রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩

মলয় রায়চৌধুরীর ছোটগল্প : অট্টাহাস্য অবিনির্মাণ

 মলয় রায়চৌধুরীর ছোটগল্প : অট্টহাস্য অবিনির্মাণ



—ওঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ…


—হাঃ হাঃ হাঃ….


—আর হাঃ হাঃ সি এমের মুখটা হাঃ হাঃ দেখেছিলেন ?


—ওফ ফোঃ ফোঃ পপ্পঃ তাক্কাঃ হাঃ হাঃ হাঃ যেই না হাঃ হাঃ…


—হিঃ হিঃ হিঃ…


–কিগ্গ হম হোঃ হোঃ ভির…


—হোঃ হোঃ রিঅ্যাঃল অ্যাহডমিহনিসট্রেটঃর হোঃ হোঃ হোঃ…


—অ্যাডমিনিস্টার্ড হিঃ হিঃ হিঃ গাহ হিঃ হিঃ হিম হিঃ হিঃ ভিরজো…


—ওফ ফোঃ ফোঃ ফোঃ…


—হাঃ হাঃ পপ্প…কপি…হিঃ হিঃ করল…


—হ্যাঁ হ্যাঃ হ্যাঃ পুপ্পুলি থেথ্থেকে… হ্যাঃ হ্যাঃ…


—আঃমিঃ তোঃ দেঃখ হাঃ হাঃ ছিলুম তোমাদের মুখ হাঃ হাঃ হাঃ…


—হাসবে না কাঁদবে হিঃ হিঃ বুঝে উঠতে পারছিল না কেউ…


—ওঃ হোঃ হোঃ হোঃ…


—হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ….


—হিক হিক হিঃ…


—পপ্প হাঃ হাঃ…


—তাকাটা হিঃ হিঃ হিঃ এঃকেঃবাঃরেঃ হেঃ হেঃ হেঃ…


—ধপ !


—তোমারই তো হোঃ হোঃ হোঃ ডিড্ডিপার হাঃ হাঃ হারমেন্ট !


—নাঃ হাঃ হাঃ হাঃ পুঃরতোঃ হাঃ হাঃ হাঃ দপতরেঃ হাঃ হাঃ হাঃ…


—ওফ হোঃ হোঃ হোঃ পপ্প….তাকা…হোঃ হোঃ টায়…


—টান হিঃ হিঃ হিঃ দিতেই…


—পপ্পু…লিল্লি…থেথ্থে হেঃ হেঃ হেঃ হেঃ…


—ফুলের ভারে হাঃ হাঃ হাঃ…


—ধপ !


—সি এম তো স্টান্ড !


—আমি তোঃ হোঃ হোঃ এসডিএম পোস্টিঙেও দেখিনি এমন ঘঘঘঘটনা…


—ওঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ…


—তোঃমাঃদেরই ডিঃপারট হাঃ হাঃ হাঃ মেন্ট !


—নাঃ পুপ্পুর হিঃ হিঃ হিঃ তো দঃপতঃর ।


—হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ…


—ওহ চোয়াল ব্যথা হয়ে গেল হাসতে-হাসতে…


—ধপ !


–এইঃ আঃ হাঃ হাঃ হাঃ পনিঃ ওই ধপটা হাঃ হাঃ এঃবার বন্ধ করুন ।


—হ্যাঃ হ্যাঃ হ্যাঃ হ্যাঃ খিঁচ-ব্যথা ধরে যাচ্ছে পেটে ।


—ওফ ফোঃ ফোঃ পপ্প..তাকাটা যেই…


—না, হাসা উচিত নয় কিন্তু ।


—হাসছি তোমাদের তখনকার মুখগুলো মনে পড়ছে বলে ।


এইসব উচ্চপদস্হ আধিকারিকরা ভোরবেলায় লেকের ধারে হাঁটতে এসে এত হাসাহাসি করছেন কেন তা ঠাহর করার চেষ্টা করছিল অর্ণব । আই এ এসদের তো সরকারি খরচে গোমড়া আর গম্ভীর থাকার প্রশিক্ষণ দেয়া হয় । একযোগে এমন দিলখোলা হাসি শোনাটা তো বেশ বিরল ব্যাপার । কিন্তু হাসাহাসির বিষয়টা কী ? ঘটনাটা কী?


সাদা হাফ প্যান্টে থলথলে মোদো গালের প্রায়-বৃদ্ধ আর খোঁড়া লোকটাকে আবছা ভাবে চেনে অর্ণব, অর্ণব দস্তিদার, কেননা বহুকাল আগে ওরই দপতরে মাস ছয়েকের জন্যে জুট কমিশনার হয়ে এসেছিলেন । পাটের দালাল আর পার্টির দুলালদের জন্যে টিকতে পারেননি । প্রোমোটি আই এ এস । তারাপদ রায় । রাজস্ব বিভাগে কেরানি হয়ে ঢুকেছিলেন । জুট কমিশনে ফিল্ড অফিসার থাকার সময়ে পাটচাষিদের প্যাঁদানির চোটে ঠ্যাং ভেঙে নয়ানজুলিতে যৌবনে একরাত পড়েছিলেন বলে গুজব ।


উচ্চপদস্হ আধিকারিকরা আছেন বেশ । আজ এ-বিভাগ , কাল ও-বিভাগ । যদ্দিন চেয়ারে, তদ্দিন পেয়ারে ।ইংরেজরা এনেছিল এই কচুরিপানা । এখন ছড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্রের অন্দরে-কন্দরে ।


কিন্তু হাসিটা কী নিয়ে ? পপ্প আর পপ্পু এটা কী ব্যাপার ? এনারা সবাই সেই ঘটনার অংশভাক, এটা অন্তত টের পাওয়া যাচ্ছে । এই লোকগুলো সেই ঠাকুমা-দিদিমার আমল থেকে গল্প দিয়ে গড়া । কথাবার্তার অতল কাদায় কোন মুখে যে কোন গল্প ঢুকে কী চেহারায় বেরোবে তার নিশ্চয়তা নেই । লাউডগার মতন কখন যে এনারা কোন গল্পের গিঁট পাকিয়ে এগিয়ে যান কে জানে ।


আচমকা ঝিরঝিরে বৃষ্টির দরুণ বটগাছের তলায় এসে দাঁড়িয়ে পড়েছেন হাফ-প্যান্ট টি-শার্ট প্রৌঢ়রা । অর্ণবও । অর্ণবের জগিঙের শেষ পাকটা কেবল বাকি ছিল । বটগাছটা বোধহয় ভি আর এস নিয়েছে । নিজেরই ঝরাপাতাদের উড়ন্ত ফিসফিসের মাঝে চুপচাপ একা দাঁড়িয়ে । গরম-শেষের বুড়ো ঘাসেরা যৌনতাবর্ধক বৃষ্টিফোঁটার অপেক্ষায় । শালিকশিশুকে কেঁচো কিংবা পিঁপড়ে খুঁটতে শেখাচ্ছেন ওর মাম্মি-ড্যাডি । বাংলা ফিল্মের থায়রয়েডকন্ঠী গায়িকার ঢঙে একটা কাক ওর প্রেমিকদের ডাকছে তারস্বরে, পাঁচিলের ওপর ভিজতে-ভিজতে । ওপারে ফুটপাতে গোটাকতক রুডিয়ার্ড কিপলিং টাইপের নেড়িকুকুর । চায়ের দোকানের বেঞ্চে নবযুগ আনতে বিফল সাত-আটজন হাড়প্যাংলা বুঢঢার খেঁকুরে জমায়েত । একজনের তোতলা জিভ সম্ভবত অনুপ্রাসে পালিশ-করা, হদিশ মিলছে এত দূর থেকেও । প্লাস্টিকের একটা ভাঙা খেলনা গড়াগড়ি খাচ্ছে রাস্তায় । শৈশব ফুরিয়ে গেছে খেলনাটার ।


বটপাতায় বৃষ্টির চপেটাঘাত আরম্ভ হল । আগে কেটে পড়লেই হত, ভেবে মন খারাপ লাগল অর্ণবের । আমলাদের হাসাহাসির হাটও ভেঙে এল প্রায় । যে-যার গাড়ির দিকে এগোচ্ছেন ধুপধাপ । ওই টাকমাথা আই এ এস বারবার ‘ধপ’ কথাটা বলছিলেন আর হেসে উঠছিল সবাই । কারোর ধপ করে বসে-পড়া নিয়ে হয়তো হাসাহাসি । আমলাটির চেহারা অনেকটা কাঁদানে গ্যাস কারখানার কর্মীর মতন আমুদে । যারা নিজেরা চোখের মধ্যে দাঁড়িয়ে চারপাশে তাকায় ।


কারোর-কারোর হাসি দেখলে কিন্তু ভয় করে । যেমন ওই চশমা-পরা ভুঁড়িদাস, যিনি ফোঃ ফোঃ করে হাসছিলেন । দাঁতের পাটি নিশ্চই নকল । নাড়িভুঁড়ি বেরোনো খাটের ছোবড়ার রঙে কলপ-দেয়া চুল । চোখদুটো সামনে না হয়ে যেন ঘোড়ার মতন কানের দিকে । মরচে-পড়া একান্নবর্তী চেহারা । ওনার বাড়ির আত্মায় বোধহয় রান্নাঘরখানা আছে ।


বৃষ্টিটা আবার ঝিরঝিরে আদল নেয়ায় নিজের স্কুটারের দিকে এগোল অর্ণব । স্কুটারে ডিকিতে প্লাসটিকের রেইনকোট আছে ।


স্লোগানে-স্লোগানে স্মৃতিবিলোপ ঘটেছে সামনের বাড়ির ফিকে হলুদ রাস্তাটার । আধাবাস্তব-আধাজোচ্চুরি মেশানো ছড়ার স্লোগান । শব্দদের রক্ষিতার মতন পোষে এইসব স্লোগান ।


ওর, অর্ণবের, অফিসের দেয়ালেও স্লোগানের সর জমেছে । জুট কমিশনারের অফিস নাকি উঠে যাচ্ছে । সরকার আর পাট কিনবে না । যাকেনার দালালরা সরাসরি কিনবে চাষিদের থেকে । সরকারের চটকলে লোকসানের বোঝা বওয়া দায় । বাদবাকি চটকলগুলোও আর টিকবে না । কত রমরমা ছিল এককালে পাট আর চটকলের । পাট তো ছিল বাঙালির সিল্ক । রাজা পরতেন পট্টবস্ত্র । রানি ছিলেন পট্টমহিষী । সিংহাসন ছিল রাজপট্ট । আর এখন ? গৌড়ের রাজপ্রাসাদের মতন পাট শব্দটাও ভেঙে চুরমার । মিথ্যের নাম গুলপট্টি, কেননা ঘায়ের ব্যান্ডেজের নাম পট্টি । গৌড়ের সেনাপতির চোটজখম বাঁধা হতো পাটের সিল্ক দিয়ে । এখন পট্টিমার মানে ধাপ্পাবাজ, পট্টিবাজ মানে মিথ্যুক ।


ইংরেজরা চটকল পত্তনের আগে খত্রিরা পাটের ব্যবসা করত ; টাকাকড়ি ধার দিত চাষিদের । টাকা ধার দেবার সুযোগে পাট ব্যবসায় সেঁদিয়ে গেল মারোয়াড়িরা । পাটের আগে ওরা আফিম চাষিদের টাকা ধার দিত । তখন কাগজের টাকা আসেনি । চটকল পত্তনের পর ওরা হয়ে গেল মজুরদের আড়কাঠি । বিহার, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্র আর তামিলনাডু থেকে মজুর ফুসলিয়ে এনে বসিয়ে দিলে নতুন-নতুন চটকলে । ইসলামি রাজত্বে ব্যবসাদাররা এসেছিল রাজস্হান, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ থেকে ।


বাঙালির জিম্মায় হাসাহাসি করা ছাড়া আর কিছু টিকে নেই ।


কিন্তু এক্ষুনি যে হাসাহাসি চলছিল তার উৎসটাই বা কী !


রাস্তা পার হবার সময়ে বিরাট হোর্ডিঙের দিকে নজর গেল অর্ণবের । রোজই আসে, কিন্তু খেবাল করেনি এতদিন। এটা নিয়ে নিশ্চই হয়নি হাসাহাসিটা । পপ্প, পপ্পু, কাক্কা, তাত্তা, ধপ, এগুলোকে তো মেলানো যাচ্ছে না । যারা হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি করছে, তাদের ধরিয়ে দেবার জন্যে বড় বড় হরফে তেলিফোন নম্বর দিয়েছে বিদ্যুৎ পর্ষদ।


হলুদ হোর্ডিঙের পাশের বিজলি বাতির থামে তার ফেলে দুটো লাইন নামানো হয়েছে । একটাতে শনিমন্দির, প্রকাশ্য । আরেকটা ঢুকেছে ফুটপাতিয়া ঝুপড়িতে, বোধহয় কোনো রাজনৈতিক দলের জমঘট । ইচ্ছে করলে হাসা যায় ব্যাপারটা নিয়ে । কিন্তু যা আখচার তা নিয়ে তো আর হাসাহাসি হয় না ।


স্কুটারের গা ঘেঁষে এক ঋষিপ্রতিম ষাঁড় দাঁড়িয়ে । বৃষ্টিটাও বেইমান, আবার ঝেঁপে এল । বর্ষাতি চাপাবার জন্যে দ্রুত স্কুটারের ডিকি খুলল অর্ণব । খবরের কাগজে মোড়া বর্ষাতিটা হাতে নিয়েই, হাসতে শুরু করল, অট্টহাস্য, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হাঃ হাঃ হাঃ ফোঃ ফোঃ ফোঃ হিঃ হিঃ হিঃ হ্যাঃ হ্যাঃ হ্যাঃ, ওফ, পরশুর বকেয়া হাসি হাসছিলেন আমলাদের দলটা । পরশু যে হাসির দমকটা সবাই মিলে গম্ভীর মুখে চেপে গিয়েছিলেন, হাসার সময়ে হাসতে পারেননি, আজকে ভোরবেলায় সবাই জড়ো হয়ে সেই হাসিটাই হাসছিলেন । অফুরন্ত । পরশু মহাকরণের অনুষ্ঠানে এনারা আমলাসুলভ গোমড়া মুখে দাঁড়িয়েছিলেন, ভ্যাবাচাকা খেয়েছিলেন, আর পেট গুলিয়ে যে-হাসি উঠে এসেছিল, তাকে চাপা দিয়েছিলেন, এতকালের প্রশাসনিক জগদ্দল দিয়ে । খবরটা প্রথম পৃষ্ঠায় শিরোনাম । লিখেছে, “মুখ্যমন্ত্রী দড়ি টানতেই পুলিসুদ্ধ খসে পড়ল জাতীয় পতাকা।”


বর্ষাতিটা সিটের ওপর রেখে, ভিজতে ভিজতে, বিস্তারিত সংবাদটা পড়তে শুরু করল অর্ণব ।


“স্টাফ রিপোর্টার : স্বাধীনতা দিবসে মহাকরণের সামনে রাজ্যসরকারের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের আয়োজনে কোনো ত্রুটি ছিল না । কিন্তু গোড়াতেই গলদ । মুখ্যমন্ত্রী দড়ি ধরে টানামাত্র পতাকাটি না-খুলে দণ্ডের উপর থেকে ধপ করে মাটিতে এসে পড়ে । সমবেত অতিথি-অভ্যাগতদের বিস্ফারিত চোখের সামনে এই অভাবিত কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী যারপরনাই বিব্রত ও ক্ষুব্ধ হন । তখনকার মতো অবিচলিতভাবে পতাকাহীন দণ্ডের সামনে দাঁড়িয়ে বাকি অনুষ্ঠানটুকু শেষ করলেও এর পরেই তিনি মহাকরণে নিজের ঘরে চলে যান । মুখ্যসচিবকে ডেকে তিনি কেন এই অঘটন ঘটল, তার তদন্ত করতে বলেন । ওদিকে অনুষ্ঠানে উপস্হিত বর্ষীয়ান স্বাধীনতা-সংগ্রামী নরেশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় ঘটনাটিকে জাতীয় পতাকার অবমাননা মনে করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন । এই ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্তের পর কলকাতার সশস্ত্র পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার আর কে জুহুরি পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদারকে জানিয়েছেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটি দুর্ঘটনা ছাড়া কিছু নয় । তুষারবাবু শুক্রবার মহাকরণে গিয়ে সে কথা মৌখিকভাবে পুলিশমন্তীকে জানিয়ে এসেছেন ।


বৃহস্পতিবার ওই পতাকা উত্তোলনের কথা ছিল সকাল সাড়ে দশটায় । ঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় মহাকরণের সামনে রাস্তার কোনায় দেখা দেওয়া মাত্র আটজন ঘোড়সওয়ার মুখ্যমন্ত্রীকে এসকর্ট করে নিয়ে আসে। বিনয়-বাদল-দীনেশের মূর্তির সামনে মঞ্চ সাজানো হয়েছিল । সেখানে গাড়ি থেকে নেমে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ওঠেন । পতাকাদণ্ডের সঙ্গে দড়ি দিয়ে পুঁটলির মতন করা বাঁধা পতাকাটি ওড়ানোর জন্য তিনি দড়ি টানতে থাকেন । সরসর করে পুঁটলিটি দণ্ডের শীর্ষে উঠে যায় । আর একটা তান দিলেই সেটি খুলে পুষ্পবৃষ্টি হওয়ার কথা জাতীয় সঙ্গীতের সুর । অভ্যস্ত হাতে মুখ্যমন্ত্রী দড়িতে টান দিতেই ফুলসহ পতাকাটি বাঁধা অবস্হাতেই দড়িদড়া নিয়ে নিচে পড়ে যায় । মুখ্যমন্ত্রীর চোখ ছিল পতাকার দিকেই । তিনি সময়মতো সরে না গেলে সেটি তাঁর গায়ে পড়ত। ওদিকে দড়ি টানলেই পতাকা খুলে যাবে ধরে নিয়ে পুলিশ-ব্যাণ্ডে জাতীয় সঙ্গীত বাজতে শুরু করে দিয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মনের ভাব গোপন রেখে পতাকাহীন দণ্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন । মুখ্যসচিব অনীশ মজুমদার তাঁর একপাশে স্হানুবৎ এবং অন্যপাশে আধিকারিকরা দাঁড়িয়ে থাকেন থমথমে মুখমণ্ডল নিয়ে । জাতীয় সঙ্গীত শেষ হয় । বাকি অনুষ্ঠানও নমো নমো করে সারা হয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মী জানিয়েছেন পতাকাটি পাটের দড়ি দিয়ে কাঠের কপিকলে বাঁধা ছিল এবং তাতেই বিপত্তি ।”


—লোকটা পাগল না কী গো ? এই অঝোর বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাগজ পড়ছে । মন্তব্য শুনে হুঁশ হল অর্ণবের। ছাতা মাথায় দম্পতি । মর্নিং ওয়াক সেরে ফিরছেন ।


–হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ ওঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ……..


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন