শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩

মলয় রায়চৌধুরীর গল্প : আমার পান্তা আনতে দিন ফুরোয়

 

আমার পান্তা আনতে দিন ফুরোয় : মলয় রায়চৌধুরীর গল্প

আমার দিন নেই,  রাত আছে, গায়ে ফ্লুওরোসেন্ট রঙ মাখিয়ে দিয়েছে যে তরুণী, ওর গুদগহ্বরে  রাত নেই, আলোয় আলোক্কার, অন্ধকারে কারোর সঙ্গে ধাক্কা যাতে না লাগে, তবু চিনাপাড়ায় গৌড়ীয় তরুণীর  সঙ্গে গলে মিশে গেলুম , বলল ওর পূর্বপুরুষদের গায়ে চেঙ্গিজ খানের কোনো সৈন্যের রক্ত ঢুকেছিল, তাই মোঙ্গোল ছিরিছাঁদ,জড়িয়ে ধরেছে, আমার লওড়ার ডগা চুনীর অণ্ডকোষ পান্নার দণ্ড পোখরাজের , গৌড়ীয় মোঙ্গোল তরুণী নিজেকে নীল করে ফেলল চেটে নিয়ে, বলল, মাওবাদী বাবা ফেরার, তার ফরেস্ট রক্ষিতার মেয়ে, কলকাতায় রাতের বেলায় ঘুরে বেড়ায় বসন্তের খোঁজে, বসন্ত ঋতু না এলে বিপ্লব হবে না, এটা গৌড়ীয় চিনাপাড়া, পুলিশ তুলে নিয়ে আমাকে ভর্তি করে দিয়েছে ভিখারিদের হোমে, আমার আইডেনটিটি কার্ড রাখার জায়গা ছিল না ল্যাংটো গায়ে, আরও অনেক ভিখারি রয়েছে, সামনে অন্ধ ভিখারির সারা গায়ে পোকা আর দুর্গন্ধ থেকে ছড়িয়ে পড়ছিল কেঁচোরসের কোহল ।



বৈশালীর গৌড়ীয় চিনা তরুণীর হাসি, ঠোঁট ফাঁক , বুঝতে পারলুম, সেও ভিখারি ক্যাম্পের, তুলে এনে হোমে,ওর হাত কথা বলে, বলল, তোমার চোখ দুটো অদ্ভুত, কতো হাঙর সাঁতার কাটছে, হাঙরের পিঠের ডানার সুপ খেলে হয়তো তোমার দিন ফিরে আসবে, আমরা যেমন গুবরেখোরের সমাজ ফিরে এসেছি রাতে, বৈশালীর গৌড়ীয় চিনা ভাষায় গাইতে লাগল রাতের গান, বিদেশের নয়, বৈশালীর:-

 

আজ খোল দা আপন খজানা দিল ভইল বাটে দিওয়ানা

কাহে ছুঁয়ে সে করেলু মনা, পহলে লে ল হোঠলালি স্বাদ ধিরে ধিরে

একরা বাদ ওয়ালা চিজ রাজা খাইহ ফজিরে

নিমন চিজ হম চখায়ব একরা বাদ ধিরে ধিরে

লালি কে ছানি কটা হোন্নে ধিয়ান জানি বতা

কাবু মেঁ নইখে জওয়ানি অকওয়ারি লইকে সতা

তনিক কড়া বরদাস খোলব রাজা ধিরে ধিরে

একরা বাদ ওয়ালা চিজ রাজা খাইহ ফজিরে

দুরে সে লে লা মজা বতিয়া বুঝা অয় রাজা

ভগেলু দুর কাহে এতনা বিছৌনা মে আকে সমঝা

হো রাজা দেহিয়া সে দেহিয়া সতাইব ধিরে ধিরে

তোহর মনওয়াকে ভোজন পুরাইব ধিরে ধিরে

আমার দিন নেই, সূর্যরশ্মিতে আমি দেখতে পাইনা, কখনও রোদের কণা চোখের মণিতে আশ্রয় নিয়েছিল , তারপর থেকে আমার দিন নেই, যখনই  বেরোই না পৃথিবীর রাস্তায় রাত হয়ে যায়।

—ভিখারি হোমে তোমায় তুলে এনেছে কেন ? আমায় এনেছে ভয়ে, যদি গুদবিপ্লবের জীবাণু হাওয়ায় ছড়িয়ে যৌনবিপ্লব এনে দিই। আমার যোনিতে সূর্যরশ্মী আছে, যোনি বোঝো তো, যাকে ভিখারিরা বলে গুদগহ্বর ।

—আমাকে এনেছে গায়ের আলোর জন্য, ওদের ভিখারি প্রাসাদে আলো নেই, আমার শরীরের আলো ওদের কাজে দেয় । লওড়া আমার টর্চ, মশাল, যৌনবিপ্লবের ঝাণ্ডা । বৈশালীতে থাকার সময়ে বুদ্ধের শিষ্য গেণ্ডুম লোংপা আমায় বলেছিলেন

“স্পষ্টভাবে বেঁধে বা কাউকে আঘাত না করে,

একজন বর্শার সাথে নিষ্ঠুরভাবে ছুরিকাঘাত করে না;

প্যাশন একটি উৎসাহী মানুষের প্রস্তাব

এটি একটি গুণ হতে পারে না, কিন্তু এটি কিভাবে একটি পাপ হতে পারে?”



 

গেণ্ডুম লোংপা আরও বলেছিলেন, যখন রাতের আঠায় সাধারণ দম্পতিরা মহারণ্যের নায়ক নায়িকা, বলেছিলেন আমায় বৈশালীতে :

“অহংকারী মানুষ, এটা ভাল যে আপনার লিঙ্গ একটি মহিলার যোনির মধ্যে প্রবিষ্ট করার তুলনায় একটি বিষাক্ত সাপের মুখে আটকে থাকা উচিত। এটা ভালো হবে যে আপনার লিঙ্গটি একজন মহিলার যোনির তুলনায় কালো স্নিপের মুখে আটকে যায়। এটা আপনার লিঙ্গ একটি মহিলার কোষের তুলনায়  জ্বলন্ত এবং জ্বলন্ত একটি আঙরাখার মধ্যে আটকে, যে ভাল হবে। কেন জানেন ? যে ? এই কারণে আপনি মৃত্যু বা মৃত্যুর মতো যন্ত্রণা ভোগ করবেন, তবে আপনি মৃত্যুর পরে দেহের ভঙ্গুর ঘটনায়, বঞ্চনার অবসান, খারাপ গন্তব্যস্থল, অগ্নিকুণ্ড, নরক, আপনি সেই ঘটনার নায়ক হবার অযোগ্য।”

কোন থেকে উঠে  ধনী ভিখারি বলে ফেলল, আমি আপনাকে বলেছিলাম যে আমি সবসময় বৈশালীর তরুণীদের পছন্দ করি, মচ্ছিবদবু  হলে ভালো। সব রকমের বু আছে বৈশালীতে ।

ঠিকই, মচ্ছিবদবু মেয়েদের রাতের বেলা দেখতে পাওয়া যায়, যেমন হাওয়া দেখতে পাওয়া যায়, সেই সময়ে, আমি রাত ছাড়া কাজ করতে পারতাম না, ও পারত, গৌড়ীয় চিনা বলে, ওর জন্ম আফিমের আঠা থেকে, আফিমের আঠায় আষাঢ় মাসের ভরা যৌবন । আমি ওকে ভালোবাসি, অথচ ও  আমাকে তাচ্ছিল্য করে, কারণ আমার দিন নেই, দিন আমাকে ঘৃণা করে। ভালবাসা কেউ রাতের বেলা প্রতিহত করতে পারে ? দুর্বল ছাড়া, ধ্বংস ছাড়া? দিনের বেলা আমি কুমারীখাদ্য হয়ে উঠতে চেয়েছি । যে কোনো মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিতে আমার ভাল্লাগে না, দিনের বেলায় তারা পার্টির দলদাস হয়ে যায়, কাঁধে ঝাণ্ডা, পকেটে পার্টি কার্ড, মাথায় বাঁদুরে টুপি, যাতে লোকে না টের পায় তার পা নেই, চারটেই হাত ! সবাই নিজেকে পাল্টাবার শপথ নিয়েছে ।

—আমার এক রাতকানা বন্ধু কাঁধে লাল ঝাণ্ডা বইতো আর তার ভাই মরে গেল গাঁজাকুসুমের ঝাণ্ডা বইতে গিয়ে, মন্তী বলেছিল, চিন্তা নেই, সব হবে । দলচাকর হয়ে ওরা বুকে ফাটল নিয়ে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মরে পড়ে আছে, গুড়ের মদ ছিটিয়ে মন্ত্রপাঠ করেছে ।

—অন্য গান নেই ?

—ওটাই রাতের গান যা দিনের বেলা গাইতে হয় ; তুমি বৈশালীর গৌড়ীয় চিনের পাঁচিলের ওপরে দৌড়োবার সময়ে রাতের বেলায় গাইবে, তাহলে হয়তো যৌনবিপ্লব এসে পড়বে, বজ্রনির্ঘোষ ।

—আমি যে নাধ্যাত্মিক, এটি একটি নাধ্যাত্মিক ব্যক্তির বালিয়াড়ি যা আমি উপলব্ধি করার জন্য  কিছু সময় নিই। আমি নিয়মিত শিল্পীদের পেইনটিঙের সামনে দাঁড়িয়ে নগ্নিকাদের নীরব শ্রদ্ধা আর প্রশংসা করি । সৌন্দর্য্য হল ত্রাস, মানুষ ত্রাস ভালোবাসে । রাতের উৎস ত্রাস ।

তোমার রাত কাঁটায় ভরা, তুমি যে আমার চিত্তাকর্ষক দৃষ্টিকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছ, সেই ঘুমেই যৌনবিপ্লবের বীর্যের মাইক্রোকজম, তোমাদের ভোরে তোমরা ঘুরেছ ; ভোর রাত খুব শিগগির ভয়াবহ অন্ধকারে ছড়িয়ে পড়বে।  আমি যে কথাগুলো ব্যবহার করি তা তোমার কাছে অতিরঞ্জিত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এত ভয়াবহ বর্ণনা কেন ? আমরা কি যৌনবিপ্লবের অধিকারী নই ।

—-যখন আমার এই স্বীকারোক্তি তুমি শুনতে পাবে, তুমি বুঝতে পারবে আমি দিন চাই না, রাতকেই চেয়েছি, এই দ্যাখো সারা গায়ে ফ্লুয়োরেসেন্ট চামড়া।

আমার কল্পনা কুপ্রভাবে সুস্পষ্ট, তোমার শান্তির ভেতরে, আমার প্রস্তাবনা আমরা তুইতোকারি করি। কিন্তু ধৈর্য ধরে থাকো। আমি ধনী ভিখারিদের সকলকে বলব এবং তোমাদের সবাইকে বলি, আমি যে রাত মেখেছি সারা গায়ে তা থেকে ওরা দোষী সাব্যস্ত হবে, আর ধনী ভিখারিদের শাস্তি হবে না। পাশাপাশি উপহাস জমা পড়বে । রাষ্ট্র, একটি অসম্ভব সূর্যকরোজ্জ্বল ত্রাসের কারাগার, আমাদের অপরাধের প্রতিটি নোট নেয়। আমার রাতবিস্ফোরণ হয়েছে, দিন নেই বলে, কিন্তু তোমার  মতো সৎ ভালোবাসা যা রাতেই ঘন হয়ে ওঠে, গুদগহ্বরের আলোকে দিন বলে মেনে নিই। এমন সাড্ডল্যভাব, তুমি বুঝতে পারো না মানুষ কেন ভয় পায়, যখন সে ভয় পায়, তখন রাতের অন্ধকার। রাত একটা জিনিস, রাত একটা সম্পর্ক ।

—ওই একটাই রাতের গান, তাও গুদাসক্তির ?

—হ্যাঁ, লবণডাঙার মাঠে তুমি কৃষ্ণচূড়া ফুলের কাঁধে হেলান দিয়ে কাঁদছিলে, রাতে লাল রঙ দেখা যায় না, রাধাচূড়া দেখা যায়। তুমি বলেছিল আমাকে তোমার সাথে নিয়ে যাবে। আমি হ্যাঁ বলেছিলুম আমি হাত দিয়ে রাত দেখাবো ।

—ধনী ভিখারিরা  ব্যাখ্যা করেছিল যে এই দানবগুলো দিনের আলো দেখলেই  নিজেদের বলে: হ্যাঁ। হ্যাঁ। হ্যাঁ । হ্যাঁ।

—-এটা এখন রাত সৃষ্টির জন্য খুব দরকারি।

ধবধবে ফিনফিনে  কুয়াশা উপত্যকায় নামলে তুমি ব্যাখ্যা করেছিলে যে এটি ভাসমান গুদবীজ যা আগে একটা সূর্যকরোজ্জ্বল নদী ছিল। ধনী ভিখারিরা পাঁচশ বছর  প্রসব করার জন্য অপেক্ষা করছে। কুয়াশার বিছানার পাশে তারা দাঁড়িয়ে ছিল, বলছিল দিনের বেলায় এটা ধ্বংসাবশেষ মনে হলেও, সম্ভবত একটা বৌদ্ধ মঠ, হুম হুম হুম হুম ভেসে আসছে, তার কারণ আমি সঙ্গে করে রাত এনেছি ।

—আচ্ছা, এখন বুঝতে পারছি, তুমি সঙ্গে করে রাত বয়ে বেড়াও।

—কারেক্ট, যেখানে সময় স্থায়ী হয় সেখানে পরম জায়গা আছে তবু দিন আর রাতের সম্পর্ক ভাল নয় ; তুমি শ্বাস নিতে পারবে না ।

—ধনী ভিখারিদের জন্য আমরা  অভিশাপ ।

—তোমার শ্বাস জমা রাখা আছে, তুমি কাঁদতে কাঁদতে  নীল আর পুরোপুরি নিরাভরণ ত্বকে রাতকে রাতাক্কার করছিলে। আমি বুঝতে পেরেছিলুম যে আমরা একটি খারাপ জায়গা দিয়ে যাচ্ছি। ভাগ্য ভালো, ভারি সৌভাগ্য। একটা আলোকিত জানলায় গগলস পরে এক শিশু  বক্তৃতা মসকো করছিল। যখন গুদগহ্বরের ঝলমলে আলোয় আমরা অন্য দিকে পৌঁছলুম তখন আমি ওকে একটা ঘটনা বললুম ।



“সবাই আমাকে দেখলেই পালাতো । পরে, ওরা গর্ত থেকে বেরিয়ে ফুটপাথে মশারি টাঙিয়ে সস্তা বেশ্যাদের সঙ্গে শুয়ে থাকতো, থানায় হুমকি শুনেই কাঁদতে আরম্ভ করে দিয়েছিল ভিখারির দল, ধনী ভিখারি নিজের নতুন বাংলোয় বারান্দায় চেলাদের নিয়ে গাঁজা খেতো । ওরা ভেবেছিল , আমার লওড়ার ঝড় এত হিংস্র , আর আমি দেহ থেকে রাত ছড়িয়ে দিচ্ছি, তখন মিথ্যার বেসাতি ছাড়া পথ নেই, পথকানা হয়ে গেল সেই নী ভিখারিরা ।

—তা জানি, পুরো দ্বীপটা কিছুদিন জলের তলায় ডুবে ছিল । যখন জল শুকিয়ে গেছে তখন ওরা হলুদ-সবুজ লম্বাজিভ ক্যামেলিয়নের ঘোরালো চোখ নিয়ে লাফ দিলে ।”

—জানি, ওরা ভাবতে পারেনি যে তুমি একসময় আগুন আর তুষার মেলানো ঝড় হয়ে দেখা দেবে । তোমার রাতের ক্ষমতা ওরা টের পায়নি । ওরা জুটিয়েছিল একজন টাকমাথা  পবিত্র পবিত্র পবিত্র পালনকর্তা যিনি তোমার বিরুদ্ধে সংঘারাম বসিয়েছিলেন । তনি মণিপোঁদে হুম ।

আশ্চর্যজনক হ্রদ আর  দিগন্তের গোলাপী প্রজাপতি পাহাড়, তার তলায়  ঠাণ্ডা সেতু, রাতের ট্রেনটা চলে যাচ্ছে চেলাদের মাথার ওপরে বসানো কেরোসিন ল্যাম্পের নেকলেসের মতন , আমি সেই দৃশ্য ভুলিনি।

—নিশ্চয়ই, রাত্রি একটা জিনিস, রাত্রি একটা সম্পর্ক !

—হ্যাঁ, শোনো তাহলে, অভিশপ্ত স্রষ্টা, ওরা দিন আর রাতের পার্থক্য জানে না, আর ঈর্ষান্বিত জোচ্চোরে খোঁয়াড় ভরে গেছে । ভাবে বৈশালীর অমন গৌড়ীয় চিনা গান মানে ছোটোলোকদের গান, হাঃ হাঃ ।

—তোমাকে খেয়ে ফুরোতে পারেনি ওদের গুদেশ্বরপ্রধান, লোকটার চোখ নেই, পা নেই, হাত নেই, কান নেই, শুধু পেট আছে, চিন্তা করে পেট দিয়ে, বুঝতে পারেনি যে তোমার লওড়ার ডগায় চুনীর আলো, বিচিদুটো পান্নার আর দণ্ডটা পোখরাজের, ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল, পুরো ধনী ভিখারিসমাজ, ভেবেছিল যারা অমন লওড়ার মালিক তারা কখন ফিরে এসে ওদের পোঁদে ঢুকিয়ে দেবে ওরা টেরটি পাবে না । আর ঠিক তাই হয়েছে ।

ডাক্তারের কাছে যেতে ওরা বাধ্য হল। সেই লোকটার অফিস পেল্লাই কাঠের দরজাের পিছনে, নাম ছিল মানিকচাঁদ। দরজাটা পাথরের,  খাজুরাহো নকশায় খোদিত , হ্যান্ডেল খুঁজে বের করার জন্য ওদের কিছু সময় লেগেছিল, আলোর প্লেনগুলির তলার অংশে অন্ধকার, পাশের দিকে ওদের মাথা বাঁকানো।

ওরা দুজন বললে, একই সঙ্গে, নাভিতে ওদের মুখ, কেননা পেট ছাড়া আর কিছু কাজ করে না, “স্যার আমাদের চুনীর শিশ্ন থেকে আত্মরক্ষা করার ওষুধ দিন ।”

পোঁদের ডাক্তার জানতে চাইলে,”ওই গোলাপি লওড়া আপনাদের সর্বত্র  অনুসরণ করছে তো, জানি জানি।”

তুমি ওদের কথা শুনলে তোমার লওড়ার চুনী আরও জ্যোতিতে  পরিণত হতো, আর রাতের মাধ্যমে তুমি ডাক্তারের মুখ, ইন্দ্রিয় ও দুঃখী কারবার দেখতে পেতে । স্লোগান উঠেছিল, ধনীভিখারিদের জয় হোক, কোটিপতি সর্বহারাদের জয় হোক ।

ওরা বলল, “আমাকে ক্ষমা করুন।”

ডাক্তার ওদের গালিচার ওপর শুতে নির্দেশ দিলে, মাংসের ফাটলে  ফানেল ঢুকিয়ে তরল রাত্তির ঢেলে দিতে লাগলেন। সেই থেকে ওরা রাতের সম্পত্তি খোঁজবার জন্য কাঁদছে।

—আমার উদ্দেশ্যে কেঁদে উঠেছিল, “হে অভিশপ্ত স্রষ্টা! কেন তুমি এত অদ্ভুত রশ্মির লওড়া আমাদের পোঁদে ঢুকিয়েছ ! আমরা স্বীকার করি যে সৌন্দর্য্য মানেই ত্রাস ।”

ডাক্তারের উপদেশ : “সম্পূর্ণরূপে উন্নত চোখ দিয়ে আপনাদের লার্ভা জীবন  সম্পর্কে চিন্তা করুন। কল্পনা করুন আপনারা যুবক-যুবক টাইপের । লম্বোদর হলেও গুহাবাসী পুরোনো মানুষের মতন দেখাচ্ছে । সাধারণত অদ্ভুত বিরল বা প্রাণবন্ত আকর্ষণ একটি প্রতিক্রিয়া তৈরি করে কিন্তু ক্ষুধার্ত শিশুদের করুণা উৎপাদন অনুমিত । আমার  অনুমান এটি ত্রাসের কাজ। আমি তাঁকে দেখেছিলাম যখন ধনীভিখারিদের আতঙ্কিত অনুভূতির পিঁজরাপোল ছিল, তারা আমার কাছে তাই আটক থাকতে চেয়েছিল কেননা তা এক ধরনের বেঁচে থাকা । করুণা, হ্যাঁ, কিন্তু বিদ্রোহ, এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে লজ্জাবোধের সেতু। ওদের  চোখে ছুঁচের অনুভূতি।

বৈশালীর গৌড়ীয় চিনা তরুণী গান ধরে, স্বদেশি গান, বিদেশি প্রভাব নেই, শুনি, রাতের গান:-

 

রাজা কইলা বিয়াহ তু মোটা যাইবা হো

খাইবা মেহরি কে হাথে ত গোটা যাইবা হো

পেপসি পিকে তো হো গইল সেক্সি

সুনিলা প্যার নিক লাগেলা কুঁয়র মেঁ

মেহরি কা কারি মরদ রহি জব উধার মেঁ

রানি হম বনি এপ্পে ঝরে জ্বালা পানি

হোলা ডিমান্ড জব লে রহেলা জওয়ানি

কইসন ভেস বতাউলু হে রাজা

চেহরা পর এহরা জরাওয়েলু

রাজা কইল বিয়াহ তো মোটা যাইবা হো

খাইবা মেহরি কে হাথে ত গোটা যাইবা হো

 

শুনলেন তো ? ডাক্তার বললেন ধনীসর্বহারাদের, আপনারাই বিশ্ব !  একটি ভয়াবহ গান আপনাদের কাছে কিছু কারণের জন্য বিদ্বেষপূর্ণ কেননা তা রাতের গান, যখন চাঁদ নেমে গেছে আশশ্যাওড়ার বাগিচায় ।

বললুম, আমার অনেক মহিলা পরিচিত ছিল তুমি নিশ্চয়ই শেষ নও, যেহেতু, তোমার নিজের অলৌকিকভাবে নির্দোষ চিন্তা আমাকে সাক্ষী রেখেছে এই রাতের আর তোমার ।  আমি আরো কয়েক বছর ধরে আমার নিজের মৃত্যুর বন্ধ করা দরোজা খুলতে চাইব না । তুমি ভাবছ আমি আতঙ্কিত করছি । আরে, না! পরে তুমি বুঝতে পারবে। আমার কাছে রাতের ত্রাস ছাড়া দেবার কিছুই নেই । কিন্তু তারা কি প্রেমের জাদুর ফলে ইতিমধ্যে অন্ধ ছিল না ?

আরও বললুম, সেই অল্পবয়সী তরুণীরা এই ভয়ংকর রাত  থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য এবং আমার লুকানো ভূমিকম্প পর্যন্ত ঘোরানো বহির্বিন্যাসের পাকানো কাঠের সিঁড়িগুলোতে চড়ে বেডরুমে আসতে রাজি হয়েছিল? অনেকেই সামান্য সন্দেহে ছাড়াও সপ্তাহ, মাস, বছর এমনকি দশক চুনী-পান্না-পোখরাজের ছটায় মজে গিয়ে ভালোবাসা ফেঁদেছিল ।  তারা সন্দেহজনক কিছু হতে পারে? আমার শোবার ঘরে কুয়াশা ছেয়ে আছে, নদী বইছে,তাদের আঠার সাথে, কান্নার সাথে, চুম্বনের সাথে, গুদগহ্বরের তীব্র আলোর ছটার সাথে। তাদের রাত কখনও শেষ হোক তা তারা চায়নি ।

কেন ? 

পান্তা আনতে তাদের রাত ফুরিয়ে গেছে কিনা জানা যাবে না ।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন