈরি করার উদ্দেশ্যে উনি একদিন হঠাৎ দাদার বাড়িতে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য হাজির। লাল টিশার্ট পরে।আজকাল পত্রিকার সম্পাদক ওনাকে বইটিতে বর্ণিত গোলমালগুলো অনুসন্ধান করে সংবাদ তৈরি করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। ওনারা ভেবেছিলেন উপন্যাসের মতনই বেশ সেনসেশানাল খবর তৈরি করা যাবে।আমার কাছে তথ্য না পেয়ে উনি দাদাকে ধরলেন, সূত্র পাবার আশায়। দাদা ওনাকে পাটনার বদলে পাঠিয়ে দিলেন বাঙ্গালোর। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন বাঙ্গালোর। বেশ কিছুকাল পর দাদার বাসায় এসে বলেছিলেন, সমীর তো আমার ওষুধটাই আমার ওপর প্রয়োগ করল!

বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০১১

লতিকাদির মৃত্যু

ফণীশ্বরনাথ রেণুর স্ত্রী লতিকাদি মারা গেছেন গত জানুয়ারি মাসে, জানতে পারলাম আজকে, ফেসবুকে কবি প্রভাত ঝা'র পাঠানো সংবাদে। ৭৬ বছর বয়স হয়েছিল। ২০০৯ সালে পাটনার বাসা ছেড়ে রেণু'র গ্রাম ঔরাহি হিংনায় চলে গিয়েছিলেন।
রেণু'র রাজেন্দ্রনগরের বাসায় ষাটের দশকে আমাদের যখন আড্ডা জমত, লতিকাদি আমাদের যাবতীয় আবদার সহ্য করতেন। লতিকাদির সঙ্গেই ছোটোবেলায় আমাদের পরিচয় ছিল, দিদিদের বাড়ির সামনের চিকিৎসালয়ে নার্স ছিলেন। রেণু সেখানেই চিকিৎসার জন্যে ভর্তি হয়েছিলেন।
লেখকদের স্ত্রীরা কেন সংবাদ হন না ? নাকি আমাদের দেশেই হন না !

সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১১

অপ্রকাশিত লেখা চাই

প্রায় সবাই আমার অপ্রকাশিত লেখা প্রকাশ করার জন্য আবেদন জানান। সম্পাদক মশায়কে যখন জিঞ্জাসা করি যে আমার কোন কোন বই পড়েছেন, বলেন "আপনার বই তো পাওয়া যায় না কলেজ স্ট্রিটে, ঢাকার বইবাজারে"। তাহলে কেন তাঁরা প্রকাশিত রচনা ছাপতে চান না জানি না । যে লেখা সম্পাদক নিজেও পড়েননি, সেটিও তিনি ছাপতে চান না, এই অজুহাতে যে তা ইতিমধ্যে প্রকাশিত!

রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১১

জাপানিরা কিছুদিনের জন্য জাপান থেকে পালাচ্ছেন

মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুরে দেখলুম বহু জাপানি। খোঁজ নিয়ে জানলুম জাপানের আণবিক তেজস্ক্রিয়তার প্রকোপ এড়াতে অর্থবান শ্রেণির লোকেরা কিছুদিনের জন্য অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছেন।অথচ অর্থবান শ্রেণির লোকেদের সুবিধার্থেই তো আণবিক রিয়্যাকটারগুলো বসানো হয়েছে দেশে-দেশে।

বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১১

টিউনিশিয়া, মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন

দলে-দলে মানুষ পালাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে, বিপজ্জনক নৌকায় চেপে; অনেকে ডুবে মরছেন, অনেকে পৌঁছোচ্ছেন ইউরোপের নিকটতম দেশে।
যারা পালাচ্ছেন তাঁদের অনেকেই মধ্যবয়সী। ফেলে চলে যাচ্ছেন তাঁদের মা, বাবা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, আত্মীয়স্বজনদের।
যাঁরা চলে যাচ্ছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ, এবং যাঁরা পড়ে রইলেন তাদের ভবিষ্যৎ, ঘোর অনিশ্চয়তায় আক্রান্ত হল।

আন্না হাজারের অনশন

আমৃত্যু অনশনে বসেছেন আন্না হাজারে। তাঁর দাবি, ভারতের রাজনীতিক ও আমলাদের চুরি-জোচ্চুরি থামাবার একমাত্র উপায় একটি 'লোকপাল আইন' যার আওতায় আসবেন ওই সমস্ত রাষ্ট্রীয় জোচ্চোররা।
ওনার এই অনশনই সম্ভবত শেষ সুযোগ এই দেশটাকে ভ্রষ্ট ও নষ্ট রাজনীতিক ও আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করে একটা সুস্হ রাষ্ট্র গড়ার।। এর পর আর সুযোগ আসবে বলে মনে হয় না।
ভারতবর্ষ যাতে মিশর, টিউনিশিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন-এর মতো গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত না হয়, তাই আন্না হাজারেকে সমর্থন করা অত্যন্ত জরুরি।

মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১১

শুভপ্রসন্নর ছবি

শুভপ্রসন্ন একটি ছবি এঁকেছেন। ছবিটি রাজনৈতিক দৃষ্টিতে অসাধারণ। লাল রঙের শালুতে মোড়া একজন বৃদ্ধের লাশ, লাল কাপড়ে ঢাকা টেবিলের ওপর সাজানো। সেই টেবিলটি ঘিরে তেরোজন ঘাড়কুঁজো দাঁতখেঁচানে বুড়োর দল; আধ-বুড়িও আছে একজন, যার কপালে গোল টিপ।পেছনে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে ডিগবাজি-খাওয়া কাস্তে-হাতুড়ি, আর স্তালিনের গোঁফ।
ছবিটিতে আসল থাক্কাটা আছে ওই বুড়ো-বুড়িদের হাতের জায়গায়। তাদের বাঁহাত হয় দেখা যাচ্ছে না, নয়তো বাঁ হাতটাই নেই।

রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১১

ব্লাসফেমি ?

ব্লাসফেমি শব্দটির সংস্কৃত প্রতিশব্দ খুঁজে পেলুম না সংস্কৃত অভিধানে। বাংলা অভিধানেও দেখলুম এর প্রতিশব্দ নেই ! মানে বোঝানো আছে যদিও। অর্থাৎ ধারণাটা সনাতন ভারতবর্ষের নয় । বাংলা অভিধানে ব্লাসফেমি শব্দের অর্থ, "অধার্মিকের ন্যায় কথাবার্তা বলা, ঈশ্বর নিন্দা করা, ঈশ্বরের নামে অভিশাপ দেওয়া।"
সংস্কৃত অভিধানে শব্দটির না থাকার অর্থ হল সনাতন ভারতবর্ষে ওই কাজ-কারবারগুলো সবই অনুমোদিত ছিল। বছর চল্লিশ আগে কুম্ভের মেলায় একদল জটাধারী সাধুকে দেখেছিলুম আগুনের সামনে গোল হয়ে বসে গাঁজা টানতে-টানতে শিবকে গালাগাল দিচ্ছেন, অওধি হিন্দিতে।তাদের ঘিরে ভক্তদের ভিড়।

শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০১১

ভ্রুণহত্যা

২০১১ এর সেনসাস রিপোর্ট থেকে জানা গেল যে ভারতে যে রাজ্য অর্থনৈতিক দিক থেকে যত উন্নত, সে-রাজ্যে তত বেশি মেয়ে ভ্রুণ হত্যা করা হয়। সেই সব রাজ্যে প্রতি হাজার পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা অত্যন্ত কম। বহু গ্রামে যুবকদের বিয়েই হয় না, কনের অভাবে!

আজকে মগক ফাঁকা

আজ সিংগল মল্ট খেয়ে লিখছি। কী যে লিখব ভেবে পাচ্ছি না।হ্যাঁ, এরকম ভালো মদ ভারতে এখনও তৈরি করা সম্ভব হল না কেন? আমরা তো কত উন্নতি করছি । এ-ব্যাপারে পেছিয়ে কেন ?

শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১১

হিন্দি টিভি সিরিয়ালে ভারতীয় সংস্কৃতি

হিন্দি টিভি সিরিয়ালগুলোর গল্পে বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান প্রসারিত হবার ফলে বিভিন্ন প্রদেশ ও অনুস্তরীয় সম্প্রদায়ের আচার আচরণ দেখার সুযোগ ঘটছে।তার ফলে বেশ মিশ্রণও ঘটছে। একদিক থেকে ভালোই। ইভেন্ট ম্যানেজাররা জেনে নিচ্ছেন কী-কী আচার আচরণ চাই, এবং সেই মত ব্যবস্হা করছেন। মন্দ নয়। বাঙালির শাঁখ বাজছে, কনে শাঁখা-রুলি পরছে, অথচ মেয়েটি পাঞ্জাবি বা উত্তরপ্রদেশীয়। নাচানাচি চলছে বাঙালিদের বিয়েতে, বলিউডি স্টাইলে।আর খাওয়া-দাওয়ার তো একটা সর্বভারতীয় মেনু তৈরি হয়েই গেছে।

মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১১

ক্ষমতার সমাপ্তি

সাধারণ নাগরিক তার ক্ষমতাহীনতা প্রয়োগ করে সিংহাসন টলিয়ে দিতে পারে।

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১১

বিউলির ডালে মৌরিবাটা

বিউলির ডালে মৌরিবাটা দেবার প্রয়োজনীয়তা যিনি আবিষ্কার করেছিলেন, তাঁকে ধন্যবাদ জানাতেই হয় ।

রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১১

জীবনানন্দের লিবিয়া কি এই লিবিয়া ?

সোশ্যাল নেটওয়র্কগুলোয় আরব দেশগুলোর গণরোষ নিয়ে কাউকে মত-প্রকাশ করতে দেখছি না । কারণ কী ?

শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১১

গণতন্ত্র

ক্লেপ্টোক্র্যাসির বাংলা কী ? সবকটি ডেমোক্র্যাসিই ক্রমে ক্লেপ্টোক্র্যাসি হয়ে গেছে ।

শুক্রবার, ১৮ মার্চ, ২০১১

আরব দেশগুলোয় গণপ্রতিবাদ

আরব দেশগুলোয় যা ঘটছে, তাকে কী বলব ? অনেকে বলছেন গণঅভ্যুথ্থান।কিন্তু প্রতিটি আরবদেশের গণরোষ তো একই রকম বা কারণে নয় । ভারতবর্ষে বসবাস করে আরবদেশের সমাজ-রাষ্ট্র সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন।যাকে আমরা ব্যক্তিএকক বলি, তার আস্তিত্বিক যন্ত্রণা টের পাওয়া কী সম্ভব ?
যে ভারতীয়রা গোলমালের কারণে পালিয়ে এসেছেন, তাঁদের কয়েকজনের কথাবার্তা শুনে একটা অদ্ভুত ব্যাপার জানতে পারলুম। মুম্বাইয়ের এই সব লোকগুলো শ্রমিক । তাদের রোজগার গেছে। তারা আরবদেশের সাধারণ মানুষ সম্পর্কে রুষ্ট।অর্থাৎ এতদিন সেই সব দেশে থেকেও সেখানকার মানুষের সুখ-দুঃখের অংশভাক হতে পারেনি তারা। 

বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১১

ফেসবুকে কেন ? এই ব্লগেই করুন না মন্তব্য

আমার রোজনামচা পড়ে অনেকে ফেসবুকে তাঁদের মতামত লিখছেন। ফেসবুকে এত বেশি পোস্টিং হয় যে অনেকসময়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য হারিয়ে যায় । সবচেয়ে ভাল হয় যদি মন্তব্য-বিশেষ এই ব্লগেই করা হয়, প্রাসঙ্গিক এন্ট্রিটির তলায় । তাহলে তা থাকবে, এবং পরে যাঁরা মন্তব্য করতে চাইবেন, তাঁরাও দেখতে পাবেন ।

আত্মরঞ্জন ও মনোরঞ্জন

একজন কবি কী জন্যে কবিতা লেখেন ? কেউ লেখেন আত্মরঞ্জনের জন্যে । আবার কেউ লেখেন মনোরঞ্জনের জন্যে।

বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০১১

এক কোটি মানে কত লক্ষ টাকা ?

এক কোটি মানে একশ লক্ষ টাকা। একশ লক্ষ !!!! ভারতবর্ষের রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় স্তরেই, প্রায় সকলেই অন্তত পাঁচ কোটি টাকার বেশি মালিক।অনেকে বিদেশেও নিয়ে গিয়ে রেখে দিচ্ছেন। অর্থাৎ রাজনীতিকরা দেশটার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সন্দিহান, তাই উত্তরপুরুষদের জন্যে বিশাল বৈভব তৈরি করে রেখে যাচ্ছেন । যাদের কাজ ভবিষ্যৎ গড়া তারা দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবেন না।

রোনালদিনিও/রোনালডিনহো , রবিনিও/রবিনহো

বিবিসি, সিএনএন এবং ইংরেজি স্পোর্টস চ্যানেলগুলো বলে রোনালদিনিও এবং রবিনিও। অথচ বাংলা চ্যানেল এবং বাংলা সংবাদপত্রগুলো উচ্চারণ করে রোনালডিনহো এবং রবিনহো!
আজকে বিকেলে জগার্স পার্কে দুটি বাঙালি যুবক এই বিষয়টি নিয়েই কথা বলছিল। শুনে, খটকা লাগল, আমি কেন লক্ষ করিনি এতকাল !

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১১

কুকুরের জন্মদিনের ব্যানার

দৃশ্যদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার একটি নতুন উপায় বের করেছেন শহরের একদল ডাক্তার। শহরের প্রতিটি রাস্তা এবং মোড় ছেয়ে থাকে নেতাদের মুখ-দেখানো রঙিন ব্যানারে। 
কর্পোরেশান বলেছে যে কেউ অনুমতি চাইলে তাঁরা নির্ধারিত মাশুল দিয়ে ব্যানার টাঙাতে পারেন।
ডাক্তাররা বিরক্ত হয়ে সেগুলোর পাশে নিজেদের কুকুরের জন্মদিন উপলক্ষে মুখ-দেখানো রঙিন ব্যানার টাঙিয়ে দিচ্ছেন।
সেই কুকুরদের চামচা-কুকুরও রয়েছে পাশাপাশি।
রাজনীতিকদের চামচারা সেকারণে বেশ উত্তেজিত।

মায়ের ভূমিকা

উলহাসনগরে একটি এগার বছরের বাঙালি মেয়ে, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী, কালকে আত্মহত্যা করেছে। পরশু মেয়েটি যখন তার কাকিমার বাড়ি খেলতে গিয়েছিল, তখন তার মা, মেয়েটির পড়ার বইপত্র ঘেঁটে একটি ডায়েরি পান। ডায়েরিতে মেয়েটি একজন সহপাঠীর প্রতি তার আকর্ষণের কথা লিখে রেখেছিল।
মা সোজা স্কুলে পোঁছে যান পরের দিন। প্রিন্সিপলের সঙ্গে দেখা করার জন্যে পীড়াপীড়ি করেন। মেয়েটি সেই ফাঁকে বাড়ি গিয়ে আত্মহত্যা করে।
একুশ শতকের কিশোরীর উনিশ শতকের মা ?

সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১১

বসন্তঋতু

এসে গেছে ঋতু বসন্ত। মুম্বাই শহরের পথের দুধারে অচেনা গাছগুলোয় রঙিন ফুল দেখা দিয়েছে। কিন্তু এই ঋতুতে আমি পরাগের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হই।
ফুলের দিকে তাকিয়ে, নাকে রুমাল চাপা দিয়ে পথ চলি। ডাক্তার আমাকে বডি ডিওডেরেন্ট ও পারফিউম লাগাতেও বারণ করেছেন, অ্যালার্জি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে। কোনো ফুলের গন্ধ তাই শুঁকে দেখিনাকো আর।

রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১১

নিরুদ্দেশ -- কারণহীন

মুম্বাই শহর থেকে প্রতিদিন ২৮ জন মানুষ হারিয়ে যায়, যাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা পুলিশের দেয়া তথ্য। অর্থাৎ আরও বেশি মানুষ হারিয়ে যায়। যারা হারিয়ে গেছে, তাদের বয়স এক থেকে ষাট। মহিলা-পুরুষ দুইই । তবে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা বেশি--- সেক্স স্লেভ বা যৌন ক্রীতদাস করার উদ্দেশ্যে তাদের অধিকাংশকে চালান করে দেয়া হয়েছে মনে করা পুলিস। যুবকরাও ওই উদ্দেশ্যে চালান হয়েছে। কী করছে সমাজ ? রাষ্ট্র ?
এই তথ্য পাওয়া গেছে আর.টি.আই. দরখাস্ত করে। কেউ একবার কলকাতার এবং সারা পশ্চিমবাংলার তথ্যটা যোগাড় করে দেখুন না। বাঙালি যুবতী তো শুনি সবচেয়ে বেশি পাচার হয়। কলকাতার সমস্যা হল থানাগুলো এফ আই আর করতে চায় না, কমিসার-দাদারা নির্দেশ না দিলে।

জেন রাসেল

জেন রাসেল, হলিউডের অভিনেত্রী, মারা গেলেন, থুথ্থুরে বুড়ি হয়ে। এ-বছর ওনার একশো বছর বয়স হত। একশো পুরো করা হল না।
আমার যৌন-উন্মেষের সময়ের সাদা-কালো ফিল্মের নায়িকা। সে-সময়ে নকল বুকের অনুশীলন আরম্ভ হয়নি; সিলিকন জেলও আসেনি।
পাটনার এলফিনস্টোন সিনেমা হলে প্রতি রবিবার ইংরেজি ফিল্ম দেখতে যেতুম, বন্ধুদের সঙ্গে। তখনই আবিষ্কার করেছিলুম জেন রাসেলকে। তারপর তো এসে গেলেন মেরিলিন মনরো। এক-একটা ফিল্ম যে কতবার দেখেছি তার গোনাগুনতি নেই।
ওনাদের উপস্হিতির কারণেই দেখতুম ফিল্মগুলো। কোনো শিল্প-টিল্প বোধের থেকে নয়।

শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১১

তেজষ্ক্রিয়তা : আতঙ্কের বিকিরণ

সুনামি এবং ভূমিকম্পের যৌথ আক্রমণে জাপানের আণবিক রিয়্যাক্টারে বিস্ফোরণ ঘটল। জাপান ঘোষিতভাবে আণবিক বিজ্ঞানকে শান্তির জন্যে ব্যবহার করতে চেয়েছে; অথচ সে-দেশেই ঘটল ভয়ানক বিস্ফোরণ। রাশিয়ার চেরনোবিলে অমন দুর্ঘটনা ঘটার পর কতজন যে পঙ্গু হয়ে গেছে তার হিসাব নেই। জাপানেও শেষ পর্যন্ত কত ক্ষতি হবে তার ইয়ত্তা নেই।
দেখা যাচ্ছে, শান্তির জন্যে অনু ব্যবহার অশান্তির জন্যে অনু ব্যবহারের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। আনবিক বোমাগুলো হয়তো কখনও কোনো রাষ্ট্রের দ্বারা প্রয়োগ হবে না। কিন্তু পৃথিবী-জুড়ে রিয়্যাক্টারগুলোয় মানুষ বা প্রকৃতির অবদানে নানা সময়ে নানা দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে।
জল,কয়লা, পেট্রল, অনু ছাড়া অন্য উপায় কি নেই, মানুষকে দ্রুতির স্বপ্নে মশগুল করে রাখতে ?

জলের উচ্ছ্বাস

সমুদ্রের ঢেউ কত উঁচু পর্যন্ত উঠে যেতে পারে যে তা অজস্র বাড়িকে তাদের ভিত থেকে উপড়ে ধানখেতের ওপর দিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ? চলন্ত ট্রেনকে যাত্রীসুদ্ধ তুলে নিয়ে গিয়ে খেলনার মতো ছুঁড়ে আছাড় দিতে পারে ? অজস্র মোটরগাড়ি আর প্লেনকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়ে জঞ্জালের মতন জড়ো করতে পারে এক জায়গায় ?
দৃশ্যটা ভাবার চেষ্টা করছি, কিন্তু ঢেউ-এর ওই উঁচু উচ্ছ্বাসকে, সমগ্র ধ্বংসকাণ্ডকে, ভিজুয়ালাইজ করতে পারছি না।
যে-জাপানিরা ওই জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে ভেসে চললেন, তাঁদের মনে কী ঘটছিল তখন ? তা কি বাক্যে প্রকাশ করা সম্ভব ?

শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১১

প্রজাপতির দেখা

আজকে সকালে জগার্স পার্কে প্রাতঃভ্রমণ করার সময়, আশ্চর্য, একটা প্রজাপতি দেখতে পেলুম। হলুদ রঙের। মুম্বাইতে কত জায়গায় থেকেছি, গত তিরিশ বছরে; এর আগে কখনও প্রজাপতি দেখিনি। শেষ প্রজাপতি দেখেছিলুম হল্যান্ডে, আমার মেয়ের বাগানে। কেবল প্রজাপতিই নয়; মৌমাছি, ঘুঘুপাখি, অন্যান্য ইউরোপীয় পাখি দেখেছিলুম ওই বাগানে। কলকাতাতেও, আমার বাড়ির পেছনে প্রজাপতি দেখতে পেতুম কুড়ি বছর আগে, কিন্তু মেট্রো রেলের কারণে এত বাড়ি উঠছে যে কোনো ফুলের গাছ আর নেই ওই পাড়ায়।
আজ সকালে প্রজাপতিটাকে দেখে যে আনন্দ হল তা ব্যক্ত করার জন্যে শব্দটা হল 'অবর্ণনীয় ' ।

বালজাক-এর উলঙ্গ মূর্তি

অগুস্তে রঁদা বালজাকের একটি উলঙ্গ মূর্তি গড়েছিলেন, ব্রোঞ্জের, যার ওজন প্রায় ৬৫ কিলোগ্রাম।জনৈক সংগ্রাহক সেটি কিনে ইজরায়েলের মিউজিয়ামকে উপহার দিয়েছিলেন। মুর্তিটি চুরি হয়ে গেছে!
ভাগ্যিস চুরি হল। নয়তো জানতে পেতুম না যে রঁদা অমন মূর্তি তৈরি করেছিলেন। উলঙ্গ বালজাককে দেখার সুযোগ করে দেবার জন্যে চোরকে ধন্যবাদ।

হুসেন সাগরের জলে নিক্ষিপ্ত সাহিত্যিকগণ

হায়দ্রাবাদে তেলেঙ্গানা আন্দোলন চলছে।তেলেঙ্গানার লোকেদের ভাষা কি অন্ধ্রের লোকেদের ভাষার থেকে আলাদা?
কালকে আন্দোলনকারীরা বেছে-বেছে অন্ধ্রের প্রখ্যাত সাহিত্যিকদের মূর্তিগুলো উপড়ে হুসেন সাগরের জলে নিক্ষেপ করেছেন। বেশ কয়েক দশক আগে বসানো হয়েছিল ওগুলো। লেখকদের স্মৃতিকে আক্রমণের মাধ্যমে কি বলতে চাইলেন আন্দোলনকারীরা ?

বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১১

বালক-বালিকাদের আত্মহত্যা

আমি স্কুলে পড়েছি অনেক কম বয়স থেকে । প্রথমে ক্যাথলিক স্কুলে, তারপর রামমোহন রায় সেমিনারি ব্রাহ্ম স্কুলে। আমার স্কুলে কোনো ছাত্র বা ছাত্রী কখনও আত্মহত্যা করেনি। অন্যান্য স্কুলেও কোনো ছাত্রকে সে-সময়ে আত্মহত্যা করতে শুনিনি।
এখন সংবাদপত্রে পায়ই পড়ছি আট-নয় বছরের স্কুল পড়ুয়ারাও আত্মহত্যা করছে।
কী ঘটে তাদের মনে, যা আমার সময়ের ছাত্র-ছাত্রীর মনে ঘটত না ? এমন নয় যে এই সমস্ত বালক-বালিকারা এলিট স্কুলের পড়ুয়া, এবং বাবা-মায়েরা তাদের 'প্রথম' হবার চাপ দিচ্ছেন। অনেকে মিউনিসিপাল স্কুলের বা আঞ্চলিক ভাষার স্কুলের পড়ুয়া।
রহস্যটা ঠিক কী ? আমাদের শহুরে সমাজে কোথায় রদবদল ঘটে গেছে ? গ্রামের স্কুলে তো স্কুল পড়ুয়াদের আত্মহত্যা করার সংবাদ দেখি না খবরের কাগজে?
শহরের ওইটুকু ছেলেমেয়ের মনে অস্তিত্ববাদী সংশয় দেখা দিচ্ছে এমনটা ভাবাও কঠিন। তাহলে ?

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

নারীদিবসে একজন নারীর আত্মহত্যা

মুম্বাইয়ের মালাড অঞ্চলে নিধি গুপ্তা নামে একজন মহিলা আত্মহত্যা করলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, যে-দিনটি আবার তাঁর দশম বিবাহবার্ষিকী। মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাবার জন্যে পোশাক পরিয়ে, ছেলের হাত ধরে সোজা উঠে গেলেন উনিশ তলায়। সেখান থেকে প্রথমে ছেলেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন, তারপর মেয়েকে, তারপর নিজেও ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
কী ভাবে একে ব্যাখ্যা করা যায় ? হঠাৎ স্প্লিট সেকেন্ড নির্ণয় ! পরিবারের সবাই বিস্মিত ।

মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০১১

শুয়ে থাকা হাতির গায়ে লক্ষ লক্ষ শুক্রকীট

কিরণ নাদার কিনেছেন ভারতী খের-এর তৈরি ভাস্কর্য শুয়ে-থাকা হাতি, ছয় কোটি টাকা দিয়ে। লক্ষ লক্ষ শুক্রকীট হাতিটির দেহে এঁকেছেন, খোদাই করে। অসাধারণ ভাবনা। আমার মনে হয় কেবল ভাবনার জন্যেই ভাস্কর্যটির অমন দাম।

রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১১

সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের মৃত্যু

সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত মারা গেলেন। সংবাদটি দিয়েছেন ইশিতা ভাদুড়ি। আমার সঙ্গে সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের পরিচয় ছিল না। জানি না আমার লেখালিখি সম্পর্কে তাঁর মতামত ঠিক কোন খাতে বইত, কেননা তিনি নিজেকে একসময় কৃত্তিবাস গোষ্ঠির একজন করে ফেলেছিলেন। বিভাব পত্রিকার জন্যে তিনি আমার কাছে কখনও লেখা চাননি। রাহুল যখন সম্পাদনার কাজ নিজের হাতে তুলে নিলেন, তখন প্রথমবার বিভাব পত্রিকায় আমার কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
কেউ মারা গেলে আমার পক্ষে নিজেকে প্রকাশ করা খুব কঠিন হয়। কী বলব ঠাহর করতে পারি না। বোবা হয়ে যাই। আমি তাই কোনো শোক সভায় যাই না। শ্রাদ্ধতেও যাই না।

শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১১

মহেশ লাঞ্চ হোম

প্রায় কুড়ি বছর পর মহেশ লাঞ্চ হোমে খেতে গিয়েছিলুম, ফোর্ট অঞ্চলে, খাউ গল্লির কাছে। ওদের সামুদ্রিক প্রানীর খাবার বিখ্যাত। অনেক দিন পর সুরমই, পমফ্রেট আর চিংড়ি তন্দুরি খেলুম। কাঁকড়াগুলো তো বিরাট, ফুল-প্লেট ভরা।তারপর যে ঢেঁকুর, তার তুলনা হয় না।

সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

তরমুজ আর পেঁপেতে ইনজেকশান

আজকে একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এসেছিল, কলিং বেল সারাতে। যুবকটি বিহারের। আমি পাটনায় ছিলুম শুনে বিহারের অনেক গল্প করল।অনেক বিহারি যুবক মুম্বাইতে চলে এসেছিল লালু যাদবের নৈরাজত্বকালে; তারা সব থেকে গেছে। ফল আর শাকসব্জির দোকান যা পথের দুধারে দেখতে পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই ওদের।
তরমুজ আর পেঁপে সম্পর্কে ও একটা ভয়াবহ কারবারের কথা বলল। তরমুজের ভেতরটা যাতে লাল দেখায় তাই ওরা তরমুজে লাল রঙ গুলে ইনজেকশান দেয়!
একইভাবে, পেঁপেতে কমলা রঙ গুলে ইনজেকশান দেয়।
খদ্দের চাইলে তক্ষুনি কেটে দেখিয়ে দিতে পারে ভেতরের পাকা রঙ। ক্রেতারা বেজায় খুশি হয় !!!

রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ওয়াইনের স্বাদ

ইউরোপে গিয়ে কত রকমের ওয়াইন খেলুম। এদেশের ওয়াইনও খেয়েছি এবং খাচ্ছি। কিন্তু ওয়াইন খাবার যে বৈশিষ্ট্য তা রপ্ত করতে পারলুম না।স্বাদের তারতম্য টের পাই না। মনে হয়, যখন তরুণ ছিলুম, তখন এত দিশি মদ খেয়েছি যে ওয়াইন খাবার জিভ আমার নেই। আজকে এই যে রোজনামচার এই এন্ট্রিটা লিখছি, ওয়াইন খেয়ে।

শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

বাংলা উইকিপেডিয়ার সম্পাদকরা কি সবাই আমেরিকায় থাকেন ?

ইংরেজি উইকিপেডিয়ার যাঁরা সম্পাদনা করেন তাঁরা প্রতিটি পৃষ্ঠায় তাঁদের অবদান রেখে যান আরো বেশি তথ্য যোগ করে; প্রতিনিয়ত তথ্য ও ফোটো যোগ করে পৃষ্ঠাগুলোকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেন। বাংলা উইকিপেডিয়ের পৃষ্ঠা কারা সম্পাদনা করেন জানি না। তাঁদের সম্পাদনার নমুনা দেখে মনে হয় তাঁরাও আমেরিকা-ইউরোপে থাকেন। তাঁরা সদা-সর্বদা চেষ্টা করেন কী করে তথ্য বাদ দেবেন; নিজেরা তাঁরা কোনো অবদান রাখেন না।
ফালগুনী রায় তাঁর নাম ফাল্গুনী লিখতেন না; ফালগুনী লিখতেন। উইকিপেডিয়ার সম্পাদকগণ তাঁকে ফাল্গুনী করে দিয়েছেন, এবং সেই সঙ্গে ফালগুনীর পৃষ্ঠা থেকে বহু তথ্য বাদ দিয়ে দিয়েছেন ! ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের কয়েকজন কবি তাঁদের ব্লগে ফালগুনীর রচনা অন্তর্ভুক্ত করে চলেছেন বহুকাল যাবৎ। উইকিপেডিয়ার সম্পাদকরা বোধহয় সেসব দেখেন না। তাঁরা যে ঠিক কী চাইছেন তা ঠাহর করা কঠিন।

বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

নেপালে ষাটের দশকে, হাংরি আন্দোলনের সময়ে

নেপালে আমরা গিয়েছিলুম নেপালি সাহিত্য একাডেমির ডায়রেক্টর বাসি শশীর আমন্ত্রণে। আমি, সুবিমল বসাক, করুণানিধান মুখোপাধ্যায়, অনিল করঞ্জাই, কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় আর দাদা সমীর রায়চৌধুরী। সাহিত্য-চর্চার পরিবর্তে আমরা নেপালের স্হানীয় মাদক আর মদ খাওয়ায় সময় কাটাতাম বেশি। আমার সঙ্গে পারিজাত নামে একজন তরুণী কবির ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। সুবিমলের সঙ্গে এক নেপালি চিত্রাভিনেত্রীর, যার ব্লাউজে সাইকেডেলিক রঙ করে দিত করুণা আর অনিল।আমরা নানা রকমের মাদক ট্রাই করেছিলুম, কেননা নেপালে তখন আমেরিকা, ইউরোপ , জাপান দক্ষিণ কোরিয়া থেকে হিপিরা এসে জুটেছিল।সে এক অবিস্মরণীয় মাদকতা আর যৌনতার দিন ছিল।কোনো প্রকার নিষেধ ছিল না।করুণার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এক কৃষ্ণাঙ্গী তরুণীর যিনি ছবি আঁকতেন। ওদের ছবির একটা প্রদর্শনীও হয়েছিল। শেষদিনে, যে ছবিগুলো বিক্রি হয়নি সেগুলো পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা হয়েছিল।অনিল, করুণা আর কাঞ্চন পরে নকশাল আন্দোলনের দিকে ঝোঁকে। কেউ আর বেঁচে আছে কিনা জানি না। অনিল মারা যাবার পর ওর লিভ-টুগেদার বান্ধবী মার্গারেট রেনল্ডস 'হাওয়া৪৯' এর একটা অনিল করঞ্জাই সংখ্যা প্রকাশে সাহায্য করেছিলেন।সেই সব দিনগুলোর কথা লিখে রাখলে ভালো হত। আমাদের কার্যকলাপ নিয়ে নেপালের সংবাদপত্রে ফলাও করে খবর বেরোত, ছবি-টবি দিয়ে। এখানে সেরকম একটা ছবি যুক্ত করলুম।

সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

কবি, জীবনানন্দ গবেষক এবং শল্যচিকিৎসক ভূমেন্দ্র গুহ

২০০০ সালে আমার দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, মুম্বাইতে। এখানে নানাবতি হাসপাতালে বলল দ্রুত বাইপাস করাতে হবে; তিন লাখ টাকা আনো।অত টাকা ছিলই না হাতের কাছে তখন, মুম্বাইতে। তাছাড়া কলকাতায় খরচ কম মুকুন্দপুরের হাসপাতালে। কলকাতায় চলে গেলুম, নানাবতি থেকে ছাড়ান পেয়ে।
কলকাতায় প্রভাত চৌধুরী বলল, একবার ভূমেন্দ্র গুহকে কনসাল্ট করে নিন। ভূমেন্দ্র গুহকে আমি কবি ও জীবনানন্দ গবেষক বলেই জানতুম।উনি যে কার্ডিওলজিস্ট তা জানতুম না।
প্রভাত ভুমেন্দ্র গুহকে আমাদের বাড়িতে নি্য়ে এলো।উনি আমায় আর রিপোর্টগুলো দেখে বললেন, শল্যচিকিৎসার মোটেই প্রয়োজন নেই, ওষুধ খেতে থাকুন আর খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন।ওনার ওষুধে সত্যিই বেশ উপকার পেলুম; তা মুকুন্দপুরে গিয়ে নানা টেস্ট করিয়ে এবং আমার যিনি অ্যানজিওপ্লাস্টি করেছিলেন ১৯৯৬ সালে তাঁকে দেখিয়ে। তিনিও বললেন যে ভুমেনদার ওষুধগুলো চালিয়ে যান। ভুমেনদা প্রতি মাসে এসে দেখে যেতেন, ফিস নিতেন না; নিজে বাড়ি বয়ে আমাকে ওয়েইং মেশিন আর ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন কিনে দিয়েছিলেন।
তারপর কি হল জানি না। উনি আসছেন না দেখে, ফোন তুলছেন না দেখে, গেলাম ওনার ফ্ল্যাটে। উনি দেখতেই চাইলেন না। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই অবাক।ফিরে এলুম।
দিন কয়েক পরে খবরের কাগজে দেখলুম ভুমেনদা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন, বিনয় মজুমদারের সঙ্গে একত্রে।বস্তুত আমার সঙ্গ যে কাউকে সাহিত্যপুরস্কার পেতেও বাধা হয়ে উঠতে পারে তা জানতুম না।
কিছুদিন পরে 'দেশ' পত্রিকায় ভুমেনদার পুরস্কারপ্রাপ্ত বইটির দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।আমার অনুরাগীরা বলল, দুই আর দুই যোগ করে নিন মলয়দা।
ভূমেন্দ্র গুহরায় খুবই ভালো শল্যচিকিৎসক জানতুম। মানুষ হিসাবেও জানতুম উদার ও সহিষ্ণু। কিন্তু সাহিত্যের গোলোকধাঁধায় ঢুকলে যে এরকম হতে পারে তা আমার ধারনা ছিল না।
২০০৩ সালে প্রকাশিত আমার কাব্যগ্রন্হ 'কৌণপের লুচিমাংস' ভুমেনদাকে উৎসর্গ করেছিলুম। উনি প্রাপ্তি জানাননি।আমি দ্বিতীয়বার পাঠিয়েছিলুম রেজিস্ট্রি করে; প্রাপ্তি জানাননি !

রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

শিশুদের সঙ্গে খেলা

সবায়ের করে কিনা জানি না, আমার তো বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে ভালো লাগে। নাতনিরা বিদেশে থাকে। ওদের সঙ্গে স্কাইপে খেলি। ওদেরও এই স্কাইপ খেলা ভালো লাগে, কেননা খেলার জন্যে বুড়ো-বুড়ি নেই ওদের কাছে-পিঠে।ওদের সঙ্গে অবশ্য ইংরেজিতে কথা বলতে হয়, যে ইংরেজি, ওরা জানে, ইনডিয়ান, তাই আমাদের সঙ্গে ইনডিয়ান ইংরেজিতে কথা বলে ওরা।
আর খেলি আমার ফ্ল্যাটের সামনে পারিখদের দুটি বাচ্চার সঙ্গে। তাদের নাম কণক আর নীহারিকা; ছোটোটা এখনো কথা বলতে পারে না ভালো ভাবে। তবে ওরা এত দুরন্ত যে আধঘন্টা খেললেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। সহজে যেতে চায় না বাচ্চা দুটো।ওদের জন্যে আমরা সময় বরাদ্দ করে রেখেছি। না খেললে কেন যেন ভালো লাগে না। দিনটাকে আঁতেল-আঁতেল মনে হয়।

শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ফেসবুক-এ বন্ধুত্বভীতি

ফেসবুকে প্রায় প্রতিদিন আমার কাছে বন্ধুত্বের প্রস্তাব আসে। কাউকেই ফেরত দেয়া সম্ভব নয়। কেনই বা দেব ? আমি বাঙালি ও অবাঙালি বন্ধুদের জন্য পৃথক পাতা খুলেছি সেকারণে।অবাঙালিদের মাঝে যারা ইংরেজিভাষী নন তাঁদের জন্য আরেকটা পাতা খুলেছি।
আমি নিজেও বন্ধুত্বের আহ্বান পাঠাই, যখন নামচেনা কারোর নাম তুলে ধরে ফেসবুকের পৃষ্ঠা। খ্যাতনামা কয়েকজনকে দেখলুম বেশ ভয় পান আমার বন্ধুত্বের আহ্বানকেও।সম্প্রতি যেমন ঘটল জয় গোস্বামী, সুচিত্রা ভট্টাচার্য আর মন্দাক্রান্তা সেনের ক্ষেত্রে। আমার আহ্বান দেখেই তাঁরা তড়িঘড়ি আহ্বান নাকচ করলেন।

শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

রান্নাঘর

শৈশব থেকে এখন পর্যন্ত কতরকমের রান্নাঘরের অভিজ্ঞতা হল। পাটনায় ইমলিতলা পাড়ায়, কুড়ি জনের একান্নবর্তী পরিবারে, রান্নাঘর ছিল বেশ বড়; ১৪ বাই ১৪ হবে। মা, জেঠিমা আর কাকিমারা একসঙ্গে বসতে পারতেন। স্কুলে যাবার আগে আমরা ওখানে বসেই খেয়ে নিতুম।

তারপর রান্নাঘর দরিয়াপুরের বাড়িতে। এই বাড়িটা বাবা করিয়েছিলেন দোকান এবং ফোটো-স্টুডিওর কথা মাথায় রেখে; তাই রান্নাঘরের প্ল্যান ছিল না। দোতলায় যে ঘরটাকে ডার্করুম করার কথা ছিল, সেটিই রান্নাঘর হয়ে উঠল। এই বাড়িতে বাবা উঠে গিয়েছিলেন একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে যাবার কারণে। রান্নাঘরটি খুবই ছোট ছিল; ৩ বাই ৪, যেখানে কেবল উনোন ধরানো হত, গ্যাস আসার আগে। মা রান্না করতেন তার সংলগ্ন ঘরটায়, যে ঘরে আমাদের প্রথম ডাইনিং টেবিল আর ফ্রিজ ছিল। বাবা কিন্তু মাটিতে বসেই খেতেন, আসন পেতে।

এর পারের রান্নাঘর লখনউতে। লখনউতে বাংলো-বাড়ি পেয়েছিলুম বটে, কিন্তু রান্নাঘরটা তেমন বড় ছিল না; তবে আধুনিক ছিল, অর্থাৎ দাঁড়িয়ে রান্না করার জন্য প্ল্যাটফর্ম, গ্যাস রাখার জায়গা, বাসন ধোবার সিংক ইত্যাদি। রান্নাঘরের ভেতরই ভাঁড়ার, যা ইমলিতলা আর দরিয়েপুরে ছিল না।লাগোয়া ড্রইং-ডাইনিং।

পরবর্তী রান্নাঘর মুম্বাইতে, ঘাটকোপারে, একরুমের ফ্ল্যাটে, যাকে অফিস নাম দিয়েছিল ট্র্যানজিট ফ্ল্যাট।ঘাটকোপারে রান্নাঘরটা অন্যঘরটার সমান ছিল।সেখানেই ডাইনিং টেবল ; ইচ্ছা হলে শোয়া যেত, শুতুমও, কেননা অন্য ঘরটায় লখনউ থেকা আনা বহু জিনিসে ঠাসা ছিল।

তার পরের রান্নাঘর মুম্বাইয়ের বোরিভিলিতে, যেখানে অফিস দিয়েছিল লিজড ফ্ল্যাট।মাঝারি মাপের রান্নাঘর, তাতে অধুনিক যাবতীয় মুম্বাইয়া ব্যাপার। দুদিকে জানালা; লখনউ থেকে এসে প্রথম কোকিল ডাকতে শুনেছিলুম।এখন অবশ্য মুম্বাইতে কাক আর পায়রা ছাড়া অন্য পাখি নজরে পড়ে না।ফ্ল্যাটটা ছিল দু'তলায়, তিনদিকে ব্যালকনি।অফিস আর ছেলে-মেয়ের স্কুল কলেজ থেকে দূরে ছিল বলে বোরিভিলি ছাড়তে হল।

বোরিভিলির পর সান্টাক্রুজ, অফিসের কোয়ার্টার, সিনিয়র অফিসারদের জন্যে। সুতরাং রান্নাঘরের মাপও তদনুযায়ী।আমরা চারজনেই দিনের বেলায় বাড়ির বাইরে থাকার কারণে রান্না করা ছাড়া জীবনের দ্রুততায় এই রান্নাঘরের আনন্দ তেমন নেয়া হয়ে ওঠেনি। ছুটির দিনে রেস্তরাঁতে খেতে বেরোনোর রুটিন গড়ে ওঠার ফলে রান্নাঘরের উৎসবমুখরতা কমে গিয়েছিল। গাড়িও কিনে ফেলেছিলুম সান্টাক্রুজে থাকতে ।

সান্টাক্রুজের পর কলকাতা, নাকতলার ফ্ল্যাটে। এটাই ছিল সবচেয়ে ছোট রান্নাঘর। রান্নাঘরকে কেন যে গুরুত্ব দেহা হত না জানি না। অথচ আমার মামার বাড়িতে রান্নাঘরটাই ছিল সবচেয়ে বড়, হল-ঘর বলা যায়।নাকতলার রান্নাঘরে কাজের মেয়ে ঢুকলে আর কারোর দাঁড়ানোর জায়গা থাকত না।ফ্ল্যাটটা কেনার পর ওইটুকু জায়গায় যতটা পারা যায় কাজ চালাবার মতন সুবিধা তৈরি করে নেয়া হয়েছিল, তা সত্ত্বেও রান্নাঘরের কারণে যেনি প্ল্যান এঁকেছিলেন তাঁকে আমার স্ত্রী কখনও ক্ষমা করতে পারেনি।

নাকতলা থেকে শেষ ঠাঁই কান্ডিভিলির, মুম্বাইতে, রান্নাঘর।এখন মুম্বাইতে প্রতিটি ফ্ল্যাটে রান্নাঘরকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় বিল্ডাররা। কান্ডিভিলির রান্নাঘরও বেশ বড়, যদিও এটা এক বেডরুমের ফ্ল্যাট।এখন যখন খাওয়া-দাওয়া ডাক্তারের পরামর্শে চলে, তখন, এই শেষ বয়সে রান্নাঘর পেলুম মনের মতন।

আমি নিজেও রান্না করি। তাই রান্নাঘরটা মনের মতন না হলে সেই ফ্ল্যাট একেবারে ফালতু মনে হয়। রান্নাঘরটাই তো একটা ফ্ল্যাটের বা বাড়ির প্রাণকেন্দ্র।

মুম্বাই বুলি

মুম্বাই শহরের বুলিগুলো নিচের স্তর থেকে ওপরে ওঠে; নিচের মানে গরিব তো বটেই, অন্ধকার জগতেরও।এক কোটি টাকা হল 'খোখা', এক লক্ষ টাকা হল 'পেটি' । আমার পাড়ায় দুই বেডরুম ফ্ল্যাটের দাম এখন এক থেকে দেড় 'খোখা' । লোকেদের কাছে এত টাকা কোথা থেকে আসে ? ফ্ল্যাটগুলো তো দিব্যি বিক্রিও হয়ে যায় দেখি।

মুম্বাইতে মদ কেনা

মুম্বাইতে মদের দোকানে মেয়েরাও মদ কিনতে ঢোকে; কলকাতায় কিন্তু কখনও কোনো মহিলাকে দেখিনি মদ কিনতে।মুম্বাইয়ের বুলি অনুযায়ী মদের এক লিটার বোতল হল 'খাম্বা'। আজকে আমার পাড়ায় মদের দোকানটায় একজন সুবেশা তরুণীকে দেখলুম, সবুজ টপ আর ফেডেড জিনসে। অর্ডার দিলেন; এক খাম্বা ব্লেনডার্স প্রাইড।

বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ফাদার হিলম্যান

সিস্টার আইরিনকে মনে পড়ায়, ফাদার হিলম্যানকেও মনে পড়ে গেল। সেন্ট জোসেফ'স কনভেন্টে প্রতি বৃহস্পতিবার চার্চে বাইবেল ক্লাস হত; ক্লাস নিতেন হাদার হিলম্যান। জার্মান ছিলেন, জার্মান অথচ ক্যাথলিক। ওনার কাছ থেকেই নিউ টেস্টামেন্টের গল্পগুলো জেনেছিলুম।চার্চে হাতজোড় করার সময় বুড়ো আঙুলের ওপর বুড়ো আঙুল রেখে ক্রুশচিহ্ণ তৈরি করতে হত।হল্যাণ্ডে গিয়ে দেখলুম লোকে গির্জায় বিশেষ যায় না, রবিবারেও। ধর্ম থেকে ব্যক্তি-মানুষ ইউরোপে মুক্ত হয়ে চলেছে কী ?
ফাদার হিলম্যান আর সিস্টার আইরিন কোথায় গেলেন শেষাবধি জানি না, কেননা দেশ স্বাধীন হল আর আমি ব্রাহ্ম স্কুলে ভর্তি হলুম, ক্লাস ফোরে।

প্রথম দিন

এবার ব্লগের আকারে একটা রোজনামচা লিখব মনস্হ করেছি। এর আগে দু'বার ডাইরি লেখার তোড়জোড় করেছিলুম; দু'বারই গোলমাল হয়ে গিয়েছিল। প্রথমবার ডাইরিটা হাংরি আন্দোলনের সময়ে পুলিস বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল; তা আর লালবাজারের মালখানা থেকে নেওয়া হয়নি। নেবার অনেক ফ্যাচাঙ।খরচও। দ্বিতীয়বার লখনউ থাকতে লেখা আরম্ভ করি, কিন্তু তা আমার জীবনের ঘটনাবলী নিয়ে এমন বিস্ফোরক আকার নিয়ে ফেলেছিল যে পুড়িয়ে নষ্ট করে দিতে হয়েছিল। এখন প্রতি বছর নতুন ডাইরি পাই, কোনো কাজে লাগে না, কেননা আঙুলে আরথারাইটিস। ইনটারনেটে এক আঙুলে কাজ চালাই; তাই যতদিন এই এক আঙুলে কাজ চলছে ততদিন একটা রোজনামচা লেখা যেতে পারে।
রোজনামচা লেখার আইডিয়াটা এলো ফেসবুক থেকে। ফেসবুকে অনেকে অনেক কিছু লিখছেন আমায়, আমার মতামত চাইছেন, চ্যাটিং করছেন। বেশ লাগছে। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে লেখার ইচ্ছা হল। তাছাড়া মগজে নানা বিদকুটে ভাবনা চলতে থাকে, সেগুলোও লেখা যাবে। রাতে যখন ঘুম আসে না তখন কতরকম চিন্তা আর স্মৃতি চলে আসে, সেগুলো ঢোকানো যাবে।
ইনটারনেট এমন জায়গা যে যার ইচ্ছা হবে, যে খুঁজে পাবে, সেই দেখবে। ইশারায় লেখার প্রয়োজন হবে না বা লুকোবার দরকার হবে না।
অবশ্য এখন, এই মুহূর্তে, যেহেতু সিঙ্গল মল্ট খাচ্ছি, তাই এই পর্যন্ত লিখলুম। একটু পরে নেশাটা শরীরে ছড়ালে, যদি মনে কিছু আসে তখন লেখা আরম্ভ করব।তবে নেশার মৌতাতে যাঁর কথা মনে পড়ছে, তিনি আমার প্রথম শিক্ষিকা সিস্টার আইরিন, সেন্ট জোসেফ কনভেন্টের ক্লাস টিচার।
যাঁরা আমায় পড়বেন তাঁরা কিঞ্চিদধিক মন্তব্য ফেলে যাবেন বলে মনে হয়।ইনটারঅ্যাকটিভ রোজনামচা হয়ে উঠবে তাহলে!