সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

অঁতনা আতো'র "বেঁচে থাকার নতুন প্রতিভাস"-এর অংশ

 

অঁতনা আতোর "বেঁচে থাকার নতুন প্রতিভাস" এর অংশ



অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী


আমি যা দেখেছি এবং বিশ্বাস করেছি সেকথাই বলি; আর কেউ যদি বলে যে আমি যা দেখেছি তা আমি দেখিনি, আমি সঙ্গে সঙ্গে তার মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেব।

কারণ আমি একজন ক্ষমার অযোগ্য পাশবিক মানুষ আর ‘সময়’ যখন আর ‘সময়’ থাকবে না তখন পর্যন্ত থাকব।

স্বর্গ বা মর্ত্য কেউই, যদি তারা সত্যি থাকে তবে তারা আমার ওপর চাপিয়ে দেয়া এই বর্বরতার বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে, সম্ভবত আমি তাদের সেবা করেছি বলে ... কে জানে?

যে কোনো অবস্থাতেই তাদের কাছ থেকে নিজেকে ছিঁড়ে আলাদা হবে।


আমি যা দেখি তা নিশ্চিত আছে বলে দেখি। দরকার হলে যা নেই তা তৈরি করব।

অনেক দিন ধরে আমি শূন্যতা অনুভব করেছি, কিন্তু নিজেকে শূন্যে ছুঁড়ে ফেলতে অস্বীকার করেছি।

আমি  ততটাই কাপুরুষ ছিলুম যতোটা কাপুরুষত্ব আমি দেখছি।

যখন আমি বিশ্বাস করতুম যে আমি মর্ত্যকে প্রত্যাখ্যান করছি, তখন আমি জানতুম আমি শূন্যতা প্রত্যাখ্যান করছিলাম।

কারণ আমি জানি পৃথিবীর অস্তিত্ব নেই এবং আমি জানি কীভাবে এর অস্তিত্ব নেই।

এখন অবধি, আমার যন্ত্রণা ছিল শূন্যতা প্রত্যাখ্যান করার।

শূন্যতা আমার মধ্যে আগে থেকেই ছিল।

আমি জানি আমি চেয়েছিলুম  শূন্যতা আমাকে আলোকিত করুক, আর আমি নিজেকে আলোকিত হতে দিতে অস্বীকার করেছি।

যদি আমাকে শ্মশানের চিতা বানানো হয়, তবে তা হবে এই পৃথিবীতে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আমার সুস্থতা।

আর আমার যা ছিল তা পৃথিবী নিয়ে নিয়েছে।

আমি টিকে থাকার জন্য লড়াই করেছি , সেই আঙ্গিকগুলোকে (সমস্ত রূপের ) সম্মতি দেওয়ার চেষ্টা করেছি  যা দিয়ে এই পৃথিবীতে থাকার বিভ্রমের খোঁয়ারি সমস্ত বাস্তবতাকে আবৃত করেছিল।

আমি আর বিভ্রম দ্বারা আবিষ্ট হতে চাই না.

পৃথিবীর কাছে মরে গেছি; পৃথিবীর অন্য সবায়ের কাছে কি মরে গেছি, অধঃপতিত, শেষকালে অধঃপতিত, অধঃপতিত, শূন্যে উঠে আমি একবার প্রত্যাখ্যান করেছিলুম, আমার এমন এক  দেহ আছে যা বিশ্বের দুর্ভোগ পোয়ায় আর বাস্তবতাকে অস্বীকার করে।

আমি এই উন্মাদ আন্দোলন যথেষ্ট পরিমাণে সহ্য করেছি যা আমাকে নামকরণ করতে বলে আর যার নামকরণ আমি করেছি আর বাতিল করেছি।


আমাকে এটা শেষ করতেই হবে। আমাকে এই জগতের সাথে, যা আমার বেঁচে থাকার প্রতিভাস,  শেষ বারের মতন   বিচ্ছিন্ন  করতে হবে , এই সত্তার আমি আর নামকরণ করতে  পারি না কারণ যদি সে ফিরে আসে তবে আমি মহাশূন্যে পড়ে যাব, এই সত্তা আমাকে চিরকাল বাতিল করেছে।

এটা ঘটে । আমি সত্যিই শূন্যের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম, কেননা সবকিছু - এই পৃথিবীর তৈরি করা - আমাকে হতাশ করার লক্ষ্য পূরণ করেছে ।

শুধুমাত্র যখন তুমি দেখবে  যে এই পৃথিবী তোমাকে সত্যিই ছেড়ে গেছে তখন  তুমি জানবে যে তুমি আর এই পৃথিবীতে নেই। 

মরে গেছো, অন্যরা বিচ্ছিন্ন হয় নি: তারা এখনও তাদের মৃতদেহের চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে।

আর আমি জানি কীভাবে মৃতরা তাদের শবের চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে ঠিক তেত্রিশ শতাব্দী ধরে আমার নকলটা অবিরাম এপাশ-ওপাশ করছে।


সুতরাং, আর তো বেঁচে নেই, যা আছে তা আমি  দেখতে পাই

আমি সত্যিই এই সত্তার সাথে নিজেকে সনাক্ত করেছি, এই সত্তা যা আর টিকে নেই।

এবং এই সত্তা আমার কাছে সবকিছু মেলে ধরেছে।

আমি এটা জানতুম, কিন্তু বলতে পারিনি, কিন্তু এখন আমি  তা বলতে শুরু করতে পারি, কারণ আমি বাস্তবতাকে পিছনে ফেলে এসেছি।

সত্যিকারের একজন বেপরোয়া মানুষ তোমার সাথে কথা বলছে, যে লোকটা কখনও এই পৃথিবীতে বাঁচার সুখের কথা জানত না যতক্ষণ না সে এটা ছেড়ে চলে গেছে আর এটা থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বাকিরা যদিও মারা গেছে কিন্তু তাদের আলাদা করা হয়নি। তারা এখনও তাদের শবের চারপাশে ঘোরাফেরা করে।

আমি মৃত নই, কিন্তু আমি বিচ্ছিন্ন।













কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন